পায়খানার সাথে রক্ত পড়ার কারণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

অনেকে পায়খানার সাথে রক্ত পড়ার কারণ সম্পর্কে জানেনা। এজন্য বিভিন্ন ধরনের কবিরাজি ও হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়ে থাকে যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। চলুন, পায়খানার সাথে কেন রক্ত পড়ে এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
যাদের পায়খানার সাথে রক্ত আসে তারা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকে। এতে আরও বেশি ক্ষতি হয়। তাই পায়খানার সাথে রক্ত পড়ার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ খাবেন। তাই পায়খানার সাথে রক্ত পড়া সম্পর্কে জানার জন্য পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃপায়খানার সাথে রক্ত পড়ে কেন ও এর চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

পায়খানার সাথে রক্ত পড়ার কারণ

অনেকের পায়খানার সাথে রক্ত পড়ে এর পিছনে নানা কারণ থাকতে পারে। তাই পায়খানার সাথে রক্ত পড়ার কারণ গুলো নিম্নে বিস্তারিত সহকারে আলোচনা করা হলো।

সাধারণত অনেকেরই পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত পড়ে কোন একটা সময়ে এ ধরনের সমস্যা হয় বা হতেও পারে। তবে কি কারনে হচ্ছে এই জিনিসটা আগে অনুসন্ধান করতে হবে। তাহলেই চিকিৎসা করতে সুবিধা হবে এবং এ রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করা যাবে। কেননা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া কারণ হিসেবে বিভিন্ন ধরনের কারণ হতে পারে। এজন্য রক্ত পড়ার কারণগুলোকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

প্রথমত,পায়খানার সাথে রক্ত যাচ্ছে এবং প্রচন্ড ব্যথা হচ্ছে এটাকে বলা হয় এনাল ফিশার। পায়খানার রাস্তায় সাধারণত ফেটে যায় বা ছিড়ে যেতে পারে। কোথাও ফেটে গেলে বা কেটে গেলে সাধারণত রক্ত বের হয় এটাই স্বাভাবিক। 

অনুরূপভাবে পায়খানার রাস্তার কেটে গেলে বা ফেটে গেলে রক্ত বের হবে এবং সেখানে প্রচন্ড ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করবে। মলদ্বারের মুখ সাধারণত ফেটে যায় এবং ওই ফাটা জায়গা দিয়ে রক্ত বের হয়। কারো সামান্য রক্ত বের হয় আবার কারো পায়খানার সাথে সামান্য একটু অনেক সময় লেগে থাকে। কারো কারো রক্ত বেশিও বের হয় সাথে ব্যথা থাকে এবং জ্বালাপোড়াও হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, অনেক সময় কারো ফিস্টুলা সমস্যা থাকে এর কারণে পায়খানার রাস্তার দিয়ে পুজ রক্ত একসাথে বের হতে পারে। ব্যথা করে খুবই কষ্ট হয় আর এই পুজ এবং রক্ত মিক্সড হয়ে পায়খানার সময় সাধারণত বের হয়।

অধিকাংশ সময় দুইটা কারণে ব্যথা হতে পারে এবং রক্ত আসতে পারে। পাইলসের ক্ষেত্রেও রক্ত যায় কিন্তু ব্যথা হয় না তারপরও পাইলস রোগটা অনেক কঠিন এবং জটিল। অনেক সময় ব্যথাও হতে পারে একই সাথে রক্ত বের হয়।

ব্যথা মুক্ত রক্ত আসা যেখানে পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হবে কিন্তু ব্যথা হবে না এটা ধরে নিতে হবে তার পাইলস হয়েছে। পাইলস সাধারণত রক্ত নালীগুলো ফুলে যায় পাইলসের কারণে এবং নিচের দিকে ঝুলে যায়।

যদি পায়খানা করতে বসা হয় সে ক্ষেত্রে পায়খানা করতে বসলে রক্ত নালী এরপর চাপ লেগে অনেক সময় রক্ত নালী ফেটে যায় এবং এর সাথে রক্ত বের হয়। যার কারণে অনেক সময় ব্যথা হয়। তবে জটিল আকার ধারণ করলেই এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়।

পায়খানার সাথে রক্ত পড়া বন্ধের ঔষধ

যাদের পায়খানার সাথে রক্ত আসে সে ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করার পর পায়খানার সাথে রক্ত পড়া বন্ধের ঔষধ খাওয়া যেতে পারে এবং প্রাথমিক হিসেবে চিকিৎসা হিসাবে যে ঔষধ গুলো ব্যবহার করতে পারেন। তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো,

প্যারাসিটামল খেতে পারেনঃ যদি দেখেন আপনার এনাল ফিসার হয়েছে সেই ক্ষেত্রে লক্ষণ হলো পায়খানার রাস্তা ছিড়ে যাবে এবং প্রচন্ড জ্বালাপোড়া করবে, পায়খানা শেষে রক্ত বের হতে পারে। প্রচন্ড জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা করে তারা এই ব্যথা প্রাথমিক অবস্থায় মুক্ত করার জন্য প্যারাসিটামল খেতে পারেন।

সাধারণত প্যারাসিটামল ৫০০ এমজি দুটি ট্যাবলেট একসাথে খেলে ব্যথা অনেকটা কমে যাবে। এভাবে আপনি দিনে ৬ ঘন্টা পর পর সর্বোচ্চ ৮টি ট্যাবলেট খেতে পারবেন। তবে বেশি না খাওয়াই ভালো, যারা সুস্থ এবং অন্য কোন রোগ ব্যাধি নেই প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৫০ কেজির বেশি ওজন যাদের রয়েছে।

তারা এই ওষুধগুলো এভাবে খেতে পারেন। যাদের শারীরিক অবস্থা ভালো নয় এবং ডায়াবেটিস হাই প্রেসার বা হার্টের সমস্যা ইত্যাদি বড় ধরনের রোগ থাকলে। অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারা প্যারাসিটামলের ডোজ খেতে পারবেন।

এছাড়াও ব্যথার জন্য আপনি আইবুপ্রফেন এটাও খেতে পারেন তবে রক্তক্ষরণ হলে এটা না খাওয়াই ভালো। কারণ রক্তক্ষরণ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ট্রামাডল জাতীয় ব্যাথা নাশক ওষুধ না খাওয়াই ভালো। এই ওষুধ খেলে সাধারণত সাইড ইফেক্ট হিসেবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে আর যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য এর সমস্যা আছে।

তারা সাধারণত ব্যাথা নাশক ওষুধ খাবেন না। তবে ওষুধ খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে জানতে হবে বা রোগ নির্ণয় করতে হবে, তারপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

মলদ্বারের মুখে পেট্রোলিয়াম জেলি বা পিচ্ছিল পদার্থ দিতে পারেন অথবা এক ধরনের এনাল ফিসারের সাপোজিটরি পাওয়া যায় সেটা আপনি দিতে পারেন। তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শে সেটা ব্যবহার করতে হবে। মলদ্বারের মুখে এই ধরনের পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ দিলে সাধারণত সে জায়গাগুলোতে ব্যথা একটু কম লাগবে।

পায়খানা করার সময় সাধারণত জোরে চাপ দিবেন না এতে যে জায়গাটাতে ছিড়ে গেছে সেখানে আরো আরো বেশি ছিড়ে যেতে পারে। তাই আস্ত করে চাপ দিবেন এবং একজন চিকিৎসকের পরামর্শ ক্রমে

পায়খানার সাথে রক্ত পড়া বন্ধের উপায়

পায়খানার সাথে রক্ত পড়লে ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক চিকিৎসা গুলো নেওয়া ভালো হবে। তাই পায়খানার সাথে রক্ত পড়ার কারণ ও বন্ধের উপায় সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

অনেকের পায়খানা করতে গেলে পায়খানা শক্ত হওয়ার কারণে অনেক জোরে চাপ দেয় এতে করে পায়খানার মলদ্বারের মুখের চারপাশে যে চামড়া থাকে সেগুলো ফেটে যায়। যার কারণে রক্ত বের হতে পারে একে সাধারণত এনাল ফিসার বলা হয়। রক্তের রং উজ্জ্বল লাল হয়ে থাকে মলদ্বারের মুখের চারপাশে ছিড়ে যাওয়ার কারণে প্রচন্ড ব্যথা করে এবং তাজা রক্ত বের হয়।
ছবি
পরিমাণ মতো পানি পান করাঃ আমাদের দেহে পরিমাণ মতো পানি না খেলে মলত্যাগের সমস্যা হয়। এজন্য পরিমাণ মতো পানি খেতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে দুই লিটার পানি পান করতে হবে। তাহলে শরীর ভালো থাকবে এবং শরীর থেকে পানির যে বের হয়ে যায় সেটা পূরণ হয়ে যাবে।

আর যারা পানি পান করে না তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয় এবং পরবর্তীতে পায়খানার সময় জোরে চাপ দেওয়ার কারণে পায়খানার সাথে রক্ত আসে।

ধুমপান ও মদ্যপান করা যাবে নাঃ ধূমপান ও মদ্যপান সম্পর্কে আমরা জানি যে এটা খেলে ক্যান্সার হয় এবং ক্যান্সারের কারণ হতে পারে পায়খানার সাথে রক্ত বের হওয়া। ধূমপানের কারণে অনেকের পায়ু পথে ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়া পাতলা পায়খানার সাথেও রক্ত আসতে পারে এবং পায়খানার সাথে তাজা রক্ত যেতে পারে। এটা অনেকেরই দেখা গেছে এজন্য ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। তাহলে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে।

ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়াঃ অনেক মানুষের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে এবং হজমের সমস্যা আছে। তাদের জন্য মলত্যাগ করতে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়। আর সেই ক্ষেত্রে যাদের পায়খানার সাথে রক্ত বের হয়। তার পায়খানা অনেক শক্ত এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থাকার কারণেই সে জোরে চাপ দিলে পায়খানার রাস্তায় ছিড়ে যায় এর জন্য রক্ত বের হতে থাকে।
তাই কষ্ট কাঠিন্য এবং পরিপাকতন্ত্রের সমস্যার কারণে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। এজন্য বেশি বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে। তাহলে মুক্তি পাবেন এবং পায়খানার সাথে রক্ত বের হবে না। তাছাড়া অনেকের রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে মল ত্যাগের সমস্যা হয়। তাদের বেশি বেশি ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হয়।

যেমন ডাল বিশেষ করে মসুরের ডাল আপনি যদি হালকা পানি দিয়ে ডাল ভুনা করে খান। তাহলে দেখবেন পায়খানা নরম হবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন। এভাবে একটানা সাত দিন খেয়ে দেখতে পারেন সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও বেশি বেশি জাতীয় খাবার গুলো বেশি বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে পারেন। কারণ একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দিনে প্রায় ৩০ গ্রাম ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া দরকার।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং ব্যায়াম করতে হবেঃ যাদের অতিরিক্ত মানসিক চাপ থাকে তাদের পায়খানার সাথে অনেক সময় রক্ত আসে। তাই মানসিক চিন্তায় যারা ভুগছেন তারা তাদের শরীরের সাধারণত হরমোন নিঃসরণ করে এবং পেট সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য মানসিক চাপ কমাতে হবে এবং হাসিখুশি সবসময় থাকার চেষ্টা করবেন।

যদি সম্ভব হয় শারীরিক ব্যায়াম করবেন বিশেষ করে প্রতিদিন ৩০ মিনিট থেকে এক ঘন্টার মত ব্যায়াম করলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন। পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হবে না এবং এ ধরনের সমস্যা হবে না।

সর্বোপরি আপনার রোগ নির্ণয় করার জন্য একজন কলেক্টরাল সার্জন চিকিৎসক এর নিকট যেতে হবে এবং তিনি আপনাকে পায়খানার রাস্তা দেখে বা ক্লোনাসকপি করে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে আপনার রোগ নির্ণয় করবে। পায়খানার রাস্তায় খাদ্যনালীতে কোন সমস্যা রয়েছে কিনা যদি থাকে তাহলে সে অনুযায়ীদের চিকিৎসা দেবেন।

তাহলে আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন পায়খানার রাস্তায় রক্ত যার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। অনেকের খাদ্যনালীতে পলিপ হওয়ার কারণে অথবা খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হওয়ার কারণেও অনেক সময় এই পায়খানার রাস্তায় বা পায়খানার সাথে রক্ত আসে। এজন্য অবশ্যই মাথায় চিন্তা রাখবেন আপনার পায়খানা সাথে রক্ত আসার কারণে ভয় পেয়ে অনেক সময় পায়খানা করবেন না।

এতে আরো বেশি অসুবিধা হবে। তাই নিয়মিত পায়খানার চাপ দিলে পায়খানা করবেন। অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিলে সেরে উঠবেন। কেননা রোগ যখন জটিল হয়ে যায় তখন চিকিৎসকের কাছে গেলে তখন আর করার কিছু থাকে না।

আর প্রাথমিক অবস্থায় যদি কারোর পায়খানার সাথে রক্ত আসে রোগটা নির্ণয় করতে পারে তাহলে যদি ক্যান্সার হয়ে থাকে পায়খানার রাস্তায় ভিতরে তাহলে তারপরও চিকিৎসা নিলে সে সুস্থ হতে পারবে। আশা করি এগুলো মেনে চললে উপকৃত হবেন।

গর্ভাবস্থায় পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া

গর্ভাবস্থায় অনেক নারীর পায়খানার সাথে রক্ত আসে, তাই গর্ভাবস্থায় পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া সম্পর্কে নিম্নের বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

এই সময় জরায়ুর চারপাশে কোলন ওর একটা রেকটাম নামের দুইটা অঙ্গ থাকে। তাই সন্তান ভিতরেই বড় হতে থাকে এবং এর পাশে কোন একটা অঙ্গগুলো উপর অনেক চাপ পড়ে। যার কারণে গর্ভাবস্থায় মহিলাদের এই ধরনের সমস্যা হয়। এছাড়াও এই গর্ব অবস্থায় মহিলাদের হরমোনের সমস্যা দেখা দেয় এ কারণে পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় এই সমস্যাগুলো অনেকেরই হয়ে থাকে এটা হওয়ার কারণ হলো গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া এবং অনেকের পাইলসের সমস্যা থাকতে পারে। তবে কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে এনাল ফিসার হয় এবং পায়খানার রাস্তায় ছিড়ে যায় এজন্য রক্ত যেতে পারে। এজন্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শ ক্রমে ওষুধ খাবেন এবং খাবার দাবার বেশি ফলমূল খাবেন। ফাইবার যুক্ত খাবার খাবেন আর বেশি বেশি পানি খাবেন।

একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নেবেন এবং পাশাপাশি চিকিৎসকরা খাদ্য তালিকা তৈরি করে দেন। তার মাঝে ফাইবার যুক্ত খাবার অর্থাৎ আশযুক্ত খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে বলে এতে করে পায়খানা নরম হবে। এছাড়া আপনি চিকিৎসা করার ঔষধ খেতে পারেন। যদি আপনার পাইলস থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে অথবা এনাল ফিশার সমস্যা হয়।

এই সময় অবহেলা করবেন না কারণ আরো বেশি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে এবং রক্ত বেশি ক্ষরণ হতে পারে। এজন্য অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসা করার পরামর্শ নিতে হবে। এজন্য গর্ভবতীর এই রক্তক্ষরণের কারণে তার বাচ্চারও সমস্যা হতে পারে।

শিশুর পায়খানার সাথে রক্ত

অনেক সময় শিশুর পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে এজন্য আগে রোগ নির্ণয় করতে হবে। আর যে শিশুটার পায়খানার সাথে রক্ত পড়ার কারণ নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। কারণ চিকিৎসা নিলে শিশু সুস্থ হয়ে যাবে।

শিশুদের পায়খানার রং লাল হয় যেমন জেলি টমেটো স্ট্রবেরি লাল শাক ইত্যাদি অনেক সময় লাল জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে শিশুদের পায়খানা হতে পারে। এজন্য ভয় পাওয়ার কিছু নেই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নিলে সুস্থ হয়ে যাবে।
ছবি
তবে শিশুদের পায়খানার সাথে রক্ত আসলে এনাল ফিসার পাইলস রেক্টর পলিপ ইত্যাদি ধরনের সমস্যা হতে পারে।

পলিপ সমস্যাঃ এটা হল সাধারণত ছোট গোটার মতো দেখতে আঙ্গুলের মত। অনেক সময় বাচ্চাদের পায়খানার সাথে রক্ত বের হয় এটা পলিপ। ক্লোনোস্কোপ নামক যন্ত্রের সাহায্যে এই সমস্যা দেখা যায়। এজন্য অবশ্যই শিশুটাকে হাসপাতালে নিতে হবে এবং অপারেশন করতে হবে। এটা খুবই কঠিন বিষয় নয় অপারেশনের ২ ঘণ্টার মধ্যে সে বাড়িতে ফিরে আসতে পারবে এবং খাওয়া-দাওয়া করতে পারবে। 
কিন্তু কোন সমস্যা হবে না তবে এটা কোলোনোস্কোপি পরীক্ষার মাধ্যমেই নিশ্চিত হতে হবে। কোলোনোস্কোপের মাধ্যমেই জানা যাবে যে পলিপ হয়েছে কিনা। পলিপ সাধারণত কোলন বা বৃহদান্ত হয় এটার অপারেশন না করলে পরবর্তীতে কোলন ক্যান্সার হতে পারে। এজন্য শিশুদের এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের নিকট নিতে হবে।

যে সকল শিশুর এনাল ফিশারের সমস্যা রয়েছে সে সকল শিশুর সাধারনত কোষ্ঠকাঠিটা দেখা যায় এবং মল শক্ত হয়। এজন্য তারা জোরে চাপ দেয় এর কারণে মলত্যাগ করতে পায়খানার রাস্তায় একটু ছিড়ে যায়। এর কারণে রক্ত বের হয় যাকে এনাল ফিসার বলা হয়।

শিশুদের শক্ত পায়খানা হওয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া। তাই শিশুদেরকে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন তাদের ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়াবেন এবং শিশুদের শাকসবজি বেশি খাওয়াবেন। ম্যাগ্নেসিয়া জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সেরে গেলে আবার বন্ধ করতে হবে।

শিশুর পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে তার মধ্যে অন্যতম হলো এনাল ফিসার ও পাইলসের সমস্যা থাকতে পারে। এজন্য খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন করতে হবে এবং একজন চিকিৎসকের পরামর্শ চিকিৎসা নিতে হবে।

আমাদের শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায় যে যাদের পায়খানার সাথে রক্ত বের হয় এদের এর জন্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তাই পায়খানার সাথে রক্ত পড়ার কারণ গুলো নির্ণয় করে তারপর চিকিৎসা করতে হবে। আজকের পোস্ট যদি ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url