নারিকেল খেলে কি উপকার হয় ও ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে জানুন

নারিকেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার তাই নারিকেল খেলে কি উপকার হয়? এ সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন এবং এটা আমাদের স্বাস্থ্যগতভাবে কি উপকার করে থাকে, চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
নারিকেলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে যা আমাদের শারীরিকভাবে শক্তিশালী করতে পারে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে। তাই নারিকেল খেলে কি উপকার হয়? এসব সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃনারিকেল খেলে কি উপকার হয় ও ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে জানুন

নারিকেল খেলে কি উপকার হয়

অনেকেই নারকেল খেতে পছন্দ করে তাই নারিকেল খেলে কি উপকার হয়? এ সম্পর্কে হয়তো অনেকে জানেন না। এর ঔষধি গুনাগুন ও উপকারিতা রয়েছে। চলুন এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে যেনে নেওয়া যাক।

হজম শক্তি উন্নতি করেঃ যাদের হাজমের সমস্যা রয়েছে তারা নারিকেল খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা আপনার পেটের বিভিন্ন ধরনের রোগের উপকার করে থাকে। এছাড়াও উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে, এতে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাচনতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

গ্যাস্ট্রো লিভার ডাক্তারেরা বলে থাকেন আপনার খাদ্য হজমের ক্ষেত্রে অবশ্যই ফাইবার জাতীয় খাবার খেতে হবে। তাই পুষ্টিবিদরা নারিকেল খেতে বলেন, কেননা এর মাঝে ফাইবার থাকে যা আপনার হজমের কাজ করবে এবং পেট ফুলে যাওয়া, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, পেট ব্যথা হওয়া, খাদ্য হজম ইত্যাদির সমস্যা গুলো সমাধান করতে ভালো কাজ করে থাকে। এজন্য আপনি এক টুকরো নারিকেল নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন, এতে দেখবেন অনেক উপকার পাবেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়ঃ যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাদের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হয়। তার মধ্যে নারিকেল খেতে পারেন, কেননা এর মধ্যে লরিক অ্যাসিড থাকে যা অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং এন্টিফাঙ্গাল উপাদান থাকার কারণে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করতে সাহায্য করে, এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন নারিকেল থেকে যে লরিক এসিড পাওয়া যায় এটা শক্তিশালী মাইক্রোবিয়াল এর প্রভাবেই হয়ে থাকে। তাই প্রতিদিন সকালবেলা এক টুকরো নারিকেল আপনি চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার বিভিন্ন ধরনের রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণঃ যাদের ওজন অতিরিক্ত রয়েছে তারা শারীরিক ব্যায়াম করার পাশাপাশি ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে পারেন। এর মধ্যে যেমন নারিকেল খাওয়া যেতে পারে। কেননা এটা শরীরের চর্বি কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে।

আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করবে নারিকেল খাওয়ার কারণে আপনার পেট ভরা মনে হবে এতে অতিরিক্ত আজেবাজে খাবারের প্রতি আকর্ষণ থাকবে না। এই ক্ষেত্রে আপনার ওজন বাড়বে না, এছাড়াও এর মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে দীর্ঘ সময় খাদ্য হজম হতে সময় লাগে পেট ভরা মনে হয়।
পুষ্টিবিদরা বলেছেন নারকেল যদি খাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরের চর্বি কমতে থাকবে এবং চর্বি গুলো গলে যাবে। তাই যারা এই নারিকেল খেতে চান সে ক্ষেত্রে সকল বেলা খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরে ওজন এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।

দাঁত ও হাড় মজবুত করেঃ এর মধ্যে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা আপনার দাঁত ও হাড় মজবুত করবে। এছাড়াও দাঁতের বিভিন্ন ধরনের রোগের ক্ষেত্রেও সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া ক্যালসিয়ামেরও ঘাটতির কারণে গর্ভবতী মায়েদের সমস্যা হয়ে থাকে, তাই এ ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য নারিকেল খাওয়া যেতে পারে।

হার্টের জন্য উপকারঃ আপনি যদি নিয়মিত ভাবে নারিকেল খেতে পারেন, সে ক্ষেত্রে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা কমে যাবে। এছাড়াও নারিকেল হার্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা এটা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

নারিকেলের শাঁসঃ এটা খুবই উপকার করে থাকে, কারণ এর মধ্যে ফাইবার থাকে যা আপনার পাচনতন্ত্রের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে। দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে পারে সে ক্ষেত্রে ওজন কমানোর জন্য নারিকেল উপকার। কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম হাড় এবং দাঁত গঠনের জন্য উপযুক্ত কাজ করে থাকে।

শক্তি যোগাতে পারেঃ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকার কারণে আপনার শরীরে শক্তি পাবেন এই জন্য কাজে ক্লান্তি হবে না। এজন্য আপনি ক্যালরি যুক্ত খাবার খাওয়ার পরে দুই এক টুকরো এই খাবার খেতে পারেন।

ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ করেঃ আপনি যদি প্রতিদিন খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার ব্রেস্ট ক্যান্সার এবং অন্যান্য যে কোন ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে নারিকেল খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা আপনার ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ করবে।

নারিকেল ও দুধঃ মিশ্রণটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সুস্বাদু হয়ে থাকে। তবে অনেক সময় লাগে এটা তৈরি করতে। এজন্য গরুর দুধের সাথে নারিকেল বেটে নিতে হবে, এরপরে দুটো জিনিস মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে আপনি খেতে পারেন, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খাওয়া যেতে পারে। এতে আপনার অনেক উপকার পাবেন এবং থাইরয়েডের সমস্যা দূর হবে।

ভাইরাস ধ্বংস করেঃ নারকেল এমন একটি পুষ্টি উপাদান যা আপনার ভাইরাস ধ্বংস করতে সাহায্য করে থাকে। এরপর আপনি নিয়মিতভাবে এটা খেলে ভাইরাস হারপিস, মামস ইত্যাদি ধরনের ভাইরাস গুলোকে নষ্ট করে দিতে সাহায্য করবে এবং অসুখ-বিসুখ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং আলজেমার রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়াও হরমোনের ও থাইরয়েড ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য নারিকেল খাওয়া যেতে পারে।

এলার্জিঃ যাদের আগে থেকেই এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা ত্বকে চুলকানি ফুসকুড়ি এগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো অভিযুক্ত হয়েছে। তাই নারিকেল এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।

চর্বি নিয়ন্ত্রণঃ যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণ চর্বি রয়েছে তারা নারিকেল খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে ফাইবার থাকে যা ওজন নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও চর্বি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

নারিকেল খেলে কি ডায়াবেটিস কমে

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ আপনি যদি সকালবেলা এই নারিকেল খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার রক্তের শর্করা মাত্রার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে লাইসেমিক অথবা ফাইবার সামগ্রী থাকে এছাড়াও এর মধ্যে কার্বোহাইডেট থাকার কারণে হজম শক্তিকে দৃঢ় করতে পারে এবং রক্তের শর্করা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীর এই নারিকেল পরিমাণ মতো খেতে পারেন।

এজন্য যারা টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগী রয়েছেন তারা নারিকেল খেতে পারেন এতে আপনার ডায়াবেটিসের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।

নারিকেল ত্বক ও চুল সুন্দর রাখে

এটা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ বা ব্রণ অথবা মেছতা দূর করার জন্য আপনি নারিকেল খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন থাকে যা আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং চুলকে ভালো রাখবে। তাই নারিকেলের তেল চুলের জন্য ভালো কাজ করে থাকে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ত্বকের হাইড্রেশন এবং ভারসাম্যতা বজায় রাখতে পারলে আপনার চুলের জন্য ভালো কাজ করবে সেই ক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত নারিকেল পরিমাণ মতো খেতে পারেন।
ত্বক কোমল করেঃ আপনার ত্বকের ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতা ধরে রাখবে এবং নিয়মিত নারিকেল খাওয়ার কারণে ত্বক সুন্দর হতে থাকে। তাছাড়া নারিকেলের তেল ত্বকে কমল ও সৌন্দর্য ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এছাড়াও বয়সের কারণে অনেকের বলিরেখা দেখা যায় সেটাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

চুল ভালো রাখেঃ চুল এমন একটি সৌন্দর্য যা আপনি যদি যত্ন না হয়, তাহলে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। মাথায় খুশকি দূর হয়। কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার শরীরে কোষ গুলোকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে মুক্ত রাখবে এবং বার্ধক্য দেখা যাবে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Md. Mahmudul Islam
Md. Mahmudul Islam
আমি ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ও সরকারি চাকরি করি। আমি অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করে ইনকাম করি, এছাড়াও ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করি। এই কাজের উপর আমার ৩ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।