পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম ২০২৫ সর্বশেষ তথ্য জানুন
আপনি যদি পর্তুগালে কাজের জন্য যেতে চান, সেক্ষেত্রে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার মাধ্যমে যেতে হবে এবং অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। চলুন, পর্তুগালে যাওয়ার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অনেক লোক পর্তুগালে যাচ্ছে। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন কাজের জন্য পর্তুগালে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন, তাদেরকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে হবে। তাই পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন সম্পর্কে জানতে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃপর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম ২০২৫ সর্বশেষ তথ্য জানুন
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন
আপনি যদি পর্তুগালে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই অনলাইনে আবেদন করতে হবে। তাই পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার জন্য যে কাজগুলো রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
পর্তুগালে যাওয়ার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে আপনার কিছু নথিপত্র জমা দেওয়া লাগবে। এরপরে এগুলো জমা হওয়ার পরে আবেদন প্রক্রিয়াগুলো ধাপে ধাপে পূর্ণ করা লাগবে। নিচে এই নথিপত্র কি কি লাগবে, সেগুলো উল্লেখ করা হলো। বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং এর মেয়াদ ৬ মাস হতে হবে, তাহলে আপনি আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার জন্য আপনার সাম্প্রতিক তোলা তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে, ছবিটা পরিষ্কার হতে হবে। আবেদন করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি জমা দেওয়া লাগবে।
যদি আপনার কোন কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকে, সেক্ষেত্রে প্রমাণ স্বরূপ হিসেবে সার্টিফিকেট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিবেন। পর্তুগাল যাওয়ার জন্য সেখানকার কোন কোম্পানি যদি আপনাকে অফার লেটার দিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে এই অফার লেটার কাজে লাগবে। আপনার ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে এবং সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যালেন্স রাখতে হবে। ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা হওয়ার জন্য আপনার আইইএলটিএস এর স্কোর ৬ এর উপরে থাকতে হবে এবং এর সার্টিফিকেট লাগবে।
করোনা ভ্যাকসিনের যে টিকা দিয়েছিলেন সেই কার্ড লাগবে অর্থাৎ এর সার্টিফিকেট লাগবে।
এছাড়া পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে তার সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর আপনাকে যে সনদ দেবে সেটা প্রয়োজন হবে। পর্তুগাল আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করা লাগবে, এতে ভুল হলে এটা বাতিল হয়ে যাবে। উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো সঠিকভাবে প্রস্তুত করে রাখবেন, এরপরে আবেদন করার সময়টা জমা দিয়ে দিবেন। তাহলে আপনি ভিসা অতি তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবেন। নথিপত্র বা কাগজপত্র গুলো অবশ্যই সঠিক তথ্য দেওয়া লাগবে, এটা ভুল তথ্য দিলে আপনার সমস্যা হবে।
পর্তুগাল ভিসা আবেদন ফরম ডাউনলোড করে সঠিকভাবে পূরণ করা লাগবে। এক্ষেত্রে আপনি পর্তুগিজ সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে পর্তুগালের জাতীয় ভিসা আবেদন পত্র গিয়ে আবেদন করবেন। এরপর আপনার ভিসা আবেদন ফর্মে যথাযথ তথ্যগুলো সঠিকভাবে পুরন করতে হবে, যাতে ভুল ত্রুটি না হয়। পর্তুগাল ভাষা যদি বুঝতে না পারেন সে ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষায় আপনি ট্রান্সলেট করে এপ্লাই করতে পারবেন। এজন্য ট্রান্সলেট অপশনে সিলেক্ট করে নিতে হবে। এরপরে আপনার যাবতীয় তথ্য এই ফর্মটিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরে সাবমিট বাটনে চাপ দিবেন।
আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়ে গেলে, সে ক্ষেত্রে ইমেইলের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দিবে। এরপর আপনি পর্তুগাল এম্বাসিতে যোগাযোগ করতে পারেন, তারপরে পর্তুগাল আপনার জব ভিসাটা সেখান থেকে সংগ্রহ করে নিবেন। সবকিছু ঠিকঠাক মত যদি জমা দিতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনে মাধ্যমে একটি ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। এতে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করতে পারে। আপনার প্রশ্নগুলো যদি সন্তোষজনক হয় সে ক্ষেত্রে আপনাকে আমন্ত্রণপত্র পাঠাবে। তারপর আপনি এম্বাসিতে যোগাযোগ করতে পারেন।
আপনি যদি আবেদন করতে সমস্যা মনে করেন, সেক্ষেত্রে আপনি এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। তারা আবেদনের কাজ করে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে। তবে এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করলে অনেক সময় প্রতারণা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজেন্সি বেছে নেওয়ার জন্য আপনাকে সতর্ক থাকা লাগবে। পরিচিত এজেন্সি যদি না হয় তাহলে প্রতারণা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তাই আপনার আশেপাশে যারা আত্মীয় স্বজনের মধ্যে যে সকল এজেন্সির মাধ্যমে পর্তুগালে গিয়েছে তাদের থেকে খোঁজখবর নিয়ে আবেদন করতে পারেন।
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট চেক
আপনি যে পর্তুগাল যাওয়ার জন্য ভিসাটা করলেন সেটা চেক দেওয়ার প্রয়োজন। তাই পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট চেক দিবেন কিভাবে সে সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়ার জন্য যে ভিসা চেক করে নিতে হবে। কারণ আপনার এই ভিসাটা সঠিক হয়েছে কিনা সে বিষয়ে চেক করে নিশ্চিত হতে হবে। এক্ষেত্রে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিটের ভিসার জন্য অবশ্যই আবেদন করা লাগবে। আবেদন করার দুই তিন মাস পরে অবশ্যই ভিসা চেক করা যেতে পারে। আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ভিসা চেক করতে পারবেন এজন্য যে ওয়েব সাইটে ভিজিট করবেন তা হল; https://www.schengenvisainfo.com/portugal/visa এর মাধ্যমে আপনি আবেদন করার দু তিন মাসের মধ্যেই ওয়েবসাইটে ঢুকে এই ভিসা চেক করতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশ থেকে যারা পর্তুগাল যেতে চান তাদেরকে অবশ্যই কিছু নিয়ম-কানুন মানতে হবে। তাই বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো।
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়া একটু কঠিন তবে নিয়ম কানুন জানা থাকলে সহজভাবে যেতে পারবেন। প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী এবং শ্রমিক পর্তুগালে যাচ্ছে, তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগাল ভিসা পাওয়া কঠিন ব্যাপার। তার পরেও আপনি চেষ্টা করলে পর্তুগাল যেতে পারবেন। অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগাল ভিসা পাওয়া কঠিন হলেও বর্তমানে অনেক বাংলাদেশী পর্তুগালে যাচ্ছে। তাদের জন্য চারটি ভিসা চালু করা হয়েছে, স্টাডি, ওয়ার্ক পারমিট, টুরিস্ট ও মেডিকেল ভিসার মাধ্যমে যেতে পারবেন। এই ভিসা পাওয়া অনেকটাই কঠিন বিষয় তারপরও চেষ্টা করলে পেয়ে যাবেন।
তবে টুরিস্ট ও মেডিকেল ভিসা এর মাধ্যমে পর্তুগাল যাওয়া সহজ হবে। এই ভিসায় যেতে চান সেক্ষেত্র খরচ বেশি হবে। বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার জন্য দুটি উপায় আছে। একটি হল পর্তুগাল এম্বাসের মাধ্যমে যেতে পারবেন, দ্বিতীয় নাম্বার পর্তুগালে অবস্থানরত কোন আত্মীয় যদি থাকে তাদের মাধ্যমে যেতে পারবেন। পর্তুগাল এম্বাসি হলো যেখানে ভিসা দেওয়া হয়, এই ভিসা সেন্টারে গিয়ে আপনি পর্তুগাল ভিসার জন্য আবেদন করবেন। আপনি যখন পর্তুগালে যাওয়ার জন্য ইচ্ছা করবেন, তার প্রথম কাজ হল পর্তুগালে এম্বাসিতে যা যোগাযোগ করতে হবে।
আমাদের বাংলাদেশে সাধারণত পর্তুগালের কোন অ্যাম্বাসি নাই। বাংলাদেশের পর্তুগালের দূতাবাস নাই। তবে এ বিষয়ে বেশি চিন্তিত হওয়ার দরকার নাই। আমাদের দেশে না থাকলেও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পর্তুগালের এমব্যাসি আছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পর্তুগালের এম্বাসী রয়েছে। সেখানে গিয়ে আপনি পর্তুগালের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এজন্য আপনাকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যাওয়া লাগবে। তারপরে সেখানে গিয়ে পর্তুগালের ভিসার আবেদন পত্র জমা দেওয়া লাগবে। আপনার কোন আত্মীয়-স্বজন যদি পর্তুগালে থাকে, সে ক্ষেত্রে তাদের মাধ্যমে আপনি পর্তুগালে যেতে পারবেন।
আপনার পরিচিত ব্যক্তির রেফারেন্সে সহজেই বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার অনুমতি পাবেন। তাছাড়া পর্তুগাল যাওয়ার আরও একটু উপায় আছে সেটা হল ওই দেশের কেউ যদি আপনাকে চাকরির অফার দিয়ে থাকে। আর সেই ক্ষেত্রে আপনি কোম্পানির মাধ্যমে জব অফার নিয়ে চাকরির উদ্দেশ্যে পর্তুগালে যেতে পারবেন। পর্তুগালে যেতে চান অবশ্যই আপনাকে ভারতে অবস্থিত পর্তুগালে এম্বাসিতে যোগাযোগ করা লাগবে। তাদের থেকে ভিসা নিয়ে প্রতারিত হয়েছে, তাই আপনি একটু সচেতন হয়ে আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে হয়তো সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র।

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url