পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল ও ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
অনেকে জানতে চায় যে, পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল? তাই এই যুদ্ধের কিছু ভুলের কারণে নবাবের পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল এবং ইংরেজরা এ দেশ শাসন করেছিল। চলুন, পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আমরা অনেকেই জানিনা যে পলাশীর যুদ্ধে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তাদের শেষ পরিণতি কি হয়েছিল এবং তাদের মৃত্যু কি স্বাভাবিকভাবে হয়েছিল। তাই পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল? এ সম্পর্কে জানতে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃপলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল ও ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল
অনেকে জানতে চায় যে পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল? সম্পর্কে। কেননা পলাশী যুদ্ধের কারণেই প্রায় ২০০ বছর এদেশে ইংরেজরা শাসন করেছে। কি কারণে এই যুদ্ধ হয়েছিল এবং কেনই বা এই যুদ্ধে ব্যর্থতা হল এজন্য এখান থেকে আমাদের অনেক শিক্ষা নেওয়া দরকার। পলাশী যুদ্ধের কারণ সমূহ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
রাজনৈতিক কারণঃ নবাব আলীবর্দী খান ক্ষমতায় আসার পরে ইংরেজ ও ফরাসীরা এদেশে ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য অনুমতি চায়, পরবর্তীতে আলীবর্দী খান তাদেরকে ব্যবসা করতে দেন। নবাব আলীবর্দী খান তাদেরকে বলেছিল যে, তোমরা এখানে যুদ্ধ বা দুর্গ নির্মাণ করতে পারবে না কিন্তু পরবর্তীতে আলীবর্দী খান মারা যাওয়ার পর নবাব সিরাজউদ্দৌলার ক্ষমতায় আসেন, এরপরে নবাবের সহজ সরলতা বুঝে ইংরেজরা দুর্গ নির্মাণ করেন। যদিও ফরাসিরা নবাবের কথা শুনেছিলেন কিন্তু ইংরেজরা শোনে নাই। যার কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাদের উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
অর্থনৈতিক কারণঃ ইংরেজরা মূলত এ দেশে আসছিলেন ব্যবসা করতে কিন্তু তাদের সাথে অর্থনৈতিকভাবে যে চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তি তারা মানে না বরং তারা অর্থনৈতিক বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা বেশি গ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও তারা এ দেশের অর্থ তাদের দেশে পাচার করতে থাকে। তাছাড়া ইংরেজরা ব্যবসা করার জন্য যে কর দেওয়ার কথা ছিল সেটাও তারা দেয় না। যার কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাদের উপর রাগান্বিত হয়ে যান এবং এদেশে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য করা নিষেধ করে দেন।
অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রঃ নবাব আলীবর্দী খানের শুধু কন্যা সন্তান ছিল, ছেলে সন্তান না থাকার কারণে তার সেনাপতি বা অন্যান্য সৈন্য বাহিনী সিংহাসনে বসার জন্য লোভে পড়ে যায়। এজন্য তারা ইংরেজদের সাথে গোপনে ষড়যন্ত্র করে যে, নবাব মৃত্যুবরণ করলে পরবর্তীতে মীরজাফরকে সিংহাসনে বসানো হবে। যার কারণে ইংরেজরা এই সুযোগটা গ্রহণ করে এবং আভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয়। এই ষড়যন্ত্র নবাব সিরাজউদ্দৌলা নিকট অনেক সৈন্যরা বলেছিল কিন্তু তিনি বিশ্বাস করছিলেন না। যা পরবর্তীতে পলাশী যুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ঘসেটি বেগম ও শওকত জং এর ষড়যন্ত্রঃ নবাব আলীবর্দী খান মৃত্যুর পূর্বেই উত্তরাধিকার মনোনয়ন করেন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে। কেননা তাকে তিনি অত্যন্ত পছন্দ করতেন। যার কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালা ঘসেটি বেগম নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এই মহিলা তার ছেলে শওকত জং এর সাথে নিয়ে ইংরেজদের কাছে গিয়ে হাত মিলিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়ে তার ছেলে শওকত জংকে সিংহাসনে বসাবেন। এই ধরনের ষড়যন্ত্র পরবর্তীতে পলাশী যুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কৃষ্ণ দাস কে আশ্রয়দানঃ কৃষ্ণ দাস নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে কাজ করত। যার কারণে ইংরেজরা দেখল যে এই কৃষ্ণ দাস কে যদি আমরা আশ্রয় দিতে পারি। তাহলে এর মাধ্যমেই নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যাবে। যার কারণে কৃষ্ণ দাসকে প্রচুর অর্থ সম্পদ দিয়ে তাদের কাছে রেখে দিল। এর কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের প্রতি রাগান্বিত হয়ে গেলেন এবং নবাব ইংরেজদেরকে বললেন যে, কৃষ্ণ দাস কে ফিরে দাও কিন্তু ইংরেজরা কৃষ্ণ দাসকে ফেরত দেয়নি।
ইংরেজগণ কর্তৃক কলকাতা পুনঃ দখলঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলা যখন কলকাতা বিজয় করলো তখন এই সংবাদ রবার্ট ক্লাইভ ও ওয়ার্টসন জানতে পেরে কলকাতায় ফিরে আসলেন এবং পুনরায় কলকাতা দখল করে নিল। এজন্য নবাব সিরাজউদ্দৌলার তাদের প্রতি রাগান্বিত হয়ে গেলেন এবং ইংরেজদের প্রতিহত করার জন্য সেনাবাহিনী পাঠানো শুরু করলো কিন্তু দেখলেন যে তার চারিদিকে শুধু শত্রু। এ সকল শত্রু নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাই তিনি ইংরেজদের দমন না করে একটি চুক্তির প্রস্তাব দিলেন যা আলিগড় সন্ধি নামে পরিচিত।
ইংরেজ কর্তৃক শওকত জং এর পক্ষ অবলম্বনঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালাতো ভাই শওকত জং তিনি নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। কেননা এই শওকত জং নবাবকে সরিয়ে দিয়ে সিংহাসনে বসার চিন্তাভাবনা করছেন। তাই এই সুযোগ ইংরেজরা নিয়েছিল, ইংরেজরা শওকত জং এর পক্ষে কাজ করছিল। তাই নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের প্রতি রাগান্বিত হন এবং প্রতিশোধ নেওয়ার মনস্থির করেন কিন্তু ইংরেজরা তার আপন খালাতো ভাইকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য উৎসাহ দেয়।
নবাবের প্রতি ইংরেজদের বৈরী মনোভাবঃ ইংরেজরা যখন দেখল যে নবাব সিরাজউদ্দৌলার আপন আপন মানুষ জন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তখন ইংরেজরা এই সুযোগে অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্য কুঠির নির্মাণ করে এবং যত ধরনের অস্ত্র আছে সকল কিছু সেখানে রেখে দেয়। এছাড়াও নবাবের কোন অনুমতি তারা নেয়নি, নবাবের সাথে খারাপ আচরণ করে। ইংরেজরা বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের অর্থ প্রদান করে না। তাছাড়া নবাবের কোন আদেশ মানে না।
নবাবের আদেশ অমান্য করাঃ নবাব যখন দেখলেন যে, ইংরেজ ও ফরাসিরা অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা বাণিজ্য করছে এবং দুর্গ নির্মাণ করছে। তখন তিনি তাদেরকে এই ধরনের অবৈধ বাণিজ্য কুঠির নির্মাণ করতে নিষেধ করেন। তার এই আদেশ ফরাসিরা শুনেছিল কিন্তু ইংরেজরা এই আদেশ অমান্য করে। যার কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের প্রতি রাগান্বিত হয়ে ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে কলকাতার দিকে রওনা হয় এবং কলকাতা আক্রমণ করে।
নবাবের অদূরদর্শিতাঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসন আরোহন করার পরে থেকেই মানুষকে অত্যন্ত বিশ্বাস করে। দক্ষতার সাথে তিনি সিংহাসন চালানো শুরু করেন কিন্তু তিনি মানুষকে অত্যাধিক বিশ্বাস করেন এবং সহজ সরল উদারতা ছিলেন, যার কারণে তার এই সরলতার সুযোগ নিয়ে তার সৈন্যবাহিনী বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল এবং তারা নবাব কে সিংহাসন থেকে প্রদর্শিত করার ষড়যন্ত্র কর করতে থাকে কিন্তু সহজ সরল ও উদার মনের মনোভাব নিয়ে নবাব তাদেরকে দমন করার জন্য তেমন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেয়নি। যার কারণে কঠোর শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল।
কলকাতা অধিকারঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের প্রতি এতটাই রাগান্বিত হয়েছিল যে তাদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য তিনি কলকাতা আক্রমণ করেন। পরবর্তীতে এই কলকাতা পুনরায় বিজয় লাভ করেন। এতে ইংরেজরা অনেক ভয় পেয়ে যায় বিশেষ করে ইংরেজদের গভর্নর এবং তার অনুসারীরা যারা ছিলেন তারা ভয় পেল এবং এই দুর্গ থেকে চলে যায়। অন্য একটি জায়গায় আশ্রয় নিয়ে থাকে। যার কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬ সালে এই কলকাতা জয় লাভ করেন পরবর্তীতে নাম দেন আলিনগর।
কাল্পনিক কাহিনীঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলা যখন ফোর্ট উইলিয়াম দখল করলেন তখন ইংরেজদের চিকিৎসক ছিলেন হলওয়েল। তিনি একটি বিখ্যাত তথ্য দিয়েছিলেন যা একটা কাল্পনিক ঘটনা। তিনি বলেছিল যে ১৮ ফুট লম্বা একটি ঘরের ভিতরে ১৪৬ জন ইংরেজদের কে বন্দি করে রাখছে। এত ছোট আয়তনের জায়গার কারণে একসাথে ১২৩ জন দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে। একদমই এটা একটা অবাস্তব কথা ১৮ ফুট লম্বা একটা ঘরের মাঝে কখনোই ১৪৬ জন মানুষ পারবে না হবে না এটাকে কাল্পনিক কাহিনী যা ইতিহাস অন্ধকূপ নামে পরিচিতি লাভ করেছে।
পলাশীর যুদ্ধের ঘটনা
এখন আমরা জানবো পলাশীর যুদ্ধের ঘটনা সম্পর্কে যখন চারিদিকে ইংরেজরা ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার শুরু করল। তখন সিরাজউদ্দৌলার সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলেন। ষড়যন্ত্র যখন পরিপক্ষ হয়ে গেল তখন রবার্ট ক্লাইভ নবাবের বিরুদ্ধে সন্ধি ভঙ্গের মিথ্যা অভিযোগ তুলে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন এবং ইংরেজরা তাদের সৈন্য মুর্শিদাবাদের দিকে অগ্রসর হল। তার সৈন্য সংখ্যা ছিল ৩০০০ এর কিছু বেশি। নবাব ইংরেজদের আক্রমণের খবর পেয়ে ৫০ হাজার পদাতিক ও ২৮ হাজার অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে ইংরেজদের মোকাবেলা করার জন্য সামনের দিকে অগ্রসর হলেন।
২৩শে জুন ১৭৫৭ সালে ভাগীরথী নদীর তীরে উভয় দলের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত শুরু হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মীরজাফর এর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ও বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নবাব পরাজয় বরণ করে। এজন্য ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধের ঘটনা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পরাজয় বরণ করতে হলো মোহনলাল ও মীর মদন যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণপণ চেষ্টা করার পরও নিহত হয়ে গেল। হতভাগ্য সিরাজউদ্দৌলা মীরজাফরের পুত্র মিরনের আদেশে মোহাম্মদ বেগ এর হাতে নিহত হলেন। এজন্য পলাশীর যুদ্ধের কারণ অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে। এখান থেকে আমাদের শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে যে বিশ্বাসঘাতকতা কতটা ক্ষতি করতে পারে।
পলাশীর যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল
পলাশীর যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল এ সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। এই পলাশী যুদ্ধের মাধ্যমে ইংরেজরা বিজয় লাভ করে। তারা এ দেশে প্রায় ২০০ বছর শাসন করেছিল। চলুন, পলাশীর যুদ্ধ কাদের মধ্যে সংঘটিত হয় এ সম্পর্কে নিম্নে উপস্থাপন করা যাক।
ইংরেজরা বাংলাদেশ সহ পুরো ভারতীয় উপমহাদেশের যত অর্থ সম্পদ ছিল, সকল কিছু লুন্ঠন করে তারা তাদের দেশে নিয়ে যায়। এ দেশের মানুষদের শোষিত লাঞ্ছিত হতে ছিল। বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলা এর সাথে ইংরেজদের মধ্যে পলাশী নামক স্থানে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। তা আমরা ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ নামে জানি। যা ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন এই যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল। মূলত ইংরেজ বাহিনীর সাথে নবাব সিরাজউদ্দৌলার বাহিনী যুদ্ধ সংগঠিত হয়। এই যুদ্ধের নবাব পরাজিত হয়। যার কারণে ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজ শাসন শুরু হয়।
এই যুদ্ধে নবাবের প্রধান সেনাপতি মীরজাফর সহ আরো কিছু সৈন্যকে ইংরেজরা অর্থ ও ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে তাদের পক্ষে নিয়ে যায়। যার কারণে যুদ্ধের সময় তারা নবাবের পক্ষে কাজ করেনি, এই জন্য নবাবকে এই যুদ্ধে পরাজয় বরণ করতে হয়। ইতিহাস সাক্ষী রয়ে থাকবে বাংলার মানুষ মির্জাপুর কে মনে রাখবে। যে নিজের ক্ষমতার জন্য দেশকে অন্যের হাতে তুলে দেয়। এখান থেকে আমাদেরকে শিক্ষা নিতে হবে যে নিজের সামান্য লাভের জন্য পুরো দেশ অন্যের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল নবাবের কাছে লোকদের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও উদারতা। তার এই সরলতার সুযোগ নিয়ে ইংরেজরা বিজয় লাভ করেছিল। নিম্নে বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতাঃ পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা। কারণ তিনি কোরআন হাতে শপথ করে নিজ স্বার্থকে হাসিল করার জন্য বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে নবাবের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো মীরজাফরকে বেশি বিশ্বাস করা। নবাব সিরাজউদ্দৌলার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল মীর জাফরকে অন্ধের মত বিশ্বাস করা, যার কারণে তার এই পরাজয় বরণ করতে হয়।
রবার্ট ক্লাইভ চতুরতাঃ পলাশীর যুদ্ধে রবার্ট ক্লাইভ এতটাই চাতুর্য ছিল যে, এই যুদ্ধে তিনি সবচাইতে বেশি লাভবান হয়েছে। রবার্ট ক্লাইভ কোম্পানির পক্ষে কাজ করেছিলেন। তিনি পলাশীর যুদ্ধে এমন কিছু কৌশল অবলম্বন করেছিলেন এবং এ দেশের মানুষকে নবাবের বিরুদ্ধে উস্কানি দিয়ে উৎসাহ দিয়েছিলেন। যা বাস্তবে এমন ভাবে প্রয়োগ করার কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হয়। কেননা নবাব তার এই ষড়যন্ত্রের কলা কৌশল বুঝতে পারে নাই। তাছাড়া নিজেদের লোক যে এভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করবে নবাব এটা বিশ্বাস করে নাই।
ষড়যন্ত্রের পরিবেশঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের জন্য বাংলার সমকালীন পরিবেশ ও দায়ী ছিল। বাংলাদেশের সময় একদিকে কোম্পানি অন্যদিকে। নবাবের নিজ আত্মীয়-স্বজনরা যেভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল, যা ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কেননা তারা পূর্বে থেকেই এই ষড়যন্ত্র করতে ছিল। নবাবের সবচেয়ে কাছের লোকজন ইংরেজদের সাথে পরিকল্পনা করে ষড়যন্ত্র করে। এজন্য নবাবের এই বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব এবং তাৎপর্য অনুধাবন করা উচিত ছিল। কেননা নিজ আত্মীয়-স্বজন যে তাদের ভিতরে ষড়যন্ত্র করছে সেটার দিকে তার খেয়াল রাখা দরকার ছিল।
নবাবের দেশ প্রেমঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাংলার মাটি এবং বাংলার মানুষকে অনেক ভালোবাসেন।
তিনি মানুষকে অনেক বিশ্বাস করতেন এবং সব কিছুতেই ছাড় দিতেন। বাংলার স্বাধীনতার জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। বাংলাকে এত ভালোবেসে ছিলেন যে তার কাছে কোনো ষড়যন্ত্রের কথা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারেনি। নবাবের এই ধরনের অন্ধবিশ্বাস এবং অতিরিক্ত স্বদেশ প্রীতির কারণেই তার এই পরাজয় বরণ করতে হয়। নবাবের এই পরাজয়ের পেছনে পলাশীর যুদ্ধের কারণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
অর্থনৈতিক ও অস্বচ্ছলতাঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসন লাভ করার পরে প্রথম অবস্থায় তার বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। এই কারণে তাকে জগৎ শেঠের মতো বৃত্ত শালীদের নিকট ধারস্থ হতে হয়েছিল। এই অর্থনৈতিক দুর্বলতাকে পতনের জন্য দায়ী করা হয়ে থাকে। কারণ নবাব যদিও জগৎ শেঠের চক্রান্ত বুঝতে পেরেছিলেন কিন্তু তার করার কিছুই ছিল না। তার এই দুর্বলতার কারণেই তাকে পরাজয় বরণ করতে হয়।
নবাবের সামরিক শক্তির মধ্যে ঐক্যের অভাবঃ সিরাজউদ্দৌলার সামরিক বাহিনীর মধ্যে ঐক্যের অভাব ছিল, এজন্য বিশাল সৈন্যবাহিনী থাকা সত্ত্বেও পলাশীর প্রান্তরে তাকে পরাজিত হতে হয়। সৈন্যবাহিনীতে যদি মির মদন ও লাল মোহনলাল এর মত সুদক্ষ সেনাপতি প্রতিফলন না ঘটাতো তাহলে হয়তোবা বাংলার ইতিহাসে আরও এটাকে অপমানজনক যুদ্ধ বলা হত। এই যুদ্ধে মীর মদন ও লালমোহন যে দক্ষতার সাথে যুদ্ধ করেছেন আর বাকি সৈন্যরা যদি সহযোগিতা করতো তাহলে এই যুদ্ধের পরাজয় বরণ করা লাগতো না।
নবাবের সিদ্ধান্তহীনতাঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলার সিদ্ধান্তহীনতা পলাশী যুদ্ধের পরাজয়ের জন্য বেশি দায়ী মনে করা হয়। তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করা থেকে পতন পর্যন্ত প্রতিক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেছিলেন। তিনি সিদ্ধান্তহীনতার জন্য মীর জাফরকে পদচ্যুত করা উচিত ছিল কিন্তু তিনি তাকে পদচ্যুত করে নাই। এছাড়াও যুদ্ধক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রের পরিবেশ বিরাজমান ছিল তা উপলব্ধি করেও যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন নি। এটাও একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তাই এই সকল ভুল সিদ্ধান্তের কারণে নবাবের পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল।
জনসাধারণের নির্লিপ্ততাঃ পলাশীর যুদ্ধ ছিল জনসাধারণের সমর্থন ও সহযোগিতাহীন সেনাবাহিনী ও বেনিয়াদের মধ্যে প্রতিযোগিতার সমতুল্যর মত কারণ। এই যুদ্ধে জনসাধারণ বুঝতে পারেনি যে এটা কি হচ্ছে, তাই পলাশীর পরাজয়ের পরও দীর্ঘকাল বাংলার জনগণ বুঝতে পারেনি। পলাশীর যুদ্ধের সময় যে জনগণ গুলো দাঁড়িয়ে ছিল এবং এই যুদ্ধক্ষেত্র দেখতে ছিল যদি প্রত্যেকটা ব্যক্তি শুধুমাত্র তাদের পায়ের জুতা দিয়ে ঢিল ছুড়তো তাহলেও ইংরেজরা পরাজয় বরণ করত কিন্তু এখানে জনগণ তারা স্তব্ধ কিছুই বলেনি, তারা শুধু দর্শক হিসেবে যুদ্ধ উপভোগ করছেন।
পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব
পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব অত্যন্ত মূল্যবান বিষয়। কেননা এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়ে যায় এবং ইংরেজরা এ দেশে শাসন করে থাকে। তাই এই পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব অনেক রয়েছে। এ পলাশীর যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিকভাবে এ দেশের মানুষ জন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইংরেজরা এ দেশের ধনসম্পদ লুটে নিয়ে তাদের দেশে যাচ্ছিলেন। ইংরেজরা বিপুল প্রভাব বিস্তার শুরু করে, এর ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের সকল ধন সম্পদ ইংরেজদের হাতে চলে যায়।
পলাশী যুদ্ধের পর ইংরেজরা যে ধনসম্পদ আত্মসাৎ করেছিল, সেই ধন সম্পদ দিয়েই ফরাসিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং ফরাসিদেরকে পরাজিত করে। এভাবে কর্ণাটেক এর তৃতীয় যুদ্ধে বঙ্গের সম্পদের বলে ইংরেজরা দাক্ষিণাত্য ফরাসিদের পরাজিত করে। পলাশীর যুদ্ধ বঙ্গ দেশে এবং পরে সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজরা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দেয়। পলাশীর যুদ্ধের পর দেশে মুঘল ও ভারতীয় শিক্ষা সভ্যতার স্থানে ইউরোপীয় সভ্যতা আত্মপ্রকাশ শুরু করে। বাংলা তথা ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিপদের মধ্যে পড়ে যায়।
পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল
পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। তাই অনেকে জানতে চায় যে পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল ও ফলাফল সম্পর্কে। ভারতীয় উপমহাদেশে এই পলাশীর যুদ্ধের এর ফলাফল এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় সবার মনে দুঃখ থেকে যাবে। তাই এটা আমাদের মনে রাখা খুবই দরকার। পলাশীর যুদ্ধ ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।
এটা ভারতের রাজনৈতিক ভাগ্য পরিবর্তনের ইতিহাস অন্যতম। এই যুদ্ধের পরিনাম ছিল সুদূর প্রসারী। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিকরা বলে থাকেন যে, ব্রিটিশরা এই যুদ্ধ সহজভাবে এ দেশকে জয় করেছিল। তাদের শুধুমাত্র চিন্তা এবং বুদ্ধিমত্তার কারণে আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষজন সহজ সরল থাকার কারণে এই সুযোগ তারা কাজে লাগিয়েছিল। তাই এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া দরকার। তবে পলাশীর যুদ্ধের কারণ এই পলাশীর যুদ্ধের ফলাফলের ওপর প্রভাব পড়েছিল।
রাজনৈতিক ফলাফলঃ পলাশীর যুদ্ধের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশ ইংরেজদের হাতে চলে যায়। পলাশীর যুদ্ধের ফলে ইংরেজরা কোম্পানির মর্যাদা লাভ করে। পলাশীর যুদ্ধের পর ইংরেজরা এদেশের নবাবের ক্ষমতা প্রাপ্তি কিংবা বিচ্যুতি তাদের মেজাজ-মর্যের উপর নির্ভর করতে থাকে। এছাড়াও বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিদান মীরজাফর নবাবী লাভ করে কিন্তু ক্ষমতা থাকে রবার্ট ক্লাইভ হাতেই। শুধুমাত্র পুতুল সরকার হিসেবে তাকে ব্যবহার করা হয়। স্বাধীনতা হারানোর পর এ দেশবাসী হারালো তাদের নাগরিক অধিকার এবং তাদের বাক স্বাধীনতা বলতে আর কিছুই রইলো না।
সম্প্রদায়গত ফলাফলঃ পলাশীর যুদ্ধের ফলে ভারতীয় মুসলমানগণ এতদিন প্রচন্ড প্রতাপ ও নিজেদের মর্যাদা সমুন্নত করেছিল। কিন্তু পলাশীর যুদ্ধের পর তাদের আধিপত্য ও প্রাধান্য ইংরেজরা ক্ষমতায় বসায় হিন্দুরা তাদের সমর্থন প্রতিদান স্বরূপ নানা রকম সুযোগ সুবিধা পেলেও মুসলিমরা তেমন একটা সুযোগ সুবিধা পায়নি। এছাড়াও রবার্ট ক্লাইভ তারা হিন্দু মুসলিম এর মাঝে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করতে থাকে।
অর্থনৈতিক ফলাফলঃ ইংরেজরা পলাশী যুদ্ধের পর মীরজাফরকে সিংহাসনে বসান শুধুমাত্র পুতুল সরকার হিসেবে এবং তার সাথে চুক্তি করা হয়েছিল যে এ দেশে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করবে কিন্তু শুল্ক দেবে না। যার কারণে তারা বিনা শুল্ক ব্যবসা শুরু করে এবং এ দেশের অর্থ পাচার করতে থাকে। এছাড়া অর্থনৈতিকভাবে ইংরেজরা শক্তিশালী হয়ে যায়। তাছাড়া মুসলমানদের সাথে তারা খারাপ ব্যবহার করে এবং হিন্দুদেরকে সমর্থন করে, যার কারণে মুসলমানরা খুবই কষ্টে জীবন যাপন করতে থাকে।
পলাশীর যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকদের পরিণতি
পলাশীর যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকদের পরিণতি কি হয়েছিল? এ সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। তাদের এই বিশ্বাসঘাতকতার কারণে এ দেশের মানুষ অশান্তিতে ছিলেন। যার পরিণতিতে সৃষ্টিকর্তা তাদের এই পৃথিবীতেই শাস্তি দিয়েছিলেন। পলাশীর যুদ্ধে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন তারা এই পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় জর্জিত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
মানুষ তাদেরকে ঘৃণার চোখে দেখে, মানুষ তাদেরকে ভালোর চোখে দেখেনি। কেননা তারা ষড়যন্ত্র করেছিল পলাশীর যুদ্ধের সময়। এজন্য পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তাদের এই ষড়যন্ত্র অন্যতম কারণ ছিল। নিম্নে তাদের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো। চলুন, পলাশীর যুদ্ধে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তাদের কি ধরনের পরিণত হয়েছিল সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রত্যেকটা কাজের বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তারা যে ষড়যন্ত্র করেছিল এর পরিণতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পলাশীর যুদ্ধে সবচাইতে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন মীরজাফর। আর মীরযাফর এর শেষ পরিণত হয়েছিল তার নিজ জামাতা মীর কাসেম তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন এবং পরবর্তীতে এই মীরজাফর দুরারোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় ভুগে ভুগে মারা যান। মীরজাফর এমনভাবে মৃত্যুবরণ করেছিল যা তার পাশে কেউ দেখার মত ছিল না।
এরপর সবচাইতে হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটিয়েছিলেন মির জাফরের পুত্র মিরন, যে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করেছিল। এজন্য নবাবের মা এমন অভিশাপ দিয়েছিলেন যার ধরণ সৃষ্টিকর্তা তার উপর সেই অভিশাপ বর্ষিত করেছিল। মীর মিরন যে তাঁবুর ভিতরে ছিলেন সেই তাবুতে বজ্রপাতের মাধ্যমে পুড়ে গিয়ে মারা যায়। এরপর মোহাম্মাদি বেগ যে নবাবের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন তার মৃত্যুকরণ কাহিনী হয়েছিল, তিনি মস্তিষ্ক বিকৃতি হয়ে কূপের ভিতর ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে মারা যায়।
এরপর মীর কাসিম সে ইংরেজদের ভয়ে তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন এবং রাস্তায় পারাপার হতে গিয়ে তিনি দুর্ঘটনায় মারা যান। নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালা ঘসেটি বেগম তার মৃত্যু হয়েছিল নৌকাডুবির মাধ্যমে আর এই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন মীর মিরন। ইয়ার লতিফ নিরুদ্দেশে হারিয়ে গেছে আজ পর্যন্ত তার কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। ধারনা করা হয় তাকে হত্যা করা হয়েছে। মহারাজ নন্দকুমার অর্থ তহবিল কেলেঙ্কারির কারণে তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মারা হয়।
বিষাক্ত সাপের কামড় খেয়ে মারা যান রানা শাহ। রায় দুর্লভ যে জেলখানার ভিতরে কষ্ট ভোগ করতে করতে ভগ্ন স্বাস্থ্য নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অমিত চাঁদ যিনি রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন পাগলের মত এবং রাস্তায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ওয়াটসন দুরারোগ্যে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। স্ক্রাপটনের মৃত্যু হয় যখন তিনি জাহাজ আসতে ছিলেন কলকাতায় সেক্ষেত্রে জাহাজটি ডুবে মারা যান।
এই যুদ্ধের সবচাইতে মূল খলনায়ক রবার্ট ক্লাইভ যিনি এদেশ থেকে প্রচুর সম্পদ নিয়ে তার নিজ দেশে দিয়েছিলেন কিন্তু তার নিজ দেশের লোকজন তাকে অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে সংসদে তাকে দুর্নীতি হিসেবে আখ্যায়িত করলে, সে এই অপমান সহ্য করতে না পেরে বাথরুমে ঢুকে খুর দিয়ে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করে মারা যান। এজন্য বলা যায় যে এভাবেই পলাশীর যুদ্ধের বিশ্বাসঘাতকদের করুন মৃত্যু হয়েছিল। যা স্বাভাবিক মৃত্যু নয় তাই বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিফলন এই পৃথিবীতেই সৃষ্টিকর্তা দিয়ে থাকেন।
লেখক এর পরিচয়,
মোঃ মাহমুদুল ইসলাম
বি,এ অনার্স, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ,
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
এম, এ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
শেষ কথাঃ পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল ও ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
পরিশেষে বলা যায় যে পলাশীর যুদ্ধে নবাবের কিছু ভুল থাকার কারণে হয়তো তিনি পরাজয় বরণ করেছিলেন কিন্তু যারা তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তাদের শেষ পরিণতি বেশি ভালো হয়নি। এজন্য পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কি ছিল? সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে এবং এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তাই এ বিষয়ে আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি আপনার উপকারে আসবে। পোস্টটি ভাল লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url