নরওয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি ও বেতন কত জানুন

অনেকেই নরওয়ে যেতে চায় কিন্তু কি কাজের চাহিদা আছে তা জানেনা। তাই নরওয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি? এই সম্পর্কে জানলে এবং অভিজ্ঞতা থাকলে আপনার সুবিধা হবে। চলুন, কোন কাজ গুলোর বেশি চাহিদা আছে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অনেকে কাজের অভিজ্ঞতা ছাড়া বিভিন্ন দেশে গিয়ে সমস্যায় পড়ে যায়, তাই নরওয়ে কোন কাজগুলো বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং সে কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে ভাল বেতন পাবেন। তাই নরওয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃনরওয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি ও বেতন কত জানুন

নরওয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি

আপনি যদি নরওয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে কোন কাজের চাহিদা আছে। তাই নরওয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি? এ সম্পর্কে জেনে যদি আপনি সেই কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে যেতে পারেন। তাহলে অনেক টাকা বেতন পাবেন। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

এই দেশের সাধারণত যে সকল কাজের দাম বেশি তা হলো কৃষি ফার্মিং, কনস্ট্রাকশন, ক্লিনিং ম্যান, ইলেকট্রনিক্স, হসপিটালিটি এছাড়াও আরো অনেক কাজ রয়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় এ দেশে সাধারণত বেশি বেতন দিয়ে থাকে। তাই এ দেশে বেশি বেতন দেয়া হয় সে তুলনায় আপনাকে যাওয়ার জন্য খরচও কম লাগে।

কেননা এই দেশটির অফিসিয়াল ভাবে বেতন নির্ধারণ করে দেয় না। কেননা এতে আপনার বেতন নির্ধারণ করবে অভিজ্ঞতার উপরে। যদি আপনার কাজের ভালো অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে বেশি বেতন পাবেন।

তাছাড়া যারা রেস্টুরেন্টে ক্লিনার হিসেবে অথবা কনস্ট্রাকশনের লেবার কাজ করে তারা একটু অন্যান্য পেশার চাইতে কম টাকা পাবেন। এদেশের সাধারণত একটা সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো তৈরি করা হয়ে থাকে।

তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বয়স দক্ষতা যোগ্যতা এগুলো নির্ভর করবে। আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের উপরে হয়, সেক্ষেত্রে ঘণ্টা হিসেবে বেতন পাবেন অর্থাৎ কত ঘন্টা কাজ করলেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার বেতন। চলুন, কোন কাজগুলো বেশি চাহিদা রয়েছে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

এগ্রিকালচার ও ফার্মিংঃ আপনার যদি কৃষি কাজের উপর এবং ফার্মিং এর উপর ভালো অভিজ্ঞতা থাকে সেক্ষেত্রে নরওয়েতে আপনি সিজনাল ভিসায় যেতে পারেন। কেননা তারা প্রতিবছর এই কাজের উপর নিয়োগ দিয়ে থাকে কিন্তু বাংলাদেশের লোকজন সাধারণত এই পেশায় যেতে পারেনা, দেখা যায় তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয় না।
কারণ সিজনাল ভিসায় সাধারণত বাহির থেকে কাউকে যদি নিয়ে আসে সে ক্ষেত্রে ছয় মাসের চুক্তিভিত্তিক ভিসা দিয়ে থাকে। কেননা সিজনাল ভিসার শর্ত হলো আপনি ছয় মাস কাজ করে দেশে ফিরে যেতে হবে। এতে ভিসার কোন মেয়াদ বাড়ানোর উপায় নাই, তাই দেখা যায় বাংলাদেশের লোকজনের ছয় মাসের জন্য কাজ করার আগ্রহ থাকে না এবং তারা বিদেশে এই ভিসা সাধারণত যায় না।

যদি আপনি এই সকল শর্ত পূরণ করতে পারেন এবং ছয় মাসের মধ্যে চলে যান আবার যদি দ্বিতীয়বারে জন্য এই ভিসায় আসার অনুমতি পান, সেক্ষেত্রে আপনার জন্য ভালো হবে কিন্তু বাংলাদেশের অনেক মানুষ এই ভিসায় যাওয়ার পরে তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশে যায় না।

যার কারণে ওই দেশের সরকার বাংলাদেশীদের জন্য আজীবনের জন্য এই ভিসা তাদের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। এখন আপনি যদি ইউরোপের অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট হয়ে থাকেন সেই ক্ষেত্রে এই কাজটি করা যাবে। ছয় মাসের মধ্যে যদি না যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনি স্থায়ীভাবে ভিসা করতে পারবেন। তবে শর্ত হলো অন্য দেশের মাধ্যমে আপনাকে যেতে হবে।

এগ্রিকালচার ভিসায় যদি আপনি কাজ করতে পারেন সে ক্ষেত্রে প্রথম দিকে ঘন্টায় ১২৪.১৯ ক্রোনার বেতন পাবেন। আর যদি আঠারো বছরের নিচে আপনার বয়স হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে একটু কম বেতন পাবেন। যদি অদক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আরও একটু কম পাবেন।

কনস্ট্রাকশন কাজঃ এদেশে কনস্ট্রাকশনের কাজ প্রচুর পরিমাণে রয়েছে কেননা তাদের বিভিন্ন ধরনের ট্যানেল নির্মাণ করার জন্য শ্রমিক প্রয়োজন হয়। সেজন্য তারা বিভিন্ন দেশ থেকে লোক নিয়ে থাকে এছাড়াও ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোও সাধারণত এই শ্রমিক গুলো নিয়ে থাকে যেমন পোল্যান্ড রাশিয়ান, ইউক্রেন ইত্যাদি।

তবে যদি আপনি কাজ করার জন্য যেতে চান সে ক্ষেত্রে যেতে পারবেন, তবে এসব কাজে বেতন অনেক বেশি কিন্তু অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে। একজন দক্ষ কর্মীর বেতন ঘন্টায় ১৯৭.৯০ ক্রোনার বেতন পাবেন। যদি লেবার হিসাবে কাজ করে থাকেন তাহলে এর থেকে একটু কম পাবেন।

সিফুড এর কাজঃ এদেশে সাধারণত সিফুড পেশার অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে, এজন্য এ ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করলে আপনার ভাষা জানতে হবে এবং এই কাজের মূলত অভিজ্ঞতা লাগবে। এ ধরনের কাজ সাধারণত প্রসেসিংয়ের কাজ করা হয়ে থাকে। আপনি যদি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চান, সেই ক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায় ১৭৩.৫ ক্রোনার বেতন পাবেন।

ইলেকট্রিশিয়ান প্লাম্বিং ও পেইন্টার হিসাবে কাজঃ আপনি যদি এই কাজগুলোর প্রতি অভিজ্ঞতা থাকে সে ক্ষেত্রে যত কাজ করবেন তত আপনি ইনকাম করতে পারবেন। তবে যদি কোন ব্যক্তির অধীনে কাজ করেন সে ক্ষেত্রে ২১১.৭ ক্রোনার বেতন পাবেন। যদি আপনি সহযোগী হিসেবে কাজ করে থাকেন সেক্ষেত্রে ১৮৪.৩৬ ক্রোনার ঘন্টা হিসেবে বেতন পাবেন।

আর যদি প্রফেশনাল কোন ডিগ্রী না থাকে তাহলে আপনার এই কাজের প্রতি কোর্স করা যেতে পারে। এই দেশটিতে ভোকেশনাল স্কুল আছে সেখানে আপনি ভাষা শিখে নেবেন এবং স্বল্পমেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স করে নিতে হবে, তাহলে আপনি অনেক টাকা স্যালারি পাবেন।

রেস্টুরেন্ট হোটেল ট্যুরিজমঃ আপনি যদি এই বিষয়ে কাজ করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার বয়স হতে হবে ২০ বছরের উপরে এবং এই কাজের জন্য মিনিমাম ৫-৬ মাসের অভিজ্ঞতা লাগবে, তাহলে আপনি ১৬৭ ক্রোনার বেতন পাবেন ঘন্টা প্রতি।

আর যদি ২০ বছর বয়সের নিচে হয় তাহলে ১৩৪ ক্রোনার বেতন পাবেন। এই সেক্টরে ঘন্টা প্রতি যদিও বেতন পায় তারপরও কিছু বাড়তি ইনকাম করতে পারবেন। সেখানে কিছু টিপস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং মাস শেষে হিসাব করলে আরো অনেক টাকায় বেতন হবে।

গবেষক ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তারঃ যদি আপনি এই কাজ করতে চান সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বেতন পাবেন। গবেষক এবং চিকিৎসকদের সবচাইতে বেশি বেতন দিয়ে থাকে। এর পরে ইঞ্জিনিয়াররা বেতন পান এদের ঘণ্টা প্রতি সাধারণত বেতন দেয় না, কাজের অভিজ্ঞতার উপর বেতন। তবে কমপক্ষে একজন গবেষক ৪ লক্ষ ৫০ হাজার ক্রোনার বেতন পেয়ে থাকে। একজন চিকিৎসক ৪ লক্ষ ৫০ হাজার ক্রোনার থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ পর্যন্ত ১ বছরে বেতন পেয়ে থাকে।

তথ্য প্রযুক্তি বা আইটিঃ এই সেক্টরে যদি আপনি কাজ করতে পারেন, তাহলে অনেক বেতন পাবেন। যেমন সফটওয়্যার ডেভেলপার, ডেটা বিশ্লেষক, সাইবার নিরাপত্তা এবং ক্লাউড প্রযুক্তিবিদ এদের অনেক চাহিদা আছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্যবসার ক্ষেত্রে সাধারণত আইটি সেক্টর এর কাজ করতে হয়। বিশেষ করে অটোমেশনের কাজের চাহিদা অনেক আছে এবং এদের বেতন ও অনেক বেশি।
দক্ষ শ্রমিকঃ অনেকেই তাদের নির্মাণ কাজের জন্য ছুতার, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, ভারী যন্ত্রপাতি অপারেট করা এছাড়াও বাণিজ্যিক প্রকল্পের বিস্তারের ক্ষেত্রে তাদেরকেও প্রচুর পরিমাণে বেতন দেওয়া হয়।

নবায়নযোগ্য প্রযুক্তিবিদঃ এই দেশের পরিবেশগত সচেতন উন্নয়নের জন্য সৌর বায়ু ও জলবিদ্যুৎ এই কাজের প্রতি যাদের দক্ষতা রয়েছে তাদেরকে সাধারণত নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে এবং অনেক টাকা স্যালারি দেওয়া হয়।

শিক্ষা পেশাজীবীঃ শিক্ষার পেশাজীবী হিসেবে তারা বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষক এবং প্রশিক্ষক নিয়ে থাকে। তাই আপনার যদি এই কাজের প্রতি অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে সেটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি যেতে পারেন।

আতিথিয়তা ও পর্যটনঃ শেফ হোটেল ম্যানেজার এবং অন্যান্য অতিথি যারা আসবে তাদেরকে সেবা করার মানসিকতা এবং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধরনের পেশায় আপনি যেতে পারেন অথবা পর্যটক হিসেবে গাইড দেওয়া, এই ধরনের কাজগুলো করতে কর্মীদেরকে আকর্ষণীয় দেখতে হতে হবে এবং সুদর্শন হতে হবে। তাহলে অনেকটাকে বেতন পাওয়া যাবে, এই কাজগুলো ছাড়াও আরো অনেক কাজে তারা কর্মী নিয়ে থাকে নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো।

নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে যেতে পারেন।

ক্লিনার ভিসায় যাওয়া যাবে।

হোটেলের কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারবেন।

ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করা যাবে।

ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা থাকলে ড্রাইভিং এর কাজ করতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে জব করা যাবে।

কিন্ডারগার্ডেনের শিক্ষক হিসেবে যেতে পারবেন যদি আপনার অভিজ্ঞতা থাকে।

বিক্রয় প্রতিনিধি বা বিক্রেতা হিসেবেও কাজ করতে পারবেন যদি অভিজ্ঞতা থাকে।

আয়া হিসেবে কাজ করা যায়।

প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করতে পারবেন।

পর্যটন বিশেষজ্ঞ হিসেবে জব আছে।

উদ্যান ও মৎস্য শিল্প কৃষি কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারবেন।

স্কুলের শিক্ষক হিসেবে জব করতে পারবেন।

সর্বশেষ অয়েলম্যান হিসেবে কাজ করতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Md. Mahmudul Islam
Md. Mahmudul Islam
আমি ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ও সরকারি চাকরি করি। আমি অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করে ইনকাম করি, এছাড়াও ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করি। এই কাজের উপর আমার ৩ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।