অনলাইনে ব্যবসার ১০টি বড় ধরনের অসুবিধা ও সুবিধা গুলো জানুন

অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক অসুবিধা হয়ে থাকে। তাই অনলাইন ব্যবসার অসুবিধা গুলো কি কি? সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে আপনি ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন। চলুন, অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে যে অসুবিধা গুলো হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অনেকেই অনলাইনে ব্যবসা করতে চায় কিন্তু অনলাইনে ব্যবসা করতে যে অসুবিধা হয়, সে সম্পর্কে হয়তো জানেনা। এ বিষয়ে জানা খুবই প্রয়োজন। তাই অনলাইন ব্যবসার অসুবিধা গুলো কি কি? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃঅনলাইন ব্যবসার অসুবিধা গুলো কি কি ও সমাধানের উপায় জানুন

অনলাইন ব্যবসার অসুবিধা গুলো কি কি

বর্তমানে অনেকেই অনলাইনে ব্যবসা করছে কিন্তু অনলাইন ব্যবসার অসুবিধা গুলো কি কি? সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন। তাই আপনার ব্যবসার লাভ করতে চাইলে অসুবিধা গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন, অনলাইনের ব্যবসায় যে অসুবিধা গুলো হয়ে থাকে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

প্রতিযোগিতা বেশিঃ বর্তমানে অনলাইনে যে ব্যবসা করা হচ্ছে সেক্ষেত্রে প্রচুর প্রতিযোগিতা রয়েছে। এত বেশি প্রতিযোগিতার কারণে বিক্রেতারা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। একই জিনিস একজন বেশি টাকায় বিক্রি করছে আবার আরেকজন কম টাকায় বিক্রি করছে। তাছাড়া বিক্রেতারা ক্রেতাদের আকর্ষণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং ক্যাম্পেইন খরচ বেশি হয়ে যায়। এজন্য পণ্য বিক্রি করে লাভ হয় না। তাই এই ধরনের প্রতিযোগিতা করলে অনলাইন ব্যবসা লাভ হবে না বরং ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই এই ধরনের বিজ্ঞাপন বা মার্কেটিং না করে আপনি পণ্যের গুনাগুন ভালো করুন।

বিশ্বাসের অভাবঃ ব্যবসার প্রথম শর্তই হলো বিশ্বাস কিন্তু বর্তমানে কিছু অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের বিশ্বাস হারিয়ে যাচ্ছে। কারণ অনলাইনে ক্রেতারা যে পণ্য অর্ডার করে মূলত সেই পণ্যটি গুণগতমান ভালো নয়। যার কারণে অনলাইন অনলাইনে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতারা আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া বিক্রেতা ক্রেতার সুবিধার জন্য ডেলিভারি চার্জ ফ্রি করে দেয় কিন্তু এতে করে অতিরিক্ত খরচ হয়ে যায়। তাছাড়া ডেলিভারি চার্জ ফ্রি করে দিয়ে অনেক বিক্রেতা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

ডেলিভারি চার্জঃ যারা অনলাইনে পণ্য কিনে থাকে তাদের ক্ষেত্রে ডেলিভারি চার্জ সবচাইতে অসুবিধা হয়ে থাকে। কারণ ছোট একটি পণ্য সে অর্ডার করবে কিন্তু দেখা যাচ্ছে পণ্যের মূল্যের চাইতে ডেলিভারি চার্জ বেশি হয়ে থাকে। যার কারণে ক্রেতারা কিনতে চায় না, এক্ষেত্রে বিক্রেতাও অসুবিধায় পড়ে যান। যার কারণে ডেলিভারি চার্জ তাদেরকে কমাতে হয়, এছাড়া অনেক সময় ফ্রি করে দেওয়া লাগে। এতে করে বিক্রেতার বেশি খরচ হয়ে যায়। তাই অনলাইনে ব্যবসায় বিক্রেতার এই ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে লাভ হয় না।

সার্ভার বা ইন্টারনেট সমস্যাঃ ইন্টারনেট সমস্যা অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কোন ক্রেতা আপনার পণ্যটি পছন্দ করলো এবং ক্রয় করার জন্য অনলাইনে সার্চ করে কিন্তু যদি কোন সার্ভার অথবা কারিগরি ত্রুটির কারণে ওয়েবসাইটে ঢুকতে না পারে, সেই ক্ষেত্রে ক্রেতারা পণ্য কিনবে না। আবার অনেক সময় অনলাইন পেমেন্ট এর ক্ষেত্রেও অসুবিধা হয়ে থাকে। তাই আপনি ভালো মানের ওয়েবসাইট তৈরি করবেন, যেখানে দ্রুত লোডিং হবে এবং সার্ভারের যেন সমস্যা না হয়।

প্রযুক্তি নির্ভরশীলঃ যেহেতু অনলাইন ব্যবসাটা পুরোটাই প্রযুক্তি নির্ভর করে। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সংযোগ, সার্ভার, ডাটা কানেক্ট এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি উপকরণ আছে। যা শক্তিশালী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। যদি কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে। মনে করেন আপনার ওয়েবসাইট যদি ডাউন হয়ে যায় বা সার্ভারের সমস্যা থাকে সেই ক্ষেত্রে ব্যবসার বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই ইন্টারনেট কানেকশন উন্নতমানের রাখবেন এবং ওয়েবসাইট যেন ডাউন না হয়ে যায় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

নিরাপত্তার সমস্যাঃ আপনি যদি অনলাইনে ব্যবসা করতে চান সেই ক্ষেত্রে প্রথমে ক্রেতার নিরাপত্তা দিতে হবে। কেননা আপনার পণ্য কিনতে হলে তাকে অনলাইনে পেমেন্ট করতে হবে, সে ক্ষেত্রে আপনাকে নিরাপত্তা দিতে হবে। কেননা হ্যাকাররা এই সময়ে তার ফান্ড চুরি করে নিতে পারে। যার কারণে ক্রেতারা যদি লেনদেনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা না পায়, তাহলে আপনার পণ্য কিনতে আগ্রহী হবে না। তাই ক্রেতাদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিরাপত্তা দিতে হবে, তাহলে আপনার ব্যবসার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
ক্রেতার ভয়ঃ বর্তমানে যারা অনলাইনে পণ্য ক্রয় করে এক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক সময় ভয় পায় যে, সঠিকভাবে তার পণ্যটা পাবে কিনা বা গুণগতমান ভালো না হলে দেখা যায় পণ্য কিনতে করে তারা অনেকটাই ভয় পায়। এজন্য তারা অনলাইনে অর্ডার করতে চায়না, সরাসরি দোকানে গিয়ে পণ্য এর গুণগত মান দেখে তারা ক্রয় করে থাকে। তাই আপনি যদি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার প্রথমত পণ্যের মান ভালো হতে হবে। যেন ক্রেতা ক্রয় করতে ভয় না পায়, তাছাড়া পণ্যের সঠিক দাম নির্ধারণ করতে হবে।

সঠিক পণ্য না দেওয়াঃ যেহেতু অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য কিনলে সেটা স্পর্শ করে দেখা যায় না, ছবির মাধ্যমে দেখেই পছন্দ করে অর্ডার করতে হয়। সে ক্ষেত্রে অনেক বিক্রেতা দেখা যায় ছবিতে এক রকমের দেখায়, বাস্তবতায় কম দামের পণ্য দিয়ে থাকে। যার কারণে ক্রেতারা বিশ্বাস করতে পারে না। যখন সঠিক পণ্য না মিলে যায় সে ক্ষেত্রে সরাসরি দোকানে গিয়ে কিনে থাকে। তাই যারা অনলাইনে ব্যবসা করতে চান, অবশ্যই আপনি যে পণ্যটি বিজ্ঞাপন দিয়েছেন ওই পণ্যই দিতে হবে। তাহলে ক্রেতারা সঠিক পণ্যটা পাবে এতে অনলাইনে কেনার প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে।

সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যাঃ অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো পণ্য সরবরাহ করা। দেখা যায় কুরিয়ার সার্ভিসে কোন পণ্য পাঠাতে গেলে রাস্তাঘাটে গাড়ির সমস্যার কারণে দেরি হয়ে যায় অথবা প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগের কারণেও দেরি হতে পারে। যার কারণে সঠিক সময় যখন পণ্যটা ক্রেতার কাছে না পৌঁছায়, সে ক্ষেত্রে ক্রেতা অনেক সময় অর্ডারটা বাতিল করে দেয়। এতে বিক্রেতার ক্ষতি হয়ে যায়, তাই সরবরাহের ক্ষেত্রে সঠিক সময় দেওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রয়োজনে একদিন সময় বেশি নিবেন, তাহলে সঠিক সময়ে যদি ক্রেতা তার পণ্যটি হাতে পায় সে ক্ষেত্রে পজিটিভ রিভিউ দিবে।

ক্রেতার অর্ডার বাতিলঃ অনলাইনে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সবচাইতে অসুবিধা হলো পণ্য ফেরত নেওয়া। কেননা ক্রেতারা সাধারণত অনেক সময় অসুবিধা ছাড়াও অর্ডার বাতিল করে পণ্যটি ফেরত দেয়, এতে বিক্রেতার অনেক সমস্যা হয়। কেননা এই সকল পণ্য গুলো বিক্রি করা কঠিন হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে, কোন ধরনের ক্রেতার কাছে আপনি পণ্য বিক্রি করতে পারবেন ও কোন ধরনের ক্রেতার কাছে বিক্রি করা যাবে না। এই সমস্যা গুলো শনাক্ত করতে হবে। তাছাড়া পণ্য যখন ফেরত নেবেন সেই পণ্য পুনরায় বিক্রি করা যাবে না। এতে পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে।

অনলাইন ব্যবসার সুবিধা সমূহ

বর্তমানে অনেক ব্যবসায়ী অনলাইনে ব্যবসা করে থাকে, তাই অনলাইন ব্যবসার সুবিধা সমূহ জানতে হবে। তাহলে আপনি ব্যবসায় সফল করতে পারবেন। চলুন, অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করলে যে সকল সুবিধা হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
খরচ কম হয়ঃ আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে কোন পণ্য কিনে থাকেন, সেই ক্ষেত্রে অনেক টাকা খরচ কম হবে। কেননা সরাসরি আপনাকে যাওয়া লাগছে না, এক্ষেত্রে গাড়ি ভাড়া লাগবে না আবার বিক্রেতার সুবিধা হল তার বড় ধরনের দোকানের প্রয়োজন নেই, দোকান ভাড়া দেওয়া, সিকিউরিটি কর্মচারী রাখা, এছাড়াও দোকানের ডেকোরেশন ইত্যাদি টাকা খরচ হয় না। যার কারণে অনলাইনের মাধ্যমে বর্তমানে অনেকেই ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়াও কিছু কৌশলী হলে আরও খরচ কম করতে পারবেন।

দোকানের প্রয়োজন নেইঃ আপনি যদি কোন শহরে দোকান দেন সে ক্ষেত্রে অনেক টাকা খরচ হবে। এছাড়াও দোকানের অনেক ডেকোরেশন করতে হবে, কর্মচারী রাখতে হবে কিন্তু অনলাইনে যদি ব্যবসা করেন সেক্ষেত্রে আপনার দোকান দেওয়ার প্রয়োজন নাই। শুধুমাত্র আপনার একটা ওয়েবসাইট থাকতে হবে, সেই ওয়েবসাইটে পণ্যের ছবি গুলো সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে হবে। আপনি ফেসবুকের মাধ্যমে পণ্যের গুনাগুন উপস্থাপন করে পণ্য বিক্রি করতে পারেন। লোকজন ফেসবুকের বিজ্ঞাপন দেখে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্য পছন্দ করে অর্ডার করবে।

বেশি ক্রেতার কাছে পৌঁছায়ঃ আপনি যখন অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করবেন, সেই ক্ষেত্রে ক্রেতারা বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অর্ডার করবে। সে ক্ষেত্রে যে সকল প্লাটফর্ম থেকে অর্ডার করবে বিশেষ করে ফেসবুকের মাধ্যমে বেশি অর্ডার করে থাকে। তাই আপনি ফেসবুক ব্যবহার করে পণ্য গুলো বহু লোকের মাঝে প্রচার করতে পারেন। এতে শারীরিকভাবে উপস্থিত হয়ে দোকানের চাইতে বেশি ক্রেতার কাছে পণ্যের প্রচারণা করতে পারবেন। যার কারণে এই ভাবে প্রচারণা করলে আপনার বিক্রিও বেশি হবে।
সব সময় খোলা থাকবেঃ অনলাইন এর মাধ্যমে যদি আপনি ব্যবসা করতে চান, সে ক্ষেত্রে দিন রাত্রি যেকোনো সময় অনলাইনে আপনার ক্রেতারা অর্ডার করতে থাকবে অথচ একটা শারীরিকভাবে উপস্থিতির দোকান কখনোই ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা যায় না বা রাখলেও অনেক কর্মচারী বা অনেক খরচের বিষয় রয়েছে অথচ অনলাইনের মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্টের অর্ডার করবে। এছাড়া আরো একটি সুবিধা হল তারা তার সুবিধা মতো সময়ে পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার করতে পারে, এতে আপনার ব্যবসার সুবিধা হবে।

গ্রাহকদের সময় কম লাগেঃ অনলাইনে অর্ডার করতে গ্রাহকের সরাসরি যেতে হচ্ছে না। এতে সময় নষ্ট হবে না, এজন্য তারা ঘরে বসে অর্ডার করতে পারবে। তার পছন্দমত পণ্য কিনতে পারবে। তার যাতায়াত খরচ বেঁচে যাবে, অনেক সময় বেঁচে যাবে, দোকানে অনেক ভিড় থাকে ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে। যার কারণে আপনার এই সময়কে সাশ্রয় করার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে প্রোডাক্ট কিনতে পারেন। তাই অনলাইনে কেনাকাটা আরো সুবিধা রয়েছে। কেননা বিক্রেতারা তাদের পণ্য অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্রি করতে পারে।

রি টার্গেট গ্রাহকঃ আপনার পণ্যটি যখন কোন ক্রেতা একবার ক্রয় করল, সেই ক্রেতাকে আবার আপনি বিভিন্ন ধরনের পণ্য টার্গেট করে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। এতে যদি পূর্বের পণ্যটা ভালো হয় তাহলে অবশ্যই আবার নতুন করে পণ্য কিনবে। তাই আপনি বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে রি টার্গেট করতে পারেন। যার কারণে সে যেন বুঝতে পারে যে আমাকে নতুন করে আবার অফার করছে। যার কারণে গ্রাহক আপনার এই অফারটা গ্রহণ করতে পারে অথবা সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারে।

পণ্যের রিভিউঃ অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পণ্যের রিভিউ দেওয়া। আপনার কোন পণ্য যদি কোন কাস্টমার কিনে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাকে রিভিউ দিতে বলবেন। তার রিভিউ আর একজন গ্রাহক দেখে আপনার থেকে পণ্য কিনবে। এতে আপনার পণ্যের ওপরে বিশ্বাস্ত তৈরি হবে। এই রিভিউ এর কারণে সেবার মান অনেক বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসার উন্নতি হবে। আপনার ব্যবসাকে উন্নত করতে হলে অবশ্যই রিভিউ এর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

অনলাইন ব্যবসার ধারণা

ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি যে, অনলাইন ব্যবসার অসুবিধা গুলো কি কি? এখন জানবো অনলাইনে ব্যবসার ধারণা সম্পর্কে। কেননা এ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি সফলভাবে ব্যবসা করতে পারবেন। চলুন, কিভাবে অনলাইন ব্যবসার সম্পর্কে জানবেন সে সম্পর্কে নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

অবশ্যই আপনাকে অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে কার্যকারী পদক্ষেপ নিতে হবে এবং একটি ধারণা নির্ধারণ করতে হবে। একটি পরিকল্পনা করতে হবে, তাহলে আপনার ব্যবসা উন্নত লাভ করতে পারবে। যে পণ্যটি নিয়ে আপনি ব্যবসা করবেন, সেই পণ্যটি বাজারে চাহিদা কেমন বা লোকজন কিভাবে এটা পছন্দ করে থাকে ইত্যাদিকে কাজে লাগাতে হবে। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী আপনাকে পণ্য এর বিজ্ঞাপন দিতে হবে অথবা মার্কেটিং করতে হবে। এছাড়াও আপনার যদি কোন পণ্যের অভিজ্ঞতা থাকে বা জ্ঞান থাকে, সেই পণ্য নিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন।

আপনি যদি পণ্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আপনার পণ্য সবচাইতে বেশি বিক্রি হবে। আপনাকে প্রথমে ধারণা নিতে হবে যে বর্তমানে পণ্যের বাজার কেমন প্রতিযোগিতা, তাছাড়া বাজারে কেমন ধরনের পণ্যের চাহিদা আছে, অনলাইনে কোন গুলো পণ্যের চাহিদা বেশি ও মানুষ জন কোন পণ্য গুলো অর্ডার করে থাকে। পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতারা কি ধরনের প্রশ্ন করে, সেই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দেবেন, যেন প্রশ্নের উত্তর কাস্টমাররা পছন্দ করে থাকে অথবা তাদের কি ধরনের অসুবিধা হয়, সে ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে হবে। এই ধরনের ধারণাগুলো আপনাকে নিতে হবে।

যেহেতু আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন, সেই ক্ষেত্রে আপনার ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনি কিভাবে পণ্য বিক্রি করবেন অথবা লেনদেন করবেন। যেহেতু এখানে কোন শোরুম থাকবে না, সে ক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। ইন্টারনেট কানেকশন ভালো রাখতে হবে, এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার আপনি করতে পারেন। এছাড়াও আপনি ই-কমার্স ব্যবসা, পণ্য বিক্রয় করা, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি কোর্স বিক্রি করা অথবা বিভিন্ন বিষয়ে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন।

যেহেতু অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে হলে আপনার দোকান লাগবে না, সে ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক এর ক্ষেত্রে তেমন কোন মূলধন প্রয়োজন হয় না, কর্মচারী লাগেনা, বিভিন্ন ধরনের খরচ রয়েছে, যেটা আপনার প্রয়োজন হবে না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে মূলধন কম লাগবে, আপনি ইচ্ছা করলে অন্য কারো পণ্য বিক্রি করে দিতে পারেন যেমন আপনি একটি নিজস্ব পেজ ফেসবুক পেজ খুলে সেখানে সুন্দর মতে মার্কেটিং করে পণ্য বিক্রি করে, সেখান থেকে লভ্যাংশ নিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই বিশ্বস্ততা হতে হবে পণ্যের কোয়ালিটি ভালো থাকতে হবে।

অনলাইন ব্যবসার নীতিমালা

অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রতারিত হতে হয়। তাই অনলাইন ব্যবসার নীতিমালা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই সরকারি পদক্ষেপ নিলে সবচেয়ে ভালো হয়। চলুন, কিভাবে নীতিমালা প্রয়োগ করা যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নৈতিক দায়িত্ব থাকতে হবে এবং কিছু নিয়ম কানুন মানতে হবে। সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই পণ্যের গুণ গতমান ভালো থাকতে হবে, সঠিক সময়ে সরবরাহ করবেন এবং পণ্যের দাম সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যেন কম বেশি না হয়। তাছাড়া গ্রাহক যে পেমেন্ট করবে সে ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকতে হবে, নিরাপত্তা থাকতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক সময় টাকা খরচ বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে আপনি ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও আপনার পণ্য বিক্রয় করতে পারেন।
আপনি যখন অনলাইনে ব্যবসা করবেন সেই ক্ষেত্রে গ্রাহক যদি অভিযোগ দিয়ে থাকে, সাথে সাথে আপনাকে যুক্তির সাথে তাকে জবাব দিতে হবে। যেন সে সন্তুষ্টি থাকে, যদি সন্তুষ্ট না হয় তাহলে আপনার ব্যবসায় ক্ষতি হবে। এক্ষেত্রে আপনার নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং এই নীতিমালা আপনাকে পালন করতেই হবে। এছাড়াও গ্রাহক যদি পণ্য পছন্দ না করে থাকে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ফেরত নিতে হবে। গ্রাহকের সন্তুষ্ট প্রকাশ করতে হবে, যেন আপনার খারাপ রিভিউ না দেয় তাহলে কিন্তু আরেকজন পণ্যটি কিনবে না।

অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা হলো অবশ্যই ব্যবসার ধারাবাহিকতা মেনে চলতে হবে। হঠাৎ করে ব্যবসা করলেন আবার বাতিল করে দিলেন, এক্ষেত্রে আপনার গ্রাহকের মনে বিশ্বাস হারিয়ে যাবে। এছাড়াও আইনগত এবং নৈতিক দায়িত্ব সম্পর্কে আপনার জ্ঞান থাকতে হবে। যেন আপনার পণ্যটি নিয়ে ক্রেতারা প্রতারণা বা জালিয়াতির সম্ভাবনা না থাকে অথবা তারা মিথ্যা বা কোন কিছু আপনার বিরুদ্ধে প্রয়োগ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গ্রাহককে আকর্ষণ করার জন্য অনেকে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে এই ধরনের প্রতারণাগুলো কাজ করা যাবে না।

অনলাইন ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স

বর্তমানে অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্স করতে হবে। তাই অনলাইন ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি যে অনলাইনে ব্যবসা করছেন, তার একটি বিশ্বাস্ততা সৃষ্টি হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক
ছবি
ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আপনার ব্যবসা করা ঠিক হবে না, কেননা যদি কোন আইনের সমস্যায় পরে যান সে ক্ষেত্রে আপনি অসুবিধায় পড়তে পারেন। যদি আপনি প্রফেশনাল ভাবে ব্যবসা করতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। আপনাকে অবশ্যই লাইসেন্স, ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট এবং প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য অবশ্যই দিতে হবে। আপনি যেকোনো ধরনের ব্যবসায়ী করেন না কেন আপনার অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। এতে আপনার ব্যবসার সুবিধা হবে এছাড়া আপনি যখন ব্যবসা করবেন সে ক্ষেত্রে কর লাইসেন্স করতে হবে।

এছাড়াও অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য বা ই-কমার্স এর ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স করে থাকে। তাই আপনার এই বিষয়ে জানা খুবই প্রয়োজন। তাই আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে কোন পণ্য বিক্রি করতে চান, এই ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স করা লাগবে।অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের সাথে ট্রেড লাইসেন্সের ছবিও দিতে পারেন, এতে ক্রেতারা বিশ্বাস পাবে এবং আপনার পণ্য কিনবে।

উপসংহারঃ অনলাইন ব্যবসার অসুবিধা গুলো কি কি ও সমাধানের উপায় জানুন

পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে চান, সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতে পারে। তাই আগে থেকেই যদি আপনি সচেতন হন এবং সেই অসুবিধা গুলোর সমাধান দিতে পারেন। তাহলে আপনার ব্যবসা অনেক উন্নতি লাভ করবে এবং আপনার পণ্যগুলো সহজভাবে বিক্রি করতে পারবেন। তাই অনলাইন ব্যবসার অসুবিধা গুলো কি কি? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে সমাধান দেওয়া হয়েছে, আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url