তেজপাতা খেলে কি উপকার হয় ও যেসব রোগ সারাবে

অনেকে জানতে চায় যে তেজপাতা খেলে কি উপকার হয়? এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে, যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার করবে। চলুন, তেজপাতা আমাদের শরীরে কি উপকার করে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
সাধারণত তেজপাতা বিভিন্ন ধরনের রান্না কে সুস্বাদু করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা আমাদের অনেক উপকার হয়। তবে কিভাবে খেলে উপকার হবে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই তেজপাতা খেলে কি উপকার হয়? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃতেজপাতা খেলে কি উপকার হয় ও যেসব রোগ সারাবে

তেজপাতা খেলে কি উপকার হয়

তেজপাতা সাধারণত আমরা রান্না ঘরে ব্যবহার করে থাকি। তাই তেজপাতা খেলে কি উপকার হয়? এটা বিভিন্ন উপায়ে আমাদের উপকার করে থাকে। বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রেও ধারণ কাজ করে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

পুষ্টিগুণঃ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, বি৬ তাছাড়া ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ আরো বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায়। যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। এছাড়াও এর মাঝে ক্যালরি, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি থাকে। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ সারাতে উপকার করে। এছাড়াও এটা খনিজ পদার্থের চাহিদা পূরণ করে। চলুন, এটা আমাদের কি কি উপকার করে এবং কি রোগ সারাতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকে, বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। এর মধ্যে আপনি তেজপাতা খেতে পারেন। কেননা এটা রক্তের শর্করা কমিয়ে নিয়ে আসে, এছাড়াও ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস টাইপ২ আছে তারা এই তেজপাতা খেতে পারেন।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারাও এই তেজপাতা খেতে পারেন। কেননা এটা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দিতে পারে এবং যাদের প্রসাবের সমস্যা রয়েছে, তারাও খেতে পারেন। এর মাঝে এনজাইম থাকার কারণে খাদ্য দ্রুত ভাঙতে পারে, যার কারণে হজম হয় তাড়াতাড়ি তাই তেজপাতা খেতে পারেন।

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ এর মাঝে থাকে ক্যাফেক অ্যাসিড যা হার্টের সমস্যা দূর করবে। এছাড়াও কোলেস্টরেলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে, যার কারণে আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে।

ব্যথা দূর করেঃ আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের যদি ব্যথা হয় যেমন মাথাব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা, বাতের ব্যথা যে কোন ধরনের ব্যথা দূর করার জন্য আপনি তেজপাতা খেতে পারেন। এর মধ্যে যে উপাদান থাকে তা আপনার এই ব্যথা দূর করতে সাহায্য করবে। এর পেস্ট বানানোর পর আপনার আক্রান্ত স্থানে লাগাবেন ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর দেখবেন আপনার ব্যথা অনেকটাই কমে গেছে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারেঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে এর মধ্যে যে উপাদান রয়েছে তা ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করতে পারে। এর মধ্যে ফাইটোনিউটেরিয়ান্স উপাদান থাকে যা আপনার ক্যান্সার কোষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এছাড়া এটা ব্রেস্ট ক্যান্সার দূর করতে সাহায্য করবে।

ক্ষত নিরাময় করেঃ এর মধ্যে এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও মাইক্রোব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা আপনার ক্ষত সারাতে সাহায্য করবে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকের বিরুদ্ধে কাজ করবে।
খুশখুশ কাঁশি দূর করেঃ আপনার যদি ঘনঘন ঠান্ডা লেগে থাকে এবং কাশি হয়ে থাকে, সেই ক্ষেত্রে আপনি তেজপাতা খেতে পারেন। কারণ এটা ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে আর এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া দূর করার জন্য তেজপাতা দারুন কাজ করে থাকে। এজন্য আপনার কয়টি তেজপাতা নিবেন এবং গরম পানির মধ্যে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এটা ঠান্ডা করবেন এরপরে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন। এর ভাপ নিতে পারেন এতে আপনার খুশখুশি কাঁশি চলে যাবে।

কিডনি পাথরের চিকিৎসাঃ দেখা গেছে যে এটা শরীরে ইউরিয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কেননা শরীরের ইউরিয়া যদি বেড়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনার কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে তাই তেজপাতা খেতে পারেন এতে আপনার কিডনি পাথর নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

মানসিক চাপ কমায়ঃ যদি আপনার মানসিক টেনশন বেশি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে মানসিক চাপ কমানোর জন্য আপনি তেজপাতার চা খেতে পারেন। এতে আপনার স্নায়ু শান্ত রাখবে এবং মানসিক চাপ কমে যাবে, তাই ঘুমানোর পূর্বে এটা খাওয়া যেতে পারে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ আমাদের শরীরে কিছু খারাপ কোলেস্টেরল থাকে যা আপনার ক্ষতি করতে পারে। আর এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনি তেজপাতা খেতে পারেন। এটা আপনার খারাপ কলেস্টরল গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। আপনার হার্ট সুস্থ থাকবে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাবে।

হৃদরোগের সমস্যাঃ যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তারা রান্না করার ক্ষেত্রে এই তেজপাতা দিতে পারেন। কেননা এটা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাবে এছাড়াও হৃদরোগের সমস্যা দূর হবে। কেননা এর মাঝে যে উপাদান থাকে যা আপনার হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখবে।

শরীরে দুর্গন্ধ কমাতেঃ অনেকের শরীরে বাজে দুর্গন্ধ আসে, এছাড়াও অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সাবান ব্যবহার করে থাকে। সেটা আপনার অনেক টাকা খরচ হতে পারে তাই এ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি এক টুকরা পরিষ্কার কাপড় নেবেন এবং তেজপাতার গুড়া নিবেন, কুসুম গরম পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পরে, এই পানিতে গোসল করবেন দেখবেন আপনার দুর্গন্ধ চলে গেছে।

দাদের উপকারঃ যাদের এই ধরনের সমস্যা রয়েছে তারা অল্প পরিমাণ পানি সিদ্ধ করে নিতে হবে এবং এর মাঝে তেজপাতা গুড়া করে দিবেন, সকাল বিকাল খেতে পারেন। সপ্তাহ খেলে আপনার চুলকানির কমে যাবে এছাড়া ওই পানি ভিজিয়ে যদি আপনি আক্রান্ত স্থানে মুছে দিতে পারেন, তাহলে এই ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

প্রসাবের সমস্যাঃ অনেকের প্রসাবের রং লাল হয়ে যায় এই ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য আপনি তেজপাতা গরম পানিতে সিদ্ধ করে নেবেন, এর পরে পানিটুকু ছেঁকে নিয়ে দুই ঘন্টা পর পর খেতে পারেন এতে আপনার প্রসাবের রং সাদা হবে।

ফোঁড়া দূর করেঃ অনেকের বিভিন্ন জায়গায় ফোড়া উঠে এতে অত্যন্ত যন্ত্রণা করে এবং শক্ত হয়। এই ধরনের সমস্যা হলে আপনি তেজপাতা বেটে নিয়ে দুই তিনবার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন, এতে আপনার যন্ত্রণাটা কমবে।

ঘাম দূর করেঃ যাদের শরীর অতিরিক্ত ঘেমে যায় এতে দুর্গন্ধ হতে পারে, এজন্য এই ঘাম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তেজপাতা বেটে নিবেন। এরপরে গোসল করার সময় এর পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। সাত দিন ব্যবহার করে দেখতে পারেন কমে যাবে।

তেজপাতার অপকারিতা

এটা আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে থাকে কিন্তু তেজপাতার অপকারিতা আছে। চলুন কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মায়েরা যদি তেজপাতা পাতা খায় এতে অনেক গর্ভবতী মায়ের প্রসাবের ইনজেকশন হতে পারে। এছাড়া অনেকেই অপারেশন করে থাকে সে ক্ষেত্রে এটা খাওয়া নিষেধ করা হয়ে থাকে। কেননা এটা স্নায়ুতন্ত্রের উপর ক্ষতি করতে পারে। তাই গর্ভবতী মায়েদের সতর্ক থাকতে হবে। এটা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ তেজপাতা খান সেক্ষেত্রে শরীরে হজমের সমস্যা হবে। তাছাড়াও আপনার শরীরের খাদ্য হজম হতে দেবে না।

এটা আপনার শরীরে ত্বকের ক্ষতি করবে যদি আপনি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন এর কারণে আপনার এলার্জির সমস্যা হতে পারে।

যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা এটা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে, অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

তেজপাতার চা খাওয়ার উপকারিতা

অনেকেই তেজপাতার চা খেতে পছন্দ করে, তাই তেজপাতার চা খাওয়ার উপকারিতা আছে। এছাড়া এটা অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে অনেক সুগন্ধি পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে আপনি খেতে পারেন। চলুন, এই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুন আছে যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকার হবে। এর মাঝে কপার, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। যা আপনার শরীরের ভিটামিন সি এর উপকার করবে তাই আপনি এর চা খেতে পারেন।

এই চা যদি আপনি খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ বা ব্যথা করবে। এছাড়া ঋতু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অনেকের ঠান্ডা লাগতে পারে, সে ক্ষেত্রে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল তেজপাতার মধ্যে থাকার কারণে আপনার এই ধরনের দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়া আপনার বুকে কফ যদি জমে থাকে সেটাও দূর হবে।

এর মাঝে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে, যার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ভালো উপকার করে থাকে।
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তা এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য খেতে পারেন অথবা কোলেস্টেরল দূর করার জন্য তেজপাতার চা খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও হজম শক্তি কোষ্ঠকাঠিন্য এই ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য এই চা খাওয়া যেতে পারে।

এজন্য তিন থেকে চারটি চা তেজপাতা নেবেন, এরপরে এক কাপ পানি নিতে হবে। পাঁচ মিনিট পানিটা ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপরে নামিয়ে ফেলবেন চাইলে দুধ দিতে পারেন সুস্বাদু করার জন্য তবে দুধ দিলে অনেকের ক্ষতি হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি রং চা হিসেবে খেতে পারেন। এটা আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার হবে। আপনার ওজন নিয়ন্ত্র ছাড়াও আপনার বিভিন্ন ধরনের উপকার পাবেন। এজন্য আপনি তেজপাতা চা খেতে পারেন এতে আপনার মন ভালো থাকবে মানসিক প্রশান্তি পাবেন।

ত্বকের জন্য তেজপাতার উপকারিতা

যাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে তারা এই তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। কেননা ত্বকের জন্য তেজপাতার উপকারিতা আছে, যা আপনার বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করতে হবে। চলুন, কিভাবে ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের সমস্যা দূর হবে সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

ত্বকের তারণ্য ধরে রাখবেঃ যাদের ত্বকের সমস্যা রয়েছে তাদের অল্প বয়সেই বয়স্ক দেখা যায়। যার কারণে এই ধরনের তারণ্যকে ধরে রাখার জন্য আপনি তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য আপনি তেজপাতা দিয়ে পানি গরম করে নিয়ে সেটার ভাপ নিতে পারেন, এতে আপনার ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হবে।

ত্বক উজ্জ্বল করেঃ অনেকের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করে থাকে। এতে আপনার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। প্রাকৃতিক উপায়ে যদি সৌন্দর্য ধরে রাখতে চান সেক্ষেত্রে তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য আপনি পানিতে এই তেজপাতা সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর ঠান্ডা করে নিবেন, এই পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলবেন। ঠান্ডা পানি দিয়ে আবার মুখ ধোয়ার পরে দেখবেন আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ব্রণ দূর করেঃ ব্রণ দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করে থাকেন, তাই আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য আপনি এটা গোলাপ জলের মধ্যে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে ব্রণের উপরে লাগাতে হবে তারপর আধা ঘন্টা রেখে তারপর পানি দিয়ে ফেলবেন। এছাড়া আর একটি পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন। কয়েকটি তেজপাতা নিয়ে পানিতে ফুটাবেন ১০ মিনিট রেখে দেওয়ার পর পানিটুকু ছেকে নিয়ে সেই পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলবেন দেখবেন ব্রণ দূর হয়ে গেছে।

চুলের জন্য তেজপাতার উপকারিতা

অনেকে চুলের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করে, তাই আপনি তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। কেননা চুলের জন্য তেজপাতার উপকারিতা রয়েছে যা আপনার ব্যবহার পদ্ধতি জানতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক।

মাথার খুশকি দূর করবেঃ যাদের প্রচুর পরিমাণে মাথায় খুশকি হয়ে থাকে, তারা এই তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য গুড়ো করে নিতে হবে এবং নারকেল তেলের মাঝে এই ঢেলে দিতে হবে। অলিভ অয়েললে তেলের মাঝেও ব্যবহার করতে পারেন। হালকা গরম করে নিতে পারেন। এতে আপনার চুলে ভিজিয়ে রাখবেন গোড়ালে শক্ত হয়ে যাবে। এরপর হালকা ম্যাসাজ করতে পারেন। ১ ঘন্টা রেখে দেওয়ার পরে আপনার দেখবেন শান্ত করে নিতে পারেন। এতে আপনার দারুন কাজ করবে।

কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করেঃ চুলকে রুক্ষ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এটা কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপায় যদি আপনি কন্ডিশনার বানাতে চান, তাহলে তেজপাতা দিয়ে কন্ডিশনাল বানাতে পারেন। অল্প পরিমাণ পানি নিবেন তার ভিতরে চার-পাঁচটি তেজপাতা দিবেন। এরপর হালকা ফুটিয়ে নিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে তারপরে আপনি মাখিয়ে নিতে পারেন এরপরে ধুয়ে ফেলবেন। চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের কাজ করবে এবং রুক্ষতা দূর করবে।
চুল পড়া বন্ধ করবেঃ যাদের অত্যাধিক চুল পড়ে থাকে তারা এই তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। মাত্র দুই সপ্তাহ ব্যবহার করে দেখতে পারেন, এতে আপনার দারুন কাজ করবে। এজন্য কয়েকটি তেজপাতা নেবেন এবং ১ লিটার পানি গরম করে নিতে হবে। এরপরে তেজপাতা গুলো আলাদা করে নিতে হবে পানি টুকু শিখে নিবেন। এর পরে আলাদাভাবে পানিটুকু ফুটিয়ে নিবেন, হালকা গরম করে যদি ফুটাতে পারেন। এরপরে ঠান্ডা হলে চুলে লাগাতে পারেন, এতে আপনি দারুন উপকার পাবেন।

মাথার চুলকানি দূর করবেঃ যাদের মাথায় চর্মরোগ রয়েছে এবং বিভিন্ন ব্যাক্টরিয়াল ইনফেকশনের কারণে চুলকায় তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে আপনার এই ধরনের সমস্যা দূর হবে। এক্ষেত্রে আপনি পানির ভিতরে ভিজিয়ে রাখবেন, আধার লিটার পানির মাঝে ফুটিয়ে নিতে হবে। ঠান্ডা করে নিবেন এরপরে মাথায় ব্যাবহার করতে পারেন। এতে আপনার ইনফেকশন দূর হয়ে যাবে না।

এছাড়াও যাদের চুলের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে এবং এন্টিব্যাকটেরিয়াল এর কারণে মাথার উকুন হতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে এই তেজপাতার গুঁড়ো সরাসরি যদি আপনি লাগাতে পারেন সেক্ষেত্র দারুন কাজ করবে।

তেজপাতা সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের FAQ প্রশ্ন সম্পর্কে জানুন

তেজপাতা ভেজানো জল খেলে কি হয়?

যাদের রক্তের শর্করা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে, তারা এই ধরনের তেজপাতা ভেজানো পানি খেতে পারেন। এতে আপনার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার রক্তের শর্করা কমিয়ে নিয়ে আসবে। এছাড়াও এর মাঝে ভিটামিন সি থাকে যা আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করবে।

তেজপাতা পোড়ালে কি দুশ্চিন্ত কমে?

অনেকেই তেজপাতা পুড়িয়ে দুশ্চিন্তা মুক্তি করতে চায় কিন্তু এতে আপনার যে সুগন্ধ টা আসে যা আপনার মানসিক প্রশান্তি দিতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের উদ্বেগ দূর হয়ে যাবে। যার কারণেই হয়তো এর ধোঁয়ায় এক ধরনের লিলানুল নামক উপাদান থাকে যা আপনার এই ধরনের দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করবে।

প্রতিদিন রাতে তেজপাতা পুড়িয়ে খেলে কি হয়?

অনেকেই মনে করে যে তেজপাতা পোড়ানোর কারণে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায় না। এটা আসলে তেমন একটা যুক্তি নেই তবে এর ধোয়ার কারণে গন্ধ আসে যা আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে নেওয়ার কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কাঁচা তেজপাতা খেলে কি হয়?

এটা এমন ধরনের উপাদান যা আপনার খাদ্য হজমের ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা গ্যাসের সমস্যা ইত্যাদি দূর করার জন্য এই চা নিয়মিত ভাবে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে।

তেজপাতা সিদ্ধ পানি খেলে কি হয়?

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি আপনি গরম পানির ভিতরে দুই তিনটা তেজপাতা মিশিয়ে খেতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আপনার শরীরে উপকার হবে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করবে। এছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ করবে, তাছাড়া আপনার ক্ষুধা কম লাগবে যার কারণে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে।

উপসংহারঃ তেজপাতা খেলে কি উপকার হয় ও যেসব রোগ সারাবে

পরিশেষে বলা যায় যে তেজপাতা আমাদের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। তাই তেজপাতা খেলে কি উপকার হয়? হয়তো অনেকেই জানিনা। তবে উপরোক্ত আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আশা করি আপনার উপকার হবে, তাই পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪