বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা লাগে আপডেট তথ্য জানুন
অনেকে জানতে চায় যে বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা লাগে? আসলে ভিসা খরচটা নির্ভর করে আপনি কোন কাজের উপর ভিসা করতে চাচ্ছেন। চলুন, কোন কাজের কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ওমান অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নত একটি দেশ, যেখানে প্রতিবছর বিভিন্ন কোম্পানি তাদের কাজের জন্য লোক নিয়োগ দিয়ে থাকে। এজন্য বিভিন্ন কাজের ভিসার খরচ বিভিন্ন রকম হয়। তাই বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা লাগে? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃবাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা খরচ হয়? আপডেট তথ্য জানুন
বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা লাগে
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে অনেকে যেতে চায় কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা লাগে? এ সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানে না। তবে খরচ নির্ভর করে আপনি কোন কাজের উপর ভিসা করবেন। চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
এদেশে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে যার কারণে প্রতিবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। বিশেষ করে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের লোক নিয়ে থাকে। তবে ভিসা খরচ কত হবে, সেটা নির্ভর করবে বিভিন্ন ভিসার উপর। টুরিস্ট ভিসা, ফ্যামিলি ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসায় প্রতিবছর অনেক লোক নিয়ে থাকে। তাই আপনার যদি কোন একটি কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি সেই কাজের উপর ভিসা করতে পারেন। তবে আপনার ভিসা খরচ হতে পারে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচঃ আপনি যদি এই দেশটিতে কাজ করার উদ্দেশ্যে যেতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত লাগতে পারে।
তবে যে কাজগুলো এই ভিসার মাধ্যমে করতে পারবেন তা হল; ড্রাইভিং, ক্লিনার, হোটেল বা রেস্টুরেন্টের শ্রমিক হিসেবে অথবা কৃষি কাজ, ইলেকট্রিশিয়ান ইত্যাদি কাজগুলো আপনি এই ভিসার মাধ্যমে করতে পারবেন। যা অনেক চাহিদা রয়েছে যদি আপনার এই কাজগুলো অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি অনেক বেতনে চাকরি করতে পারবেন এবং এই ভিসায় আপনি যেতে পারেন।
টুরিস্ট ভিসার খরচঃ আপনি যদি ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে এই দেশটিতে যেতে চান সেক্ষেত্রে ৭০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকার মত লাগতে পারে। এই ভিসার মেয়াদ থাকে ৩ মাস, এর বেশি হলে আপনি থাকতে পারবেন না। এর মাঝে যদি আপনি কাজ সন্ধান করতে পারেন, তাহলে আপনার চাকরি হয়ে যাবে। তা যদি না করতে পারেন তাহলে আপনাকে দেশে ফিরে আসতে হবে।
স্টুডেন্ট ভিসার খরচঃ অনেকেই এদেশে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যায় অথবা ফ্যামিলি ভিসায় গিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মত। আপনি যদি স্টুডেন্ট বা ফ্যামিলি ভিসা যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে আপনার পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করতে পারবেন। অনেকেই এই দেশে গিয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করছে, তারা ভালো টাকা ইনকাম করে যাচ্ছে। তাই চাইলে আপনিও এই ভিসায় যেতে পারেন।
ফ্রি ভিসার খরচঃ অনেকেই বোয়েসেলের মাধ্যমে আবেদন করে ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও অনেকে এই ভিসা করে যাচ্ছে অথবা সরকার অনুমোদিত বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে এই ভিসা করে থাকে। এটা মূলত কাজের জন্য ভিসা করা হয়ে থাকে, এই ফ্রি ভিসা করার জন্য খরচ ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার মত লাগতে পারে।
কোম্পানি ভিসাঃ এ দেশটি প্রতিবছর অনেক কোম্পানি বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়ে থাকে। তারা সরকারিভাবে অথবা বেসরকারির মাধ্যমে ভিসা এবং নিয়োগ দিয়ে থাকে। আপনি যদি সরকারী মাধ্যমে এই কোম্পানির চাকরিগুলো করতে চান, সেক্ষেত্রে খরচ কম হবে।
এছাড়া যদি আপনি সরকার অনুমোদিত কিছু এজেন্সি রয়েছে তাদের মাধ্যমে যেতে চান সে ক্ষেত্রে একটু খরচ বেশি হবে। সর্বমোট আপনার খরচ হতে পারে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত আর সরকারি খরচে যদি যেতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনার ১ থেকে ২ লক্ষ টাকায় যেতে পারবেন।
ওমানে কোন কাজের চাহিদা বেশি
ওমানে বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে তার মধ্যে ওমানে কোন কাজের চাহিদা বেশি? এ সম্পর্কে আপনার জানা থাকলে তা অভিজ্ঞতা নিয়ে ভিসা করলে অনেক টাকা বেতন পাবেন।
চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
- রংমিস্ত্রির কাজ করতে পারবেন
- মেকানিক্স এর কাজ করতে পারবেন
- প্লাম্বার এর কাজের চাহিদা রয়েছে
- এসি টেকনিশিয়ান এর কাজ করতে পারেন।
- রাজমিস্ত্রির কাজের চাহিদা রয়েছে
- হোটেলের শেফ এর কাজ চাহিদা রয়েছে
- ওয়েটারের কাজের চাহিদা রয়েছে
- ড্রাইভিং এর কাজ করার গুরুত্ব রয়েছে।
ওমান বেতন কত
অনেকে জানতে চায় যে ওমান বেতন কত? আসলে এটা নির্ভর করে কাজের উপরে। আপনি কোন ধরনের কাজ করবেন তার ওপর যদি অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে আপনার বেতন বেশি হবে। চলুন, বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
আপনার যদি কোন কাজের অভিজ্ঞতা যোগ্যতা থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে কাজ করে অনেক টাকা বেতন পাবেন। তবে নতুন অবস্থায় আপনাকে বেতন খুবই কম দেবে সে ক্ষেত্রে ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মত বেতন পাবেন। আর যদি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনার ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। তবে এটা কোম্পানির উপর নির্ভর করে কম বেশি হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক,
আপনি যদি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন সেই ক্ষেত্রে বেতন পাবেন ৮৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার মত।
ইলেকট্রিশিয়ান এর কাজ যদি করেন সে ক্ষেত্রে মাসে ৭৮ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
শেফ এর কাজ যদি করেন সে ক্ষেত্রে মাসে ৫৭ হাজার থেকে ৭১ হাজার টাকার মত বেতন পাবেন।
হোটেলের ওয়েটার হিসেবে যদি কাজ করে এসে ক্ষেত্রে মাসে ২৮ হাজার থেকে ৪২ হাজার টাকার মতো বেতন পাবে।
বাগানের কাজ যদি করতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার বেতন হবে ২৮ হাজার থেকে ৩৪ হাজার টাকার মত।
সুপার মার্কেটের বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে এ ধরনের কাজ যদি করেন তাহলে মাসে আপনার আর ৩৪ হাজার থেকে ৪২ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
ক্লিনার হিসেবে যদি কাজ করেন সে ক্ষেত্রে মাসে ২৫ হাজার থেকে ৩৪ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
ড্রাইভিংয়ের কাজ যদি জানা থাকে সে ক্ষেত্রে যদি এই কাজ করেন তাহলে ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
ওমান যেতে কি কি প্রয়োজন
ওমানে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। তাই ওমান যেতে কি কি প্রয়োজন? গুরুত্বপূর্ণ কাগজগুলো সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে এবং সংগ্রহ করে রাখতে হবে। তা না হলে আবেদন করার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক
কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদী পাসপোর্ট থাকতে হবে যদি আপনার পাসপোর্ট এর সময়ে শেষ হয়ে যায় তাহলে নতুন করে তৈরি করবেন।
সাম্প্রতিক তোলার দুই থেকে তিন কপি রঙিন ছবি প্রয়োজন
পুলিশ ভেরিফিকেশন এর সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে
যে কোম্পানিতে জব করতে যাবেন তার অফার লেটার অবশ্যই প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অবশ্যই মেডিকেল সার্টিফিকেটের প্রয়োজন।
কাজের উপর নির্ভর করবে শিক্ষাগত যোগ্যতা সেক্ষেত্রে যদি আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে তাহলে সনদ লাগবে।
ভিসা আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে হবে এবং সঠিকভাবে পূরণ করা লাগবে।
বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত সময় লাগে
অনেকে জানতে চায় যে বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত সময় লাগে? বাংলাদেশ থেকে অনেক লোক এই দেশ যায় সে ক্ষেত্রে সময়ের ব্যবধান হবে ফ্লাইট এর ক্ষেত্রে। যদি ভালো বিমানে যেতে পারেন সেই ক্ষেত্রে আপনার সময় কম লাগবে। যদি লোকাল কোন বিমানের মাধ্যমে যান সে ক্ষেত্রে সবাই একটু বেশি লাগবে।
আপনি যদি লোকাল বিমানের মাধ্যমে যেতে চান সে ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টার মত সময় লাগতে পারে।
যদি ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স এই বিমানের মাধ্যমে যেতে চান সে ক্ষেত্রে ৭ ঘন্টার মত সময় লাগতে পারে।
তাছাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে যেতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনার ৫ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে।
ওমান দেশ নিয়ে কিছু FAQ প্রশ্ন সম্পর্কে জানুন
ওমানের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?
বর্তমানে এই দেশের ১ টাকা সমান বাংলাদেশের ১১৬ টাকা মত।
ওমানে কোন পেশায় বেতন বেশি?
বর্তমানে এই দেশটিতে প্রকৌশলী, ডাক্তার, প্রযুক্তি আইটি সেক্টরে যাদের অভিজ্ঞতা আছে তাদের বেতন সবচাইতে বেশি।
ওমানের শ্রমিকদের জন্য থাকা খাওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়?
তাদের অনেক সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে বিশেষ করে থাকা খাওয়া এবং পরিবহন ব্যবস্থা করে থাকে।
ওমানে খাবারের দাম কত?
মধ্য প্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় এ দেশের খাবারের দাম তুলনামূলক অনেকটাই কম দাম হয়ে থাকে।
ওমানে চাকরি পাওয়া কি কঠিন?
এ দেশটি উন্নত দেশ হওয়ার কারণে অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নত যার কারণে এখানে বিভিন্ন ধরনের ক্যারিয়ারের সুযোগ রয়েছে। তাই আপনার যদি অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে চাকরি পাওয়া সহজ হবে।
শেষ কথাঃ
পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি ওমানে যেতে চান সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজের উপর দক্ষতা থাকলে আপনি অনেক টাকায় বেতন পাবেন । তবে এ দেশটিতে বিভিন্ন কাজের চাহিদা রয়েছে তাই আপনি যে কাজের উপরে অভিজ্ঞতা রয়েছে ও দক্ষতা আছে সেই কাজের উপর ভিসা করতে পারেন। তাই বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা লাগে? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উপকার হবে। পোস্টটি ভালো লাগলো আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করুন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url