ibs রোগ কি ভালো হয় ও সম্পূর্ণ নিরাময় করার উপায়

অনেকে আইবিএস এর জন্য বিভিন্ন ধরনের চিন্তায় পড়ে যান, তাই ibs রোগ কি ভালো হয়? এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান, আসলে কিভাবে এটা ভালো করবেন সে সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন, আই বি এস কিভাবে ভালো করা যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
আইবিএস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে প্রথমে মানসিক টেনশন থেকে মুক্তি পেতে হবে এবং খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন ও শারীরিক ব্যায়াম করা লাগবে। তাই ibs রোগ কি ভালো হয়? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।

পোস্টসূচিপত্রঃibs রোগ কি ভালো হয় ও সম্পূর্ণ নিরাময় করার উপায়

ibs রোগ কি ভালো হয়

আইবিএস রোগে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা অনেকেই জানতে চায় যে ibs রোগ কি ভালো হয়? আসলে যাদের ibs রয়েছে। তারা যদি নিয়মতান্ত্রিক ভাবে জীবন যাপন করেন, তাহলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

মানসিক সমস্যাঃ যাদের আইবিএস রয়েছে তারা অত্যাধিক মানসিক চাপে থাকেন। তাই আইবিএস থাকা ব্যক্তির কখনোই মানসিক টেনশন করা যাবেনা। অস্থিরতা মনোভাব আনা যাবে না, তাহলে আপনার আইবিএস আরো বৃদ্ধি পাবে। তাই আইবিএস সমাধানের জন্য সর্ব প্রধান সমাধান করতে হবে আপনার মানসিক টেনশন থেকে মুক্ত থাকতে হবে। যদি মানসিক টেনশন করেন তাহলে শরীরের উপর এটা প্রভাব ফেলবে।

যার কারণে কিছু সমস্যা বৃদ্ধি পাবে এ ধরনের রোগীদের সাধারণত গ্যাস্ট্রোলিভার ডাক্তাররা মানসিক টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু মেডিসিন দিয়ে থাকেন। তাই আপনি একজন আইবিএস বিশেষজ্ঞ কে দেখিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন।

এই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য Tablet: Amilin 10 mg এই ওষুধটি সাধারণত দিয়ে থাকে। তাই আপনি চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধটি খেলে আপনার মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যাবে। তাহলে আইবিএসও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তনঃ আইবিএস অনেক ধরনের হয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম কারো কোষ্ঠকাঠিন্য আবার কারো ডায়রিয়া হতে পারে অনেকের আবার দুটোই হতে পারে। যার কারণে আপনার খাদ্য খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সম্পর্ক সতর্ক থাকতে হবে। কেননা একেক জনের একেক রকমের খাদ্য প্রয়োজন। তাই এটা অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ করে খেতে হবে।

এজন্য আপনাকে প্রসেসিং খাবার গুলো খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে এবং এই খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা। এছাড়াও যে খাবারগুলো ভেজাল যুক্ত রয়েছে সেগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। দুধ এবং দুধের তৈরি খাবার গুলো, শাক, আপেল এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো থেকে বিরত থাকুন।

ক্যাফেইন ত্যাগ করাঃ আপনার যদি আইবিএস থাকে তাহলে অবশ্যই পেটকে ভালো রাখতে হবে। এজন্য ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল যুক্ত খাবার গুলো থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও আপনি প্রাকৃতিকগত ফল কিনে নিজেই জুস করে বেলেন্ডার করে খাবেন। যারা ধূমপান করেন তাদের ক্ষেত্রেও অসুবিধা হতে পারে।

শাকসবজি যখন কাটবেন তখন ধোয়ার প্রয়োজন নাই অথবা ফলমূল যখন খাবেন তখন খোসা ছাড়ানোর প্রয়োজন নাই। শাকসবজি এবং ফলমূলের খোসার মধ্যে পুষ্টি উপস্থিত থাকে, তাই আপনি এটা ধুয়ে পরিষ্কার করে খেতে পারবেন। এতে আপনার পেটের সমস্যা দূর হবে হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে।

দ্রবনীয় ফাইবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবেঃ ফাইবার যুক্ত খাবার গুলো অতি দ্রুত হজম হয়। তাই ওজন কমানোর জন্য আপনাকে ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে। কেননা ফাইবার গুলো দ্রবণীয় এজন্য আপনি এই খাবারগুলো খেতে পারেন।

তার মধ্যে অন্যতম হলো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গুলো হলো গাজর, সাইট্রাস ফল, মটরশুটি, এছাড়াও কিছু বাদামও খেতে পারেন। তাছাড়াও গ্লুটামিন যুক্ত যুক্ত প্রাকৃতিক খাবার গুলো খেতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় অন্য খাবার অল্প করে খাওয়া যেতে পারে।

প্রোবায়োটিক খেতে পারেনঃ আইবিএস কে সম্পূর্ণ নিরাময় করার জন্য আপনাকে প্রোবায়োটিক খেতে হবে। এজন্য আপনি সাপ্লিমেন্টও খেতে পারেন। তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ খেতে হবে। আবার খাদ্য হিসাবে দই খেতে পারেন।

কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ প্রোবায়োটিক থাকে যা আপনার শরীরে ভালো ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন করবে। এছাড়া এটি আপনার শরীরের ভিতরে ভারসাম্য তৈরি করতে চেষ্টা করবে।

মাখনের উপকারিতাঃ আইবিএস থেকে নিরাময় করার জন্য আপনি মাখন খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যার কারণে অনেকটাই ভয় থাকে। তবে তার পরেও উপকার রয়েছে, মাখন যদি খেতে পারেন এতে কোষের মেমব্রেন মজবুত করতে পারবেন এবং লিভারের কার্যকারীতা সুস্থ করতে পারবে। হাড়ের ক্ষয় থেকে রক্ষা পাবেন, এই মাখন আপনি রুটি বা অন্য খাবারের সাথেও মিশিয়ে খেতে পারেন।

কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ যদি আপনার আইবিএস এর সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে কলা খেতে পারেন। কেননা এতে আপনার আইবিএস এর সমস্যা অনেকটা কমে যাবে। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে এজন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে এবং আপনার শরীরের পুষ্টির অভাব পূরণ করবে।

তাই আপনি সকালবেলা একটি করে কলা খেতে পারেন। এতে আপনার পেটের সমস্যাগুলো দূর হয়ে যাবে। আর যদি পেট খারাপের সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই কাঁচা কলা খাবেন, তাহলে উপকার পাবেন। কেননা এই কলার মধ্যে থাকে পটাশিয়াম, মিনারেল এবং ভিটামিন সি যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কাজ করে থাকে।

যে সকল বাজে অভ্যাস ত্যাগ করবেনঃ খাবারের নির্দেশনা অনুযায়ী অবশ্যই আপনাকে চলতে হবে, তা না হলে আপনার এই আইবিএস কমবে না। এজন্য যে খাবারগুলো খেলে আপনার পেটের সমস্যা বৃদ্ধি পায়, সে খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং যে খাবারগুলো খেলে আপনার শরীরে ভালো লাগে, পায়খানার চাপ হয় না সে ক্ষেত্রে আপনি খেতে পারবেন।

যে ফল গুলো খেলে আপনার আইবিএস বৃদ্ধি পাবে সে ফল গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যেমন কমলা, স্ট্রবেরি, আঙ্গুর, তরমুজ, আম, আপেল এই খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 

এছাড়াও সবজি যেগুলো খাবেন না; গাজর, বেগুন, ব্রকলি, ফুলকপি এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। অনেকে ডাল খেতে পছন্দ করে যেমন মসুরের ডাল, মটর ছোলা এই ধরনের ডালগুলো খেলে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস্ট্রিক হয় এবং পেটের সমস্যা বৃদ্ধি পায়, আইবিএসও বৃদ্ধি পায়।
দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, তা না হলে আপনার আইবিএস আরও বেশি বেড়ে যাবে। যেমন মিষ্টি তবে দুধের তৈরি দই খেতে পারবেন, অল্প পরিমাণ খেলে এতে আপনার আরো উপকার হবে। এটা ভালো ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন হবে, সেই হিসেবে দই খাওয়া যেতে পারে তবে পরিমাণমত খেতে হবে।

এছাড়াও গ্লুটেন জাতীয় খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যেমন গমের আটা, এছাড়া ময়দা জাতীয় খাবার গুলো খেলে আরো আইবিএস এর সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়াও যেমন ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার যদি খান সেক্ষেত্রে আইবিএস বৃদ্ধি পাবে। যাদের আইবিএস এর সমস্যা রয়েছে তারা ডিম খেতে পারেনা, বাদাম, কফি, অ্যালকোহল এই ধরনের খাদ্যগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, ভাজা মসলাদার খাবার এই জাতীয় খাবার খেলে আইবিএস বৃদ্ধি পায় সেজন্য এগুলো থেকে বিরত থাকবেন।

ibs রোগ প্রতিরোধ

রোগ হওয়ার পূর্বে আমাদের প্রতিরোধ করা উচিত এবং সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সেই ক্ষেত্রে আপনি আইবিএস রোগের ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে প্রতিরোধ করতে পারেন। কেননা যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের অনেকের খাদ্য হজম হয় না। যে সকল খাবারগুলো খেলে আপনার হজম হবে না সেই খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

যে জিনিসগুলো খেলে আপনার হজম শক্তি ভালো থাকে এবং কোন সমস্যা হয় না, সে খাবার গুলো খেতে পারেন। মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা যদি থাকে সেটা দূর করতে হবে আবার অনেকের মানসিক রোগের ডাক্তার দেখাতে হয় সেটা দেখে নিতে পারেন এবং মেডিটেশন শারীরিক ব্যায়াম করা যেতে পারে। তাই আপনি যদি মনের উপরে বেশি জোর দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের উপর জোর হবে।

ibs সম্পন্ন নিরাময় করার উপায়

যদি আপনি যদি সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করতে চান, সে ক্ষেত্রে উপলক্ষে নিয়ম গুলো চলার পাশাপাশি আরো কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। যেমন কুসুম গরম পানির মধ্যে লেবুর রস মিশিয়ে অল্প পরিমাণ করে সারাদিন খেতে পারেন। এই প্রক্রিয়াটি আপনি পালন করতে পারেন, এতে আপনার পেটের সমস্যা দূর হয়ে যাবে এবং আইবিএস এর সমস্যাও থাকবে না।

লেবুর পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাই আপনার পেটের সমস্যার জন্য খেতে পারেন এজন্য সকালবেলা খালি পেটে গ্লাস পানিতে ব্লেন্ডার করে খেতে পারেন। সপ্তাহে এভাবে যদি খেতে পারেন তাহলে ভালো একটি ফলাফল পাবেন।

ibs এর ঘরোয়া প্রতিকার

আপনার যদি কষ্টকাঠিন্য ও আইবিএস এর সমস্যা থাকে, তাহলে আপনি ঘরোয়া উপায়ে কলা, পেঁপে, পেয়ারা এ জাতীয় খাবার গুলো খেতে পারেন। তাহলে আপনার পেটের ভিতরে ভালো লাগবে এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে। এজন্য আপনাকে ব্যায়াম করা লাগবে, এছাড়া আপনি ধর্ম চর্চা করতে পারেন। তাহলে মানসিক চাপ কমে যাবে, দ্রুত সেরে উঠবেন।

এছাড়াও আইবিএস এর জন্য বিভিন্ন ধরনের লেক্সোটিভ ওষুধগুলো খেতে পারেন। এছাড়াও ইসবগুলের ভুষি জাতীয় খাবারগুলো খাবেন, প্রচুর পরিমাণ পানি খাবেন। এছাড়া আপনার শরীরে যদি কোন খাদ্য খেলে সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সে খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এবং আপনারে খাবার খাওয়ার পর কতটুকু পরিবর্তন হচ্ছে সেটা হিসাব করে রাখতে হবে। এজন্য আপনাকে খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে তাহলে আপনার খাদ্য হজম এবং মানসিক মুক্তি পাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪