গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে গর্ভবতী ও শিশুর যে ক্ষতি হতে পারে

অনেক গর্ভবতী মায়েরা জানতে চায় যে, গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে কি হয়? আসলে গর্ভাবস্থায় সব ধরনের খাবার পরিমাণ মতো খেতে হবে। তাই আপনি অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। চলুন, কতটুক পরিমান ঝাল খেলে আপনার ও গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হবে না সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
গর্ভবতী অনেক মায়েরা সাধারণত অতিরিক্ত ঝাল খেতে পছন্দ করে আবার কেউ মিষ্টি খেতে পছন্দ করে। তবে অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া যাবে না। তাই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে কি হয়? ও শিশুর যে ক্ষতি হতে পারে

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে কি হয়

অনেক গর্ভবতী মায়েরা ঝাল খেতে পছন্দ করে কিন্তু গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন। কেননা গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে আপনার ও গর্ভস্থ শিশুর কি ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাঃ গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত অনেকের এই সময়ে অল্প ঠান্ডা লাগলেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। এক্ষেত্রে যদি অতিরিক্ত পরিমাণ ঝাল খাবার খায় সে ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট আরো বেশি হবে। বিশেষ করে যাদের এজমা বা হাঁপানি আছে তাদের শ্বাসকষ্ট আরো বেশি হতে পারে এবং গলা খুসখুস করতে থাকে। এই জন্য একজন গর্ভবতী মা অবশ্যই মরিচের গুড়া খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা অতিরিক্ত এই ঝাল খাওয়ার কারণে আপনার গর্ভস্থ শিশুর শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। তাই এই সময়ে মরিচের গুড়ো জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

পেটের সমস্যাঃ অনেক গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময় খাদ্য হজম কম হয়। এইজন্য যে কোন খাবার খেলে তাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে, এসিডিটি ও পেট ব্যথা হতে পারে। তাই অতিরিক্ত ঝাল যুক্ত খাবার গুলো খেলে আরো বেশি গ্যাস্ট্রিক বৃদ্ধি পেতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এই জাতীয় খাবার গুলো পেটে এসিড তৈরি করে এবং হাইড্রোক্লোরিক এসিড বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার কারণে পেট ফুলে যেতে পারে, বুকে জ্বালাপোড়া অথবা গ্যাস্টিকের সমস্যা বেশি দেখা যায়। এতে আপনার গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হবে।

হজমের সমস্যাঃ গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে হজম শক্তি কম থাকে। এ কারণে অনেক খাবার তারা হজম করতে পারে না। এছাড়াও যদি কোন গর্ভবতী মা অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার গুলো খায়, সেক্ষেত্রে পেটের ভিতরে অসুবিধা হবে এবং হজমের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিবে। অনেকের ডায়রিয়া হতে পারে, পেট ফুলে যাওয়া ইত্যাদি ধরনের সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন ঝাল জাতীয় খাবার গুলো এড়িয়ে চলা। কেননা অনেকের ঝাল জাতীয় খাবার কারণে পেটের এসিডিটি বৃদ্ধি পেতে পারে।

ত্বকের সমস্যাঃ গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কারণ এই সময়ে তাদের হরমোনের পরিবর্তন হয়, যার কারণে ত্বকে বা মুখে বিভিন্ন ধরনের ব্রণ বা ক্ষত সৃষ্টি হয়। তবে এই সময় যদি কোন গর্ভবতী অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার গুলো খেতে থাকে সেক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং অতিরিক্ত ঘামতে থাকবে, এজন্য ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা গুলো দেখা দিবে। কেননা অতিরিক্ত যদি ঘামতে থাকে তাহলে ত্বকে ব্রণ উঠতে পারে, এলার্জি আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন ঝাল জাতীয় খাবার গুলো থেকে বিরত থাকা।

শরীরে অতিরিক্ত উত্তাপ সৃষ্টি হয়ঃ আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে ঝাল জাতীয় খাবার গুলো যদি অতিরিক্ত খান। দেখবেন আপনার শরীর ঘামতে থাকবে এতে শরীরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার কারণে অস্বস্তিকর মনে হবে এতে করে আপনার প্রেশার বেড়ে যেতে পারে অথবা দুর্বলতা লাগতে পারে। এজন্য আপনার গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হবে। অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার কারণে আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে অনেকের বমি, মাথা ঘুরা এবং শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে আবার অনেকের ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে। তাই অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

হৃদরোগের প্রভাবঃ আপনি গর্ভবতী হওয়ার পরে যদি দেখেন আপনার হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিচ্ছে সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া যাবে না। কেননা অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি হতে পারে। কেননা আপনি যখন অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার গুলো খাবেন, দেখবেন শরীর ঘামতে থাকবে। এতে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে আর উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে হৃদরোগের সমস্যা হবে। এছাড়াও আপনার গর্ভস্থ শিশুর ও ক্ষতি হবে। তাই এই সময়ে অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া যাবে না। তবে আপনি যদি পরিমাণ মতো খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে শরীরের জন্য উপকার হবে।
আলসারের সমস্যাঃ যাদের পূর্বে থেকে আলসারের সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কেননা কারো পেটে যদি আলসার হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ভিতরে ঘা হয়ে যায়। এক্ষেত্রে যে কোন ঝাল জাতীয় খাবার খেলে প্রচন্ড পরিমাণে ঝাল লাগে এবং পেটব্যথা করতে থাকে। এক পর্যায়ে আলসার থেকে আপনার লিভার সিরোসিস রোগ হতে পারে, পরবর্তীতে কোলন ক্যান্সারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সময় অবশ্যই গুড়া মরিচের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কাঁচা মরিচের ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে এতে উপকার আছে।

মুখে ঘা হতে পারেঃ গর্ভবতী মায়েদের এই সময় ভিটামিনের অভাবের কারণে অনেক সময় মুখে দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি যদি গুড়া মরিচের খাবার খেতে থাকেন সেই ক্ষেত্রে আরো মুখে ঘা বেশি হবে এবং প্রচন্ড পরিমাণে ঝাল ধরবে। এজন্য আপনার গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে। তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় ঝাল জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকা। তাছাড়া মুখে ঘা হওয়ার কারণে ঝাল জাতীয় খাবার গুলো খেলে আরো অতিরিক্ত ঝাল লাগবে এবং মুখের ঘা গুলো ছড়িয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দিবে তাই চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় অল্প পরিমাণ ঝাল খাবেন।

ডায়রিয়ার সমস্যাঃ গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময় খাদ্য হজমের সমস্যা দেখা যায় যার কারণে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। এরপর যদি আপনি আরো ঝাল জাতীয় খাবার বেশি খান সে ক্ষেত্রে খাদ্যে হজম সমস্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। এতে ডায়রিয়া, আমাশয় বা পেটের বদহজম বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা এই ধরনের মসলা জাতীয় খাবার গুলো খেলে পেটের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তাই অতিরিক্ত গুড়া মরিচের তরকারি বা খাবার থেকে বিরত থাকবেন। এর কারণে অনেকের বমি, পেট ফুলে যাওয়া, পেট ব্যথা করতে পারে, অ্যাসিডিটির সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে।

মাথা ব্যাথাঃ গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত বিভিন্ন ধরনের খাবারের কারণে অনেক সময় মাথা ব্যাথা করে থাকে। তার মাঝে অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় যদি খাবার খান সেক্ষেত্রে কিন্তু তীব্র মাথাব্যথা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের মাথাব্যথা শুরু হলে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। কেননা এতে রক্ত সঞ্চালন অনেক বৃদ্ধি পেয়ে যায় এবং অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে রক্তচাপের পরিমাণ পরিবর্তন হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনার মাথা ব্যথা করতে পারে। তাই পরিমাণ মতো ঝাল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এই ধরনের মাথাব্যথাতে আপনার গর্ভস্থ শিশুর সমস্যা দেখা দিতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপঃ গর্ভাবস্থায় যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে কিন্তু অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া যাবে না। কেননা অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার খেলে আপনার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে, রক্ত চলাচল আরো বেড়ে যাবে এবং উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। এতে আপনার হৃদরোগের ঝুকি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার গুলো কখনোই বেশি খাবেন না। এতে আপনার বাচ্চার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই চেষ্টা করবেন ঝাল জাতীয় খাবার গুলো পরিমান মত খেতে এতে আপনার উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পাবে না, যার কারণে আপনার গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতিও হবে না।

ঝাল খেলে কি গ্যাস্ট্রিক হয়

অনেকে জানতে চায় যে, ঝাল খেলে কি গ্যাস্ট্রিক হয়? আসলে অতিরিক্ত ঝাল খেলে গ্যাস্টিক হতে পারে। তবে আপনার যদি পূর্বে থেকেই গ্যাস্টিক থাকে সে ক্ষেত্রে আরো বেশি হতে পারে। চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার কারণে যে পেটে গ্যাস্ট্রিক হয় এই ধরনের আসলে সমস্যাগুলো অনেকেই অনুভব করে থাকে। এটা মূলত পেপটিক আলসার ডিজিজ বলা হয়ে থাকে। কেননা এটা পাকস্থলীতে গিয়ে এসিডিটি তৈরি করতে পারে। এতে গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দেয় আর পাকস্থলীতে কোথাও ক্ষত করে ফেলে যা আলসার হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঝাল খেলে পেটব্যথা করতে পারে এবং ফাঁপা দেওয়া বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। যদি আপনার আলসার থাকে তাহলেই গ্যাসের সমস্যা দেখা দিবে। তবে অতিরিক্ত ঝাল না খাওয়াই ভালো, কেননা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার হতে পারে।

ঝাল খেলে পেট জলে কেন

অনেকে জানতে চায় যে ঝাল খেলে পেট জলে কেন? আসলে অনেকে আমরা ঝাল খেতে পছন্দ করি কিন্তু আপনার যদি পেটে গ্যাস ঠিক থাকে তাহলে পেটের জ্বালাপোড়া করতে পারে। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাক।

পেটে পূর্বে থেকে যদি জ্বালাপোড়া থাকে অথবা গ্যাস্ট্রিকে পেট ফাঁপা এই ধরনের সমস্যাগুলো থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার অতিরিক্ত ঝাল খেলে আরো বেশি ব্যথা করতে পারে। পেটব্যথা করতে পারে এবং পাকস্থলীকে উত্তেজিত করতে পারে। এজন্য আপনার পেটের জ্বালাপোড়া করতে পারে। এছাড়াও আপনার যদি আলসার থাকে সেই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জাল খেলে আপনার পেটের আরো বেশি ব্যথা করতে পারে এবং সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশি ঝাল খাওয়ার কারণে এসিডিটি বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে এবং গলা পুড়ে যাওয়ার মত হতে পারে। তাই অতিরিক্ত জল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
এছাড়া আরো বিভিন্ন কারণে হতে পারে অনেকে নিয়মিত খাবার দাবার খায় না, একসঙ্গে অনেক গুলো ঝাল জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে, এছাড়াও খালি পেটে যদি ঝাল খেতে থাকে, তাহলে কিন্তু পেটে জ্বালা পোড়া করতে পারে। ধূমপান এবং অ্যালকোহল জাতীয় খাওয়ার পরে ঝাল খেলে দেখা যায় অতিরিক্ত ঝাল লাগতে পারে। এছাড়াও কখনোই রাত্রিতে শোয়ার পূর্বে অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার গুলো থেকে নিজেকে বিরত থাকবেন। এতে পেটে জ্বালাপোড়া কম হবে। তাই চেষ্টা করবেন অতিরিক্ত জাল জাতীয় খাবার গুলো খাবেন না।

ঝাল খেয়ে পেট ব্যথা হলে করণীয়

অনেকেই ঝাল খেতে পছন্দ করে কিন্তু পরে পেট ব্যথা হতে পারে। তাই ঝাল খেয়ে পেট ব্যথা হলে করণীয় সম্পর্কে জানা থাকলে আপনার পেট ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। চলুন কিভাবে পেট ব্যথা কমাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন সেই ক্ষেত্রে ঝাল জাতীয় খাবার গুলো বেশি পছন্দ হতে পারে অনেকের আবার মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি পছন্দ করে থাকে। এক্ষেত্রে আপনার যদি ঝালের প্রতি আকর্ষণ থাকে অবশ্যই আপনার এই আকর্ষণকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করবেন। খাদ্যের অভ্যাসের পরিবর্তন করতে হবে, চেষ্টা করবেন গুড়া মরিচের পরিবর্তে কাঁচামরিচ খাবার খাওয়া। এতে আপনার শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করবে এবং ঝালের কারণে পেট ব্যথা করবে না। তাছাড়া যদি আপনি ঝাল জাতীয় খাবার অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন সে ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে দই, শসা বা খেতে পারেন। এতে ঝাল অনেকটা কমে যাবে।

আপনি যদি কোন ঝাল জাতীয় খাবার খেতে চাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে এর সাথে চেষ্টা করবেন ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়ার। যেমন এর মধ্যে যদি সবজি থাকে বা এই জাতীয় কোন খাবার থাকে তাহলে আপনার ঝালটা অনেকটাই কমে যাবে। অতিরিক্ত যদি ঝালের কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা যায় অথবা পেট ফুলে যায় সে ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়ার, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খেতে হবে। আপনি খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বেন না, এক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ ঘন্টা হাঁটা চলাফেরা করতে হবে।

অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার পরে তাৎক্ষণিক ভাবে ঝাল কমানোর জন্য আদা বা মধু জাতীয় খাবার গুলো খেতে পারেন অথবা এগুলো হালকা গরম পানির মধ্যে মিশিয়ে খেলে ঝাল কমে যাবে। এগুলো খাওয়ার পাশাপাশি আপনি ঠান্ডা দুধ খেতে পারেন, এতে আপনার পেটের জ্বালাপোড়া অনেকটাই কমে যাবে এবং পেটকে ঠান্ডা রাখবে। তাছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। চেষ্টা করবেন অতিরিক্ত জাল খাওয়া থেকে বিরত থাকা, কেননা অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার কারণে দেখা যাবে আপনার পেটে এসিডিটি শুরু হবে। তবে ওষুধ খাওয়ার পরেও যদি কাজ না হয় তাহলে চিকিৎসকের কাছে যাবেন।

মা ঝাল খেলে শিশুর পেট ব্যথা হয় কেন

অনেকে প্রশ্ন করে থাকে যে, মা ঝাল খেলে শিশুর পেট ব্যথা হয় কেন? আসলে সেই সকল শিশুর পেট ব্যথা করবে যারা মায়ের বুকের দুধ খায়। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মা যদি অতিরিক্ত মসলা এবং ঝাল জাতীয় খাবার গুলো খায়, এক্ষেত্রে তার গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হবে। কেননা মায়ের খাবার থেকে সে পুষ্টি নিচ্ছে। এছাড়াও যে সকল শিশু বুকের দুধ খায় তাদের মা যদি ঝাল খায় সেক্ষেত্রে বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুটি খেয়ে ফেলবে, পেট ব্যথা করবে। যদিও এই ধরনের কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয় নাই। তবে এ ধারণা করা ঠিক নয় অনেকেই হয়তো এই ধারণা করে অনেক মা বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে, এতে শিশু পুষ্টি পাবে না। তাই মা যদি অতিরিক্ত ঝাল খায় এর কারণে বাচ্চার ক্ষতি হবে না।

অনেক মায়েরা দেখা যায় অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার কারণে পেটের সমস্যা ও ডায়রিয়া হয়, এক্ষেত্রে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয় কিন্তু এতে আরো বাচ্চার ক্ষতি হবে এবং পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে। এই ধরনের কোন বৈজ্ঞানিক কথা নেই যে মায়ের যেটা হবে সন্তানের হবে। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন কোন বাচ্চা যদি মায়ের বুকের দুধ খায় সে ক্ষেত্রে শিশু পুষ্টি পাবে। এক্ষেত্রে আমিষ, গ্লুকোজ ইত্যাদি জাতীয় পুষ্টি পেতে পারে। কিন্তু ঝাল জাতীয় খাবারের মধ্যে পুষ্টি থাকে না, তাই শিশু মায়ের বুকের দুধ খেলেও কোন ক্ষতি হবে না।

ঝাল খেলে পাকস্থলীতে আলসার হয়

অনেকে বলে থাকে যে, ঝাল খেলে পাকস্থলীতে আলসার হয়? আসলে এটা সত্য কথা নয়। কেননা ঝাল খাওয়ার কারণে কখনোই আলসার হতে পারে না। এটা মূলত মুখে ঘা হতে পারে তাই চলুন এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।

ঝাল খাওয়ার কারণে আলসার হবে না তবে আলসার যে কারণে হতে পারে তা হলো; অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করলে এটা পাকস্থলীতে গিয়ে আলসার বা ক্ষত সৃষ্টি করে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণে আলসার হতে পারে যেমন বিভিন্ন ধরনের ব্যথার ওষুধ খেলে আলসার হতে পারে। ঝাল খাওয়ার কারণে যে আলসার হবে তা কিন্তু নয়, তবে আপনার যদি পূর্বে থেকে আলসারের সমস্যা থাকে তাহলে ঝাল খেলে পেটব্যথা করতে পারে। তাই অবশ্যই ভালো পরিবেশে বসবাস করতে হবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা খাবার খেতে হবে এবং ব্যথা নাশক ওষুধ গুলো পরিহার করতে হবে।
এর মধ্যে এক ধরনের উপাদান থাকে যার কারণে এই সমস্যা হয় এবং পেটের ভিতর গিয়েও অনেক সময় ঝাল লাগতে পারে। তাই আপনার যদি আলসার থাকে সেক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এরপরে যখন আপনার আলসার আস্তে আস্তে সেরে যাবে তখন খেতে পারেন। তাছাড়া আরো বিভিন্ন কারণেই আলসার হতে পারে ধূমপান, মানসিক টেনশন ইত্যাদি। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিক থেকে আলসার হতে পারে কিন্তু ঝাল খাবার খাওয়ার কারণে আলসার হবে না। এটা একদমই ভুল ধারণা এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

অতিরিক্ত মসলা খেলে কি হয়

অনেকেই মসলা জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে তাই অতিরিক্ত মসলা খেলে কি হয়? অতিরিক্ত যদি আপনি মসলা জাতীয় খাবার গুলো খেলে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

আমরা রিচ খাবার খেতে পছন্দ করি বেশি অর্থাৎ মসলা জাতীয় খাবার গুলো বেশি পছন্দ করে থাকি। কিন্তু এতে আমাদের শরীরে কতটা ক্ষতিকর সেটা হয়তো আমরা জানিনা। আমরা যে কোন রান্নার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের মসলা ব্যবহার করে থাকি। বিশেষ করে হলুদ, আদা, গুড়া মরিচ, দারচিনি ইত্যাদি আরো অনেক ধরনের মসলা জাতীয় খাবার কিন্তু এগুলো যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যদি আপনি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কোন মসলাকে ব্যবহার করে থাকেন তবে এটা পরিমাণ মতো ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু যদি অতিরিক্ত ব্যবহার করা বিশাল স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

আমরা রান্নার ক্ষেত্রে হলুদ ব্যবহার করি কিন্তু এর মাঝে এক ধরনের কারকিউমিন থাকে, এর রং এবং গন্ধ হয়ে থাকে। যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার কারণে ওষুধ কাজ করে না। এছাড়াও অতিরিক্ত হলুদ খাওয়ার কারণে আমাদের লিভার কিন্তু নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ১ চামচ হলুদ ব্যবহার করা যেতে পারে তবে এর বেশি ব্যবহার করা যাবে না। যদি দারুচিনি মসলাটা রান্নাতে ব্যবহার করতে চান সেক্ষেত্রে অনেক স্বাদ এবং গন্ধ হবে এক্ষেত্রে শরীরের অনেক উপকার রয়েছে। তবে যদি কোন ওষুধ খাচ্ছেন তাহলে মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা।

বেশি ঝাল খাওয়ার উপকারিতা

এতক্ষন আমরা জেনেছি গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে কি হয়? এখন জানবো বেশি ঝাল খেলে কি হয় ও উপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হোক উপকারিতা

অতিরিক্ত ক্যালরি এবং চর্বি জাতীয় খাবার গুলো পরিহার করতে হবে এবং ক্যাপসাইসিন যুক্ত খাবার গুলো খেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। এর মাঝে যেমন জিরা দারুচিনি, হলুদ এবং মরিচ জাতীয় মসলাগুলো আপনি খেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে। তাছাড়া আমরা দেখি গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময় সর্দি কাশি লেগে থাকে, এই সময়ে অতিরিক্ত ঝাল খেলে আপনার পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই গুড়া মরিচের পরিবর্তে আপনি কাঁচা মরিচ খেতে পারেন।

কাঁচা মরিচের ঝাল খেলেও আপনার শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করবে। যার কারণে সর্দি কাশি দূর করতে সাহায্য করবে এবং আপনার গর্ভস্থ শিশুর ঠান্ডা থেকে বিরত থাকবে। তাছাড়া যারা সাইনোসাইটিস, হাঁপানি রোগী রয়েছেন তাদের নাক বন্ধ হয়ে যায় এই ধরনের রোগীগুলো সাধারণত ঝাল খাওয়া যাবে। তবে অবশ্যই কাঁচা মরিচ খেতে হবে। অনেকেই বলে থাকে যে অতিরিক্ত ঝাল বা মসলা জাতীয় খাবার গুলো খেলে সাধারণত সেরোটোনিন হরমোন নিয়ন্ত্রণ থাকে যার কারণে আমাদের রাগ কম হয়। যদিও এর কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা

আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে কাঁচামরিচ খেতে পারেন। কেননা কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। চলুন, কাঁচা মরিচ আমাদের শরীরে কিভাবে উপকার করতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
একজন গর্ভবতী মায়ের এই সময়ে সাধারণত ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে আপনি কাঁচা মরিচ খেতে পারেন, কেননা অল্প পরিমাণ কাঁচা মরিচ খেলেও তার মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ অথবা ভিটামিন সি রয়েছে। যা আপনার সর্দি কাশি দূর করবে অথবা আপনার গর্ভস্থ শিশুর দৃষ্টি শক্তি ভালো থাকবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিবে। তাই আপনি নিয়মিতভাবে কাঁচামরিচের তরকারি বা খাবার খেতে পারেন। এতে আপনার ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হবে পাশাপাশি আপনার ঝালের তৃপ্তিটাও মিটে যাবে।

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত অনেকেরই ঝালের প্রতি আকর্ষণ থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই গুড়া মরিচ না খেয়ে কাঁচা মরিচ খেতে পারেন। এছাড়াও কাঁচা মরিচ দিয়ে বিভিন্ন সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন অথবা রান্না করে খেতে পারেন। এতে স্বাস্থ্যের জন্য উপকার হবে এবং এই ঝাল তেমন ক্ষতি করবেন না। এর মাঝে আছে ভিটামিন এ, সি, বি, আয়রন, পটাশিয়াম এবং অল্প পরিমাণে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট থাকে সেক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়ের এই আয়নের প্রচুর প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনি খেতে পারেন।
তবে আপনি যদি গ্রীষ্মের গরমে অতিরিক্ত ঘেমে যান সে ক্ষেত্রে কাঁচা মরিচ খেতে পারেন কেননা এই কাঁচা মরিচ সাধারণত আমাদের শরীরে ঘাম দূর করে। তাছাড়া আপনি যখন চর্বি জাতীয় খাবার গুলো খাবেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কাঁচা মরিচের সাথে মিক্সড করে খেতে পারেন, এতে আপনার চর্বিকে ধ্বংস করে দিতে পারবে। তাছাড়াও কাঁচা মরিচের মধ্যে যে ভিটামিন সি এবং এ, রয়েছে যা আপনার শরীরের মেদ বা ভুড়ি কমাতে সাহায্য করবে। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েদের খুবই প্রয়োজন।

কাঁচা মরিচ খেলে ত্বক এবং চুল ভালো থাকে, কেননা এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যদি আপনি প্রতিদিন একটি করে খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা থেকে কমে যাবে এবং হৃদপিণ্ড ভালো থাকবে। এর মাঝে ভিটামিন এ থাকে যা গর্ভস্থ শিশুর হাড়, দাঁত ইত্যাদি শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি থাকে এর মাঝে যা আপনার দাঁতের মাড়ি এবং চুলের নিরাপত্তা দিতে পারবে। এই কাঁচা মরিচ এর মধ্যে যে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা আপনার জ্বর সর্দি কাশি থেকে মুক্তি দিতে পারবে।

উপসংহারঃ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে কি হয়? জেনে নিন

পরিশেষে বলা যায় যে যদি আপনি গর্ভবতী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্র অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তাহলে আপনার গর্ভস্থ শিশুর ভালো থাকবে। তাই আপনার গর্ভস্থ শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার নিয়ন্ত্রণ করে খেতে হবে। এর মাঝে আপনি অতিরিক্ত গুড়া মরিচের খাবার না খেয়ে কাঁচা মরিচ জাতীয় ঝাল গুলো খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরে বিভিন্ন ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করবে। এছাড়া অনেক উপকার করে থাকে তাই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঝাল খেলে কি হয়? সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে আশা করি আপনার কাজে লাগবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url