কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানুন
ইসলামের দৃষ্টিতে মুসলমান হিসেবে কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে আমরা বাস্তব জীবনে সঠিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারব। চলুন, কোরআন ও হাদিসের শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রত্যেক মুসলমানের ইসলামী শিক্ষা অর্জন করা প্রয়োজন, সে হিসেবে কোরআন ও হাদিসের আলোকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তাই কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃকুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানুন
কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্ব
প্রত্যেকের শিক্ষা অর্জন করা প্রয়োজন। তাই কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে জানা থাকলে আমরা সঠিকভাবে ইসলামী শিক্ষা অর্জন করতে পারব। চলুন, কোরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
শিক্ষা একটি জাতিকে উন্নত করেতে পারে। যদি কোন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে থাকে তাহলে দেশটা ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে। কেননা যত সুশিক্ষিত হবে সে দেশটি তত উন্নত হতে থাকবে। এজন্য কোন একটা জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করলেই যথেষ্ট। এক্ষেত্রে দেখা যেত কোন জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার শত্রুপক্ষ লাইব্রেরীকে ধ্বংস করছে, যাতে করে তাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কৃতি ঐতিহ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্ম না জানতে পারে। তাই কোরআন হাদিসের শিক্ষা ব্যবস্থা জাতির জন্য সঠিক পথ।
ইসলামী শিক্ষা অর্জন করা মুসলমানদের জন্য খুবই প্রয়োজন। কেননা ইসলামী জ্ঞান ছাড়া নৈতিকতা অর্জন করতে পারবে না। যেহেতু রাসুল সাঃ এর উপর ওহী নাযিল হয়েছিল তিনিও কিন্তু শিক্ষা অর্জন করেছেন। কেননা আল্লাহতালা সূরা আলাকের ১ থেকে ৫ নাম্বার আয়াত তাঁর ওপর নাযিল করে বলেছিলেন, পড়ো তোমার রবের নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। তাই রাসূল করীম সাঃ এর শিক্ষক ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। তিনিও কিন্তু আল্লাহর মাধ্যমে শিক্ষা এবং জ্ঞান অর্জন করেছেন। তাই আমাদের উচিত কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষা অর্জন করা।
মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে শিক্ষা অর্জন করার জন্য রাসূল সাঃ এর উপর কোরআন মাজীদ নাযিল করেছেন। কোরআন আমাদের এমন একটি সংবিধান যার মাধ্যমে আমরা জীবন পরিচালনা করতে পারব। ইহকালে শান্তি ও পরকাল মুক্তি পাওয়া যাবে। তাই কোরআন ও হাদিসের আলোকে আমাদের জীবন গড়তে হবে। তাহলেই আমরা সুশিক্ষিত হতে পারব। কেননা আল্লাহতালা এই মানব জাতিকে হেদায়েতের জন্য সঠিক পথ অনুসন্ধান করতে বলেছেন যা কোরআন ও হাদিসের আলোকে সঠিক পথ আপনি পাবেন। আল্লাহতালা কোরআন নাযিল করেছেন সত্য মিথ্যার পার্থক্য হিসেবে।
সূরা বাকারার মধ্যে মহান আল্লাহতালা কোরআন মাজীদের শিক্ষা সম্পর্কে বলেছেন যে প্রত্যেক প্রত্যেক মুসলমানের শিক্ষা অর্জন করা ফরজ। এটা তিনি কোরআনের মাধ্যমেই ঘোষণা দিয়েছেন। এই পৃথিবীতে আমরা যদি সংবিধান হিসেবে জীবন যাপন করতে চাই, তাহলে কোরআনের আলোকে জীবন যাপন করতে হবে। কেননা কোরআন হলো আমাদের মুক্তির মহাসনদ, এতে আমাদের জীবনধারা কর্মপদ্ধতি আদর্শ ত্যাগ সাধনা সফলতা সকল কিছুই দিকনির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। তাই আমাদের অবশ্যই কোরআন ও হাদিসের আলোকে জীবন যাপন করতে হবে।
ইসলাম মানুষের সব সময় সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য আহ্বান করে থাকে, যেন অজ্ঞতার যুগ থেকে তারা বেরিয়ে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়। ইসলামীভাবে জীবন যাপন এবং ইসলামী শিক্ষা অর্জন করলে আমাদের ইহকালীন কল্যাণময় হবে। এছাড়াও মানুষের আত্মার পূর্ণতা বিকাশ পাবে। যে শিক্ষা অর্জন করে সে সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারবে। এছাড়াও কারো উপরে অত্যাচার জুলুম নির্যাতন থেকে দূরে থাকতে পারবে। সেক্ষেত্রে কোরআন ও হাদিসের আলোকে জীবন গড়তে হবে। সূরা বাকারায় বলা হয়েছে প্রত্যেকটা মানুষকেই দ্বীনের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কল্যাণ রয়েছে।
শিক্ষা সম্পর্কে রাসূল করীম সাঃ বলেছেন যদি কোন ব্যক্তি ইসলামকে সঠিকভাবে জানতে চায় তাহলে অবশ্যই তার ইসলামী জ্ঞান থাকতে হবে। শিক্ষা বিষয়ে মহান আল্লাহতালা অনেক আয়াত নাজিল করেছেন এছাড়া হাদীসে অনেক বর্ণনা রয়েছে। শিক্ষার প্রতি অনেক গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করেছে। তাই শিক্ষিত জাতি আসলে উন্নয়ন করতে পারবে, এজন্য ইসলামী জ্ঞানের প্রয়োজন। কেননা ইসলামী জ্ঞান ছাড়া কখনোই পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবেন না। কেননা মহান আল্লাহ তায়ালা রাসূল করীম সাঃ কে শিক্ষিত করার জন্য ওহী নাযিল করেছিলেন।
মহান আল্লাহ ও রাসূল করিম সাঃ মানব জাতিকে ইসলামী জ্ঞান অর্জন করার জন্য গুরুত্ব দিয়েছেন। রাসূল করীম সাঃ ইসলামী জ্ঞান সম্পর্কে প্রচুর পরিমাণে হাদিসে বর্ণনা করেছেন। কেননা তিনি বলেছেন প্রত্যেকটা নর-নারীর উপরে শিক্ষা অর্জন করা ফরজ। (ইবনে মাজাহ)। তাই একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আমাদেরকে ইসলামী জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তাহলে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা থাকবে না। যদি কেউ কোরআন হাদিস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন না করতে পারে তাহলে সে সত্য মিথ্যার পার্থক্য করতে পারবেনা। ইসলামের প্রতি তার চিন্তা-ভাবনা গোড়ামী থাকবে এবং একঘেয়েমিতা থাকবে।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত
শিক্ষা প্রত্যেকেরই অর্জন করা প্রয়োজন। তবে কুরআন ও হাদিসের আলোকে মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা যাক।
মাদ্রাসা শিক্ষা মূলত আমাদের দ্বীনি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান বলা হয়ে থাকে। মুসলমান হিসেবে আমাদের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অর্জন করা যেতে পারে। যদিও মহানবি সাঃ এর সময় মাদ্রাসা ছিল না। তিনি স্বয়ং মহান আল্লাহতালার থেকে শিক্ষা অর্জন করেছে, ওই সময় প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা অর্জন ছিল না। এক্ষেত্রে আপনি বলতে পারেন যে নবী করীম সাঃ প্রাতিষ্ঠানিক কোনো জ্ঞান অর্জন করে নাই, তাই মাদ্রাসা শিক্ষার প্রয়োজন নাই। কিন্তু অবশ্যই মাদ্রাসা শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। এই মাদ্রাসার মাধ্যমে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ইসলামী জ্ঞান অর্জন করতে পারে। এই জন্য মাদ্রাসা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে সাধারণত কোরআন হাদিসের আলোকে আলেম-ওলামাগণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ইসলামী শরীয়তের বিধানগুলো বুঝাতে পারেন এবং সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। এভাবেই দ্বীনের প্রচার-প্রচারণার করা যেতে পারে এবং দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা প্রয়োজন। তাছাড়া প্রথম দিকে মাদ্রাসাগুলো সাধারণত মানুষের অনুদানে চলতো, সেক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হত। তাই মুসলমানদের দায়িত্ব হল এই মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখা। তাহলে সবাই নামাজসহ ইসলামের শরীয়তের বিষয়গুলো জানতে পারবে।
শিশুদের কোরআন শিক্ষার গুরুত্ব
প্রত্যেকটা মুসলিম শিশুদের কোরআন শিক্ষা করতে হবে। তাই শিশুদের কোরআন শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কেও জানা প্রয়োজন। কেননা কোরআন শিক্ষা ছাড়া ইসলামী জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়। চলুন, এ কোরআন শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
যেহেতু রাসূল করীম সাঃ বলেছেন প্রত্যেকটা মুসলমানের জন্য জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এজন্য কুরআনের শিক্ষা আলোকিত হতে হবে। এছাড়াও রাসুল করিম সাঃ বলেছেন, যদি কেউ ইসলামে জ্ঞান অর্জন করতে পারে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই তার জন্য জান্নাতের রাস্তা খোলা থাকবে। এছাড়াও আরো হাদিসে বর্ণনা আছে যে যদি কোন ব্যক্তি কোরআন পড়ল এবং সেই অনুযায়ী আমল করল। তাহলে সে যেন কিয়ামতের দিন তার বাবা-মাকে মুকুট পড়ানো হবে। যেটার সূর্যের আলোর চেয়েও অত্যন্ত উজ্জল হবে। তাই এই কোরআনের জ্ঞান অর্জন করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণনা করেছেন যে রাসুল করীম সাঃ বলেন শিশুকালে যদি কোন ব্যক্তি কোরআন শিখতে পারে তাহলে তার এই কোরআন তার রক্ত গোশতের সাথে মিশিয়ে যেতে পারে। যা তার বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত মনে থাকবে এবং অনেক সওয়াব পাওয়া যাবে। তাছাড়াও আরো হাদিসে বলা হয়েছে যে তোমরা নিজেদের সন্তানদেরকে অবশ্যই কোরআন তেলাওয়াতের জন্য উৎসাহিত করবে। তাহলে আল্লাহতালার আরশের ছায়ায় পাবে এবং আল্লাহতালার আলিঙ্গন পাবে। সকল হাদিসের মতে বোঝা যায় যে শিশুকালে কোরআন শিক্ষা করলে সেই কোরআন শিক্ষা মনে থাকে।
তাই এই সময়ই শিক্ষা অর্জন করা কোরআনের শিক্ষা অর্জন করা খুবই প্রয়োজন। তাছাড়াও লোকমান হাকিম তিনি তার সন্তানকে অল্প বয়সেই কোরআনের শিক্ষা অর্জন করতে বলেছিলেন এবং এই শিক্ষা নিয়ে কারো সাথে গর্ব করতে মানা করেছিল। মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্য কখনোই কোরআন হাদিসের শিক্ষা অর্জন করা যাবে না। এ ধরনের তিনিও তার সন্তানকে উপদেশ দিয়েছিলেন, সর্বোপরি বলা যেতে পারে যে অবশ্যই একটা শিশুকে কোরআনের শিক্ষায় আলোকিত করলে সবচাইতে সুশিক্ষিত হতে পারবে এবং ইসলাম সম্পর্কে সে সঠিক ধারণা পাবে।
মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
মাদ্রাসা শিক্ষা অর্জন করা মুসলমান হিসেবে প্রয়োজন। কেননা মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই আপনার শিশুকে অবশ্যই মাদ্রাসা শিক্ষা অর্জন করানোর চেষ্টা করবেন। চলুন, এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
যেহেতু একজন আলেম হতে গেলে দ্বীন ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো জানতে হবে। সে ক্ষেত্রে মাদ্রাসা শিক্ষা অর্জন করতে হবে। তবে বর্তমানে প্রেক্ষাপটে দ্বীন ইসলামের শিক্ষা অর্জন করার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অর্জন করা প্রয়োজন। কেননা রাসূল করীম সাঃ এর যুগে লোকজন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করার চাইতে রাসুল করীম সাঃ এর নিকটবর্তী গিয়ে তারা শিক্ষা অর্জন করেছে। যার কারণে যদি একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা যায় সেখানে অনেক আলেম-ওলামা আসবেন এবং ছাত্রছাত্রীরা তাদের নিকটবর্তী মাদ্রাসার শিক্ষা অর্জন করতে পারবে এবং ইসলামের জ্ঞান সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে।
স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা মহানবী সা কে সুশিক্ষিত করেছিলেন কিন্তু রাসূল করীম সাঃ যুগে অনেক সাহাবীদেরকে তিনি শিক্ষা অর্জন করেছেন। এজন্য তাদের মাঝে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন হয় নাই কিন্তু এভাবে খুবই অল্প মানুষকে শিক্ষিত করা যেতে পারে। আর যদি মাদ্রাসার শিক্ষা বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা অর্জন করা যায় সে ক্ষেত্রে ইসলামের বিষয়গুলো অনেক মানুষের মধ্যে প্রচারণা করা যেতে পারবে। ইসলামের শরীয়তের বিধানগুলি বুঝতে যদি সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই আলেম-ওলামার কাছে যেতে হবে। এজন্য মাদ্রাসা শিক্ষা সঠিক জ্ঞান ধারণা নিতে হবে।
কোরআনের গুরুত্ব ও ফজিলত
মুসলমান হিসেবে অবশ্যই আমাদের কোরআন ও জ্ঞান থাকতে হবে। তাই কোরআনের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্ক আমাদের জানতে হবে। তাহলেই আমরা সঠিকভাবে ইসলামের দিন প্রতিষ্ঠা করতে পারব। চলুন, কোরআনের গুরুত্ব এবং ফজিলত রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
মহান আল্লাহতালা প্রিয় নবী এর উপর কোরআন নাজিল করেছেন, আর কোরআন অনুযায়ী আমাদের জীবন যাপন করতে হবে। কেননা কোরআন নাজিলের পূর্বে লোকজন অন্ধকার যুগে বসবাস করেছে তাদেরকে আলোর পথে নিয়ে আসার জন্যই এই কোরআনের অবতরণ করা হয়েছে। এই কোরআনের ভিতরে সুস্পষ্ট ভাবে মহান আল্লাহতালা শান্তির পথ দেখিয়েছেন এবং অন্ধকার থেকে কিভাবে আলোর দিকে বের হবেন সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া মহান আল্লাহতালা সঠিক সরল পথের দিকে হেদায়েতের জন্য আলোচনা করেছেন। সূরা মায়েদার ভিতরে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
যেহেতু কুরআন অনুযায়ী যদি জীবন যাপন করে তাহলে আমরা একটা পূর্ণাঙ্গ জীবন যাপন করতে পারব। যা আমাদের ইহকালীন শান্তি এবং পরকালের মুক্তি পাওয়া যাবে। যদিও আমরা অনেকে এই কোরআন শিক্ষা থেকে দূরে রয়েছি, আমরা পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রতি বেশি আগ্রহ কিন্তু মুসলমান হিসেবে আমাদের এই কোরআনের শিক্ষা অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। যদি কোরআন তেলাওয়াত করি সে ক্ষেত্রে ঈমান মজবুত হবে। কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেছেন যে তোমরা যদি এই কোরআন তেলাওয়াত করো তাহলে তোমাদের অন্তরে আল্লাহতালার ভয় আসবে এবং আয়াতগুলো পাঠ করলে ঈমান বৃদ্ধি পাবে।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব
আমরা মুসলমান হিসেবে কুরআন ও হাদিসের আলোকে নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে আমাদের নৈতিক পরিবর্তন হবে এবং ইসলামের সঠিক পথে জীবন যাপন করতে পারব। চলুন, নৈতিকতা শিক্ষা সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের আলোকে আলোচনা করা যাক।
ইসলামী জ্ঞান যদি কারোর মধ্যে থেকে থাকে তাহলে সে নীতিবান মানুষ হিসাবে গড়ে উঠবে এবং নৈতিক জ্ঞান তার ভিতরে ফুটে উঠবে। আল্লাহ চরিত্রবান লোকদেরকে অনেক ভালোবাসেন অর্থাৎ মহান আল্লাহতালা বলেছেন যে দিনের বেলায় রোজা রাখে এবং রাত্রিতে জেগে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়ে তাদের সমপর্যায়ে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কেননা রাসূল সাঃ বলেছেন আল্লাহর কাছে সবচাইতে প্রিয় মানুষ হলো তারাই যাদের চরিত্র সুন্দর। তাই চরিত্র আদর্শবান হতে গেলে অবশ্যই আপনাকে ইসলামিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। কোরআন হাদিসের আলোকে জীবন যাপন করতে হবে।
আপনি যদি উত্তম চরিত্র মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেন, এর পুরস্কার মহান আল্লাহতালা নিজেই দিবেন। তিনি বলেছেন যে তোমরা স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণ করো এবং সৎভাবে জীবন যাপন করার চেষ্টা করবে। এছাড়াও মহান আল্লাহতালা সতী নারীদের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তাছাড়া উত্তম চরিত্র মানুষকে আল্লাহতালা পছন্দ করেছেন এবং তাদের হেদায়েত ভয়-ভীতি এবং অভাব মুক্ত করে দেন। তাই আল্লাহতালা বলেছেন, হে নবী করীম সাঃ আপনি মুমিন পুরুষদেরকে বলে দেন, যেন তারা নিজেদের দৃষ্টিকে ঠিক রাখে এবং তাদের গোপনাঙ্গ হেফাজত করতে পারে।
কোরআন ও হাদিসের আলোকে সমাজ সেবার গুরুত্ব
মুসলমান হিসেবে দায়িত্ব হল কোরআন ও হাদিসের আলোকে সমাজ সেবার গুরুত্ব সম্পর্কে জানা। চলুন, সমাজের প্রতি আমাদের কি দায়িত্ব বা গুরুত্ব সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানা যাক।
সমাজের বুকে যারা দরিদ্র এবং অসহায় মানুষ রয়েছে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। সমাজের ভেতরে অনেকে ক্ষুধার্ত রয়েছে বা তৃষ্ণার্ত রয়েছে তাদেরকে খাদ্য এবং পানির ব্যবস্থা করবেন। যারা বিধবা রয়েছে তাদেরকে সাহায্য করতে হবে, অসুখ-বিসুখে যারা রয়েছে তাদের সেবা করা লাগবে। যারা আশ্রয় পাচ্ছে না তাদেরকে আশ্রয় দিতে হবে, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। রাস্তাঘাট,সেতু নির্মাণ করতে হবে, সন্ত্রাস নির্মল করতে হবে সামাজিক শান্তি স্থিতিশীলতা এগুলো রক্ষা করতে হবে। মূলত মুসলমান হিসেবে এই কাজগুলো করা অবশ্যই সমাজের সেবা করার গুরুত্বপূর্ণ।
রাসূল করীম সাঃ অবশ্যই মানুষের সেবা কর্ম করেছেন তাই সমাজের বুকে মানুষের সেবা করতে হবে। অসহায় গরীব নিরুপায় বিধবা অসুস্থ ব্যক্তি রয়েছে তাদের অবশ্যই পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরা মুসলিম হিসাবে সমাজের কোন অসুস্থ ব্যক্তি বা রোগীর খোঁজখবর নিতে হবে। মহানবী সাঃ নিজেও বিভিন্ন রোগী দেখতে যেতেন। আল্লাহর কাছে তিনি প্রার্থনা করতেন এবং তাদের সুস্থতার জন্য দোয়া করতেন। সমাজে যে সকল যুবক রয়েছে তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া প্রয়োজন, যেমন কিভাবে ইসলামের দৃষ্টিকোণে ফেসবুক থেকে ইনকাম করা যায় সেই পদ্ধতি শিখানো যেতে পারে।
ইসলামে দায়িত্ব ও কর্তব্য
আমরা মুসলমান হিসেবে ইসলামে দায়িত্বও কর্তব্য রয়েছে, সেই অনুযায়ী আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। চলুন, ইসলাম আমাদের কি দায়িত্ব ও কর্তব্য দিয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
ইসলামের দৃষ্টিকোণে অবশ্যই সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিটি মানুষের মুসলমান হিসেবে আমাদের মানুষকে সাহায্য করা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো এটা আমাদের ইসলামের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। কেননা মহান আল্লাহতালা কোরআনে বলেছেন তোমরা সৎ কর্ম এবং পরহেজগারিতা একে অপরকে সহযোগিতা করবে এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনের সহযোগিতা করবে না। আল্লাহকে ভয় করবে নিশ্চয়ই মহান আল্লাহতালা শাস্তি প্রদান করবেন। এই আয়াতের মাধ্যমে বান্দাকে ন্যায়ের পথে মানুষকে আহ্বান করতে বলেছেন এবং অন্যায়ের পথে মানুষকে নিষেধ করেছেন।
তাছাড়া ইসলামের আরো একটি দায়িত্ব রয়েছে মুসলমান হিসেবে গরিব এবং অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ান এবং সহযোগিতা করা ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী আমাদের এটা মৌলিক দায়িত্ব। কেননা আমরা সামাজিকভাবে বসবাস করে থাকি সম্প্রদায়ের মাঝে কেউ অসুস্থ এবং দুস্থ গরিব মানুষ থাকতে পারে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। এক্ষেত্রে মহান আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই বলেছেন যে তোমাদের যে সম্পদ দেয়া হলো সেখান থেকে কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পত্তি গরিব এবং অসহায়ের হক রয়েছে। এই সম্পত্তি থেকে অবশ্যই অসহায় মানুষদেরকে সহযোগিতা করতে হবে তাহলে সমাজে দারিদ্রতা বিমোচন হবে
ইসলামের দৃষ্টিকোণ এবং আমাদের দায়িত্ব হল প্রত্যেকটা মানুষের পারিবারিকভাবে আত্মীয়-স্বজন যারা রয়েছেন তাদের দেখাশোনা করা। যেমন পিতা-মাতা সন্তান-সন্ততি আত্মীয়-স্বজন যারা রয়েছে তাদের প্রতি সাহায্য করা এবং তাদের বিপদে-আপদে সহযোগিতা করা। মহান আল্লাহতালা বলেছেন যে তোমাদের পিতা মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো, বার্ধক্য তাদের পাশে দাঁড়াবে এবং তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করবে না, ধমক দিয়ে কথা বলবে না, নম্র ভদ্রতার সাথে কথা বলবে। (সূরা আল ইসরা আয়াত নাম্বার ২৩)। এখানে আল্লাহতালা পিতা মাতার প্রতি দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে বলেছেন।
আমরা মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রতিবেশীর একটা অধিকার রয়েছে, তাদের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। কেননা এ সম্পর্কে কোরআন হাদিসে অসংখ্য আলোচনা রয়েছে। যদি কোন ঈমানদার ব্যক্তি সে ক্ষেত্রে তার ঈমান থাকবে না যদি তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত অবস্থায় থাকে, তাদেরকে যদি খাবার না দেওয়া হয়। (সহি বুখারি হাদিস)। তাই এই হাদিসের মাধ্যমে বলা হয়েছে আপনার প্রতিবেশীদের দারিদ্রতার কারণে সে না খেয়ে থাকে বা তার সন্তানাদি অনাহারে আছে আর আপনি ভালো খাবার খাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে যদি তাদেরকে না দেওয়া হয়, তাহলে আপনার ঈমান থাকবে না, তাদের সুখে দুখে পাশে থাকতে হবে।
উপসংহারঃ কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানুন
পরিশেষে বলা যায় যে আমরা মুসলিম হিসেবে অবশ্যই কোরআন হাদিসের শিক্ষা অর্জন করতে হবে। তাহলেই সঠিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারব। তাই আমাদের প্রত্যেকটা শিশুকেই প্রাথমিক পর্যায়ে কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষা অর্জন করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। তাহলে তারা নৈতিকতা ও সৎ চরিত্রবান হিসাবে জীবন যাপন করতে পারবে। তাই কুরআন হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে আর্টিকেলে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি, আশা করি আপনার বাস্তব জীবনে কাজে লাগবে। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url