কারবালার যুদ্ধের তাৎপর্য কি ছিল জেনে নিন ফলাফল সহ বিস্তারিত
কারবালার যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ, তাই কারবালার যুদ্ধের তাৎপর্য কি ছিল? এ সম্পর্কে আমাদের জানা খুবই প্রয়োজন। কেননা এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। চলুন, কারবালার যুদ্ধ তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
ইসলামের ইতিহাসে কারবালার যুদ্ধ অত্যন্ত তাৎপর্য রয়েছে। কেননা এই যুদ্ধে হযরত হোসেন রাঃ ও তার পরিবারসহ শাহাদাত বরণ করেন। তাই কারবালার যুদ্ধের তাৎপর্য কি ছিল? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃকারবালার যুদ্ধের তাৎপর্য কি ছিল জেনে নিন ফলাফল সহ বিস্তারিত
কারবালার যুদ্ধের তাৎপর্য কি ছিল
অনেকে জানতে চান যে, কারবালার যুদ্ধের তাৎপর্য কি ছিল? ইসলামের ইতিহাসে কারবালার যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। যা আমাদের জানা প্রয়োজন, চলুন এই যুদ্ধের তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
কারবালার যুদ্ধ মুসলমানদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাছাড়া এই মহরম মাসে কারবালার প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসেন রাঃ ও তার দলবল সহ শহীদ হন। যার কারণে এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাছাড়া মহরম মাস আরবি মাসের প্রথম মাস। সূরা তাওবার ৩৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে এই মাসে যুদ্ধ হারাম করা হয়েছে। তাই এই মহরম মাস মুসলমানদের নিকট গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল সাঃ নিজেও এ মাস গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। যার কারণেই মানুষকে তিনি শান্তির ধর্ম ইসলামের দিকে আহবান করেছিলেন। কিন্তু এই মাসেই হযরত হোসেন রাঃ কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন যা কারবালার যুদ্ধ নামে পরিচিত।
এই মাসটি রাসূলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই মাসেই সাধারণত নবী-রাসূলরা ঈমানী পরীক্ষা দিতেন। এছাড়াও মুসলমানদের বা মুসলিম উম্মাহর নিকট সম্মানিত মাস। এই মাসের বিভিন্ন ধরনের ঘটনা সাক্ষী হয়ে আছে যার কারণে এটা পবিত্র মাস বলা হয়ে থাকে। এই মাসটিতে প্রাচীনকাল থেকেই আশুরার পালন করা হয়। তাছাড়াও ১০ই মহরমের কারবালার প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসেন রাঃ তার দলবল সহ শহীদ হওয়ার জন্য এই দিনটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। যার কারণেই মুসলমানরা প্রত্যেকটি বছরে ধর্মীয়ভাবেও এই দিনটি পালন করে থাকে এবং মুসলমানদের কাছে এটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সাধারণত আশুরার সম্পর্কে ঐতিহাসিক ঘটনা হলো হযরত মুসা আঃ এর উপর ফেরাউনের অত্যাচার করত সেই অত্যাচার থেকে সে মুক্তি পেয়েছিলেন। এই দিনেই মহান আল্লাহতালা এই ফেরাউনকে এই লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিল। যার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে হযরত মুয়াবিয়ার রাঃ ইন্তেকালের পর তার পুত্র ইয়াজীদ সিংহাসনে বসেছিলেন কিন্তু সুযোগ্য পাত্র ছিলনা। যে নিজেই ইসলামের সম্পর্কে তেমন একটি ধারণা নেই এবং ইসলামের শরীয়তের বিষয়গুলো তিনি মানতেন না। মদ্যপান করতো এছাড়াও একসাথে দুই সহোদরকেও বিবাহ করতে বৈধতা দিয়েছিল এগুলো আসলে ইসলামের বিরুদ্ধ কাজ।
তিনি স্বৈরাচারী অত্যাচারী ছিলেন যার কারণে হযরত হুসাইন রাঃ ইয়াজিদকে শাসক হিসেবে মানতে পারেননি এবং অস্বীকৃতি জানায়। যার কারণে কুফা বাসীর আমন্ত্রণে ও ইসলামের সংস্কারের জন্য তিনি মদিনা শরীফ থেকে মক্কায় চলে যান। তবে ইমাম হোসাইন রাঃ মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে যখন যাত্রা করেন শেষ পর্যন্ত তিনি কারবালার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। এই সময় ওমর ইবনে সাদ আবি আক্কাস এর নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য নিয়ে কারবালায় নিকট প্রবেশ করে, কয়েক ঘন্টা পর ইসলামের জঘন্যতম সীমার যিনি আরো সৈন্য নিয়ে যোগ করে।
অবশেষে যুদ্ধের ঘোষণা দেন এবং যুদ্ধ সম্মুখীন হতে হয় কারবালার দুইপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে থাকে। সর্বশেষ ইমাম হোসেন রাঃ এবং তার ৭২ জন সংগী যারা ছিল তারা শাহাদাত বরণ করেছিল। সীমার ইমাম হোসাইনের কন্ঠ দেশে ছুরি চালিয়ে হত্যা করেছিল যা খুবই বেদনাদায়ক এবং এই দিনটি ছিল মহরম মাসের ১০ তারিখ। এই কারবালার যুদ্ধ তাৎপর্যপূর্ণ হলো হযরত হোসাইন রাঃ সপরিবারে আত্মবিসর্জন দিয়েছিল নিজেকে ইসলামের জন্য বিলিয়ে দেন এবং শহীদ হয়েছিলেন। এই আত্মত্যাগ গুরুত্বপূর্ণ যা ইসলামের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
তিনি সত্য ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্যই সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে ছিলেন এবং মুসলমানদের উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে অনুকরণ হিসেবে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। কারবালার ঘটনা থেকে মানুষের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো হযরত ইমাম হোসাইন রাঃ নিজের জীবন উৎস্বর্গ করলেন তবু তিনি ক্ষমতার লাভ করেনি বা ক্ষমতার প্রতি আশাবাদী করেনি। খেলাফতকে রাজতন্ত্র স্বৈরতন্ত্রে পরিণত করেছিল ইয়াজিদ যা খুবই দুঃখজনক এবং ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন হযরত হোসাইন রাঃ। ন্যায় ও প্রতিবাদের পক্ষে তিনি প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছিলেন।

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url