মুখের ভিতর ঘা হলে করণীয় কি ও এর ওষুধ সম্পর্কে জানুন
যাদের মুখের ঘা হয়েছে তারা অত্যন্ত কষ্টে আছেন, তাই মুখের ভিতর ঘা হলে করণীয় কি? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, মুখের ভিতরে এই ধরনের ঘা হলে কিভাবে দ্রুত সেরে তুলবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয়ে থাকে, তাই চেষ্টা করবেন ভিটামিন জাতীয় খাবার গুলো খাওয়ার। তাহলে আপনার মুখের ঘা আস্তে আস্তে সেরে যাবে। তাই মুখের ভিতর ঘা হলে করণীয় কি? এ সম্পর্কে জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
পোস্টসূচিপত্রঃমুখের ভিতর ঘা হলে করণীয় কি ও এর ওষুধ সম্পর্কে জানুন
মুখের ভিতর ঘা হলে করণীয় কি
অনেকের ঘন ঘন মুখে ঘা হয়ে থাকে, তাই মুখের ভিতর ঘা হলে করণীয় কি? এ সম্পর্কে আপনার জানা থাকলে মুখের ঘা সরানো সহজ হবে। চলুন, কিভাবে মুখের ঘা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
এই ঘা এক ধরনের আলসার নামে পরিচিত, এই ঘা ছোট ছোট হয়ে থাকে বা ক্ষত হয়। অনেকের ঠোটের উপর অথবা গালের ভিতর, ঠোঁটের কোণে, জিহবার উপর বা নিচে ঘা হয়ে থাকে। সাধারণত ভিটামিন বি-১২, ভিটামিন সি, জিংক, ফলেট ইত্যাদি ধরনের ভিটামিনের অভাবের কারণে সাধারণত এই ঘা হয়ে থাকে। তাছাড়া ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণেও বা শরীরে হরমোন জনিত সমস্যা হলে এই ধরনের আলসার গুলো দেখা যায়।
এছাড়াও আরো কিছু কারণে এই ঘা হতে পারে; তা হলো অতিরিক্ত মসলা জাতীয় বা ঝাল যুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে হতে পারে। এজন্য আপনি এই ধরনের মসলা জাতীয় খাবার গুলো পরিহার করবেন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। তাছাড়া খাদ্য হিসেবে আপনি ভিটামিন এ, সি, ই এই ধরনের খাবারগুলো খাবেন।
এছাড়াও যেখানে ঘা হয়েছে সেখানে স্পর্শ করবেন না, এতে আরো ইনফেকশন হবে। এছাড়া সবসময় পরিষ্কার থাকবে সকালে বা রাত্রিতে অবশ্যই ব্রাশ করতে হবে এবং ব্রাশ অবশ্যই নরম হতে হবে।
মুখ ও দাঁতের সঠিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং যত্ন নেওয়া লাগবে, চেষ্টা করবেন হালকা গরম পানির মধ্যে একটু লবণ দিয়ে কুলকুচি করার। এছাড়াও হাইড্রোজেন পার ড্রাগ অক্সাইড যুক্ত পানি মিশিয়ে কুলি করতে পারেন। এছাড়াও এক ধরনের জেল পাওয়া যায় সেটাও ব্যবহার করতে পারবেন।
যষ্টি মধুঃ এটা এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আপনার এই ধরনের ঘা দূর করতে ভালো উপকার করে থাকে। ১ চামচ পরিমাণ যষ্টিমধু নিয়ে এক কাপ পরিমাণ পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন, এরপরে এই পানি দিয়ে কুলকুচি করবেন, দেখবেন ভালো উপকার পাবেন।
অ্যালোভেরা জেলঃ এলোভেরা জেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক উপাদান। যার মধ্যে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ফাংগাল, এন্টিভাইরাস, অ্যান্টিভাইরাল উপাদান থাকার কারণে আপনার এই ধরনের ঘা সারাতে ভালো কাজ করবে। তাই এটা আপনি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
নারিকেলের দুধঃ এটা এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আপনার এই ধরনের ঘা দূর করতে সাহায্য করবে। এজন্য আপনি ১ চামচ পরিমাণ নারকেলের দুধ নিবেন, এর সাথে মধু মেশাতে পারেন। এরপরে এই মিশ্রণটি আপনার যেখানে ঘা হয়েছে, সেখানে দিনে তিন চারবার লাগাতে পারবেন। মধু যদি না থাকে তাহলে শুধুমাত্র নারকেলের দুধ দিয়েও ক্ষতস্থানে মালিশ করলে আপনার ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
তুলসী পাতাঃ তুলসী পাতাকে ঔষধ বলা হয়ে থাকে, এজন্য আপনি তুলসী পাতার রস বের করে আপনার ঘায়ের আক্রান্ত স্থানে অল্প পরিমাণ করে লাগিয়ে দেবেন, দেখবেন অনেকটাই শুকিয়ে যাবে এবং কোন ইনফেকশন হবে না।
এলাচঃ এলাচ অত্যন্ত একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আপনার এই ধরনের ঘা সেরে উঠতে উপকার করে থাকে। এজন্য এর গুড়া নিয়ে সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে আপনার যেখানে ঘা হয়েছে সেখানে লাগিয়ে দিবেন আশা করা যায় অনেক উপকার পাবেন।
মধুঃ মধু এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আপনার বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ বা ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে এন্টি মাইক্রোবিয়াল থাকে, যা আপনার বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণকে প্রতিহত করতে পারে। তাই পরিমাণ মতো নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিবেন আশা করা যায় ক্ষতস্থান অতি দ্রুত সেরে যাবে এবং জ্বালাপোড়া কমে যাবে।
টি ব্যাগঃ এটা আপনার আক্রান্ত স্থানের ব্যথা জ্বালাপোড়া এর ক্ষেত্রে ভালো কাজ করবে। এজন্য একটি টি ব্যাগ ঠান্ডা পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপরে সেই পানিটুকু যেখানে আপনারা ঘা হয়েছে সেখানে লাগিয়ে দিবেন, দেখবেন তাড়াতাড়ি ব্যথা এবং ক্ষতস্থান শুকিয়ে যাবে।
লবণ পানিঃ এটা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যা আপনার এই ধরনের ঘা এবং ব্যথা দূর করতে সাহায্য করবে। এজন্য হালকা গরম পানির মধ্যে অল্প পরিমাণ লবন দিবেন এরপরে কুলি করবেন। এতে আপনার এই ধরনের ঘা দ্রুত শুকিয়ে যাবে এবং ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
গ্লিসারিন ও ফিটকারিঃ এই দুটি উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই আপনি অল্প পরিমাণ এই দুটি উপাদান নিয়ে মিশ্রণ করবেন। এরপর আপনার আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিবেন, দিনে কয়েকবার ব্যবহার করলে আশা করা যায় দুই এক সপ্তাহের মধ্যে এই ধরনের ঘা দূর হয়ে যাবে।
হলুদঃ হলুদকে বলা হয় প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক যা আপনার বিভিন্ন ধরনের ক্ষত শুকাতে দ্রুত কাজ করে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াকে দূর করতে সাহায্য করে। তাই আপনার যদি ঘা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে মধু এবং হলুদের গোড়া মিশিয়ে লাগিয়ে দেবেন, দেখবেন ভালো কাজ করবে।
টমেটোঃ আপনি যখন খাবার খাবেন তখন টমেটোর সালাদ করে খেতে পারেন, এতে আপনার এই ধরনের ঘা দূর হয়ে যাবে। কেননা এর ভিতরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন থাকে যা আপনার এটা কোন ঘা দূর করতে সাহায্য করবে।
ধনেপাতাঃ আমরা সাধারণত ধনেপাতা বিভিন্ন তরকারির সাথে খেতে পছন্দ করে থাকি। তাই আপনি এটা পানিতে ফুটিয়ে যদি কুলকুচি করতে পারেন। এতে আপনার প্রদাহ বা ব্যথা দূর হয়ে যাবে এবং ঘা শুকাতে কাজ করবে। তাই দিনে কয়েক বার ব্যবহার করতে পারেন।
ঘিঃ অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা খাবারের সাথে ঘি খেতে পারেন এবং রাতে ঘুমানোর সময় আক্রান্ত স্থানে হালকা লাগিয়ে দিবেন এই ধরনের ঘা দ্রুত সেরে যাবে।
উপরোক্ত এই প্রাকৃতিক উপাদান এবং কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি আপনি অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ে মুখের পরিচর্যা করার জন্য একজন চিকিৎসককে দেখাবেন এবং প্রতিদিন সকালে ও রাত্রিতে ব্রাশ করবেন। এছাড়া ডায়াবেটিস ও কিডনির সমস্যা যদি থাকে তাহলে সেটার চিকিৎসা নেওয়া লাগবে।
তাছাড়া আপনার খাদ্যের পরিবর্তন করতে হবে সেই সকল খাবারগুলি খেতে হবে যার মধ্যে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অর্থাৎ ভিটামিন এ, সি, ই এই ধরনের খাবার গুলো খাওয়া লাগবে। যেমন রঙিন সবুজ শাকসবজি, রঙ্গিন ফল। এছাড়া ভিটামিন-১২, আয়রন, ফলিক এসিড এ ধরনের খাবারগুলো খেতে পারেন। এরপর শাক, কাঁচকলা, টক দই খাওয়া যেতে পারে।
লেবু, আনারস, কমলা, টমেটো এসিডিটি যে খাদ্যগুলো হয়ে থাকে সেগুলো না খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে কলা, পেয়ারা, আম খাওয়া যেতে পারে।
যে খাবার গুলো অত্যন্ত শক্ত সেগুলো খাবেন না, এতে মুখের ক্ষতস্থানগুলো আরো বৃদ্ধি পাবে। হালকা গরম পানি, লবণ এবং বেকিং সোডা দিয়ে কুলি করতে পারেন।
তাছাড়া কফি, কোমল পানীয় বা ড্রিংকস জাতীয় খাবার গুলো পরিহার করতে হবে। এতে আপনার আলসারের সম্ভাবনা বেশি। এছাড়াও নেশা জাতীয়, আলকোহল জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। মুখের আলসার আরও বৃদ্ধি পাবে এবং টিসুগুলো শুকিয়ে মারাও যেতে পারে, এতে নিরাময় করা কঠিন হয়ে যাবে।
মুখের ভিতর ঘা হওয়ার কারণ
অনেকের বিভিন্ন কারণে মুখে ঘা হয়ে থাকে, তাই মুখের ভিতর ঘা হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি সচেতন হতে পারবেন। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
এই ধরনের ঘা হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকে আবার অনেকের এই ঘা এর সাথে ব্যথাও করতে পারে। অনেকের ঠোঁটে, জিহবা, গালে, দাঁতের মাড়িতে, তালুতে বিভিন্ন জায়গায় ঘা হয়ে থাকে। এগুলো হওয়ার কারণে সাধারণত দাঁত অনেকের ভেঙ্গে যায়, নড়ে যায়। এছাড়াও হারমোনাল পরিবর্তন, মানসিক চাপের কারণে হয়ে থাকে আবার অনেকের একাই সেরে যায়।
আবার কোন কোন সময় এমন ব্যথা হয়ে থাকে যা আপনার চিকিৎসা ছাড়া সেরে ওঠেনা। অধিকাংশ সময় এই ঘা গুলো ব্যথা করে বিশেষ করে খাওয়ার সময় বা কথা বলার সময় পানি খাওয়ার সময়। এছাড়া অনেকের আলসারও হয়ে যায় এতে করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই ধরনের আলসার গুলো সাধারণত ওরাল, লাইকেন লিউকোপ্লাকিয়া, ওরালথ্রাস এ ধরনের সমস্যাগুলো দেখা যায় আবার অনেকের ক্যান্সারও হয়ে যায়। এ ধরনের ঘা এর জন্য বিভিন্ন কারণ থাকে চলুন সেই কারণ গুলো জেনে নেওয়া যাক।
যারা দাঁতের চিকিৎসা নিয়ে থাকেন দেখা যায় এই সময় আঘাত লাগার কারণে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
অনেকের গালে বা জিহবায় কামড় লাগে এ কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অনেকের এলার্জির সমস্যা থেকে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে
আবার রিটেইনার কারণে আঘাত লেগেই ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
টুথপেস্টের এক ধরনের উপাদান রয়েছে যার কারণে এই ধরনের ঘা হয়ে থাকে।
এসিডিটি খাবার অতিরিক্ত খেলে যেমন কমলা, আপেল, স্ট্রবেরি এই ধরনের ফল গুলো বেশি খাওয়ার কারণে ঘা হতে পারে।
যারা অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকে তাদেরও এই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে
যাদের ঘুম কম হয়ে থাকে তাদেরও এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ ধরনের সমস্যা হলে যে উপসর্গগুলো দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো যেখানে ঘা হয়ে থাকে তার চারপাশে লাল দেখা যায়। এছাড়াও ক্ষতস্থান হলুদ এবং ধূসর কালার হয় অনেকের এই স্থানগুলোতে ফুলে যায়, যার কারণে অনেকের দাঁত ব্রাশ করতে গেলে ব্যথা হয় ঝাল খাবার লবণাক্ত খাবার টক জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে করে অনেক বেশি ব্যথা করে।
মুখের ভিতর ঘা হলে কি ঔষধ
আপনার যদি মুখে এই ধরনের ঘা হয়ে থাকে তাহলে মুখের ভিতর ঘা হলে কি ঔষধ? এ সম্পর্কে জানলে আপনি নির্ভরযোগ্য মুখের ঘা এর ঔষধ সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন, তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের জেল পাওয়া যায় যা আপনি দিনে তিনবার বা চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে এই ধরনের ঘা অতি দ্রুত সেরে উঠতে কাজ করবে। এই জেলগুলো আপনার ব্যথা এবং প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে তাছাড়া ঘা গুলো শুকাতে দ্রুত কাজ করে থাকে।
যদি আপনার অতিরিক্ত ঘা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রেসক্রিপশন করে নিবেন। বিশেষ করে তারা এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকে যা আপনার এই ধরনের সংক্রমণ দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করবে।
বিভিন্ন ধরনের মাউথওয়াশ পাওয়া যায় যা আপনার এই ধরনের ঘা থেকে ব্যাকটেরিয়া চালানো হয়ে থাকে। তাই ব্যাকটেরিয়া কে দমন করার জন্য মাউথ ওয়াস ব্যবহার করতে পারেন তবে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে করবেন।
এই ধরনের ঘা হলে সবচাইতে কার্যকারী ঔষধ হল ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যা চিকিৎসকের পরামর্শ দিনে তিনবার খেতে পারেন। আশা করি দ্রুত সেরে উঠবে তাছাড়া আর চিকিৎসকরা এই ভিটামিনের পাশাপাশি আয়রন ফলিক এসিড ইত্যাদি দিয়ে থাকে যা আপনার এই ঘা দূর করতে সাহায্য করবে।
পাশাপাশি আপনি প্রাকৃতিক চিকিৎসার মধ্যে যেমন মধু অ্যালোভেরা এই জাতীয় প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন। এতেও দ্রুত কাজ করে থাকে আবার অনেকে নারিকেলের তেল ব্যবহার করে থাকে এগুলো সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ঘা সেরে উঠতে সাহায্য করে।
মুখের ঘা এর জন্য কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন
এই ধরনের প্রশ্ন অনেকেই করে থাকে, তাই যখন আপনার ঘা অত্যাধিক বেশি হয়ে যায় এবং আলসারের পর্যায়ে চলে যায়, এই ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসক দেখাতে হবে তা না হলে পরবর্তীতে ক্যান্সারের রূপ নিবে। যখন দেখবেন আপনার এই ঘা বিভিন্ন শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে এবং তিন সপ্তাহের বেশি যাবত এই ঘা সেরে উঠতেছে না।
পাশাপাশি আপনার শরীরে প্রচন্ড পরিমাণ জ্বর থাকে এবং শরীরে ব্যথা করে তাই প্রাথমিক চিকিৎসা বা প্রাথমিক যে ওষুধগুলো খাওয়া হয় সেগুলো তো কাজ হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দিলে আশা করি আপনি সুস্থ হবেন।
শিশুর মুখে ঘা হলে করণীয়
আপনার শিশুর যদি মুখে ঘা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে শিশুর মুখে ঘা হলে করণীয় সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। কিভাবে আপনার শিশুর চিকিৎসা নেবেন সে সম্পর্কে চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
আপনার শিশুর কেমন ধরনের ঘা হয়েছে সেটা আগে দেখতে হবে। এই ধরনের ঘা হলে সাধারণত চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের জেল দিয়ে থাকে। যা শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে সুবিধা হয় কেননা এই জেলগুলো অত্যন্ত মিষ্টি জাতীয় হয়ে থাকে যার শিশুরা চকলেটের মত খেতে থাকে। এতে আপনার শিশুর এই ধরনের ঘা গুলো দ্রুত সেরে উঠবে এবং সুস্থ হয়ে যাবে।
এ ধরনের ঘা হলে সাধারণত শিশুদের ব্যথা করতে থাকে এবং তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে এজন্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ব্যথা নাশক ওষুধগুলো খাওয়ানো যেতে পারে। এতে করে আপনার শিশুর ব্যথা এবং প্রদাহ গুলো দূর হবে পাশাপাশি একজন চিকিৎসক যদি এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করার প্রয়োজন মনে করে তাহলে অবশ্যই যেভাবে খেতে বলে সেভাবে নিয়ম অনুযায়ী খাওয়ালে আশা করা যায় আপনার শিশু দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে
পাশাপাশি চেষ্টা করবেন ভিটামিন বি কমপ্লেক্স জাতীয় খাবার গুলো খাওয়ানোর, তাহলে দেখবেন আপনার শিশুর এই ধরনের সমস্যাগুলো দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করবে। এছাড়াও খনিজ পদার্থ জাতীয় খাবার গুলো এবং পানি বেশি বেশি পানি পান করানোর চেষ্টা করবেন এতে দেখবেন দ্রুত আপনার শিশু সুস্থ হয়ে উঠবে।
এছাড়া শিশুরা সাধারণত এসিডিটি খাবার গুলো খেতে পছন্দ করে এবং মসলাদার খাবার গুলো বেশি পছন্দ করে থাকে। এই ধরনের খাবারগুলো এই সময়ে খাওয়ানো যাবে না, এতে আরো আপনার শিশুর এই ধরনের ঘা গুলো আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন মসলা অতিরিক্ত মসলা এবং এসিডিটি খাবার গুলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।
মুখের ভিতর ঘা এর সম্পর্কে FAQ কিছু প্রশ্ন জানুন
মুখে ঘা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না?
এই সময় আপনার শিশুকে অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার এবং টক জাতীয় খাবার গুলো থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করবেন। তাছাড়া আপনার শিশুর মুখ সবসময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন।
মুখের ঘা দূর করার খাবার?
নরম জাতীয় খাবার গুলো খাওয়ার চেষ্টা করাবেন এবং যে খাবার গুলো গিলতে ও হজম করতে দ্রুত কাজ করে সেই খাবারগুলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
মুখের আলসারের লক্ষণ কী কী?
যদি আপনার এই ধরনের ঘা হয়ে থাকে তাহলে খাবার খেতে অসুবিধা হবে এবং প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা অনুভূত হবে, তাছাড়া এই ঘা এর চারদিকে লাল হয়ে যাবে, সব সময় ক্লান্তি বোধ মনে হবে।
মুখের আলসার থেকে কি ক্যান্সার হয়?
এই ধরনের ঘা থেকে ক্যান্সার হবে এটা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। যখন আপনার এই ধরনের সমস্যা দেখবেন অবশ্যই একজন চিকিৎসকে দেখাবেন। কেননা তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন যে আপনার ক্যান্সার হয়েছে কিনা।
মুখের ভিতর সাদা ঘা কেন হয়?
এই ধরনের ঘা সাধারণত বিভিন্ন কারণেই হতে পারে বিশেষ করে যারা গরম খাবার খায়, অতিরিক্ত মসলা এবং ঝাল জাতীয় খাবার গুলো খায় ও ধূমপান করে থাকে, তামাক জাতীয় খাবার গুলো চিবিয়ে খায়।
লেখক এর মন্তব্যঃ মুখের ভিতর ঘা হলে করণীয় কি ও এর ওষুধ সম্পর্কে জানুন
পরিশেষে বলা যায় যে আপনার মুখে যদি ঘা হয়ে থাকে, সেই ক্ষেত্রে কি পরিমান খাওয়া হয়েছে। সেটা নির্দিষ্টতা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হয়। তাই মুখের ভিতর ঘা হলে করণীয় কি? এ সম্পর্কে একজন চিকিৎসক ভালো পরামর্শ দিতে পারবেন। তবে আমি চেষ্টা করেছি আপনাকে সামান্য পরামর্শ দেওয়ার, আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url