পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনে চিকিৎসা নিন

প্রায় নারীদের পিরিয়ডের সময় সাধারণত কোমর ব্যথা করে। তাই পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা কমানোর উপায় যদি জানতে পারেন, তাহলে এই ব্যথা কমানো সম্ভব। চলুন, এই ব্যাথা কিভাবে কমাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
কিছু নারীর পিরিয়ডের সময় প্রচন্ড পরিমাণ ব্যথা করে যা সহ্য করার মতো নয়। এই ব্যথা কমানোর জন্য কিছু প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে। তাই পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃপিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনে চিকিৎসা নিন

পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা কমানোর উপায়

নারীদের সাধারণত এই সময়ে প্রচণ্ড পরিমাণ কোমর ব্যথা করে থাকে। তাই পিরিয়ডের সময় কোমর ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানলে আপনি অনেকটাই উপশম অনুভব করতে পারবেন। চলুন, কিভাবে এই সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

এ সময় জরায়ুতে প্রচন্ড পরিমাণ চাপ লাগতে পারে যার কারণে পেটে যন্ত্রণা করে থাকে এবং এই ব্যথা প্রচন্ড পরিমাণে ছড়িয়ে যায় কোমর এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে। এ ধরনের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় জানা প্রয়োজন। আপনি চাইলে ওষুধের মাধ্যমে ব্যথা কমাতে পারেন আবার ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমেও ব্যথা কমানো যায়। চলুন, ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমে কিভাবে ব্যথা কমাবেন সেই সম্পর্কে জানা যাক। এই সময়ে ব্যথা কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো হট ওয়াটার ব্যাগ অর্থাৎ গরম পানির সেক দিতে পারেন। তাছাড়া কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে পারেন।

পিরিয়ডের সময় গরম পানি অথবা গরম চা খেলে খুবই উপকার পাওয়া যায় এবং ব্যথা অনেকটা কমে যায়। আদা কুচি কচি করে চায়ের সাথে মিক্সড করে খেতে পারেন। এ সময়ে অনেকে ব্যায়াম করতে পারে না অনেক কষ্ট হয়ে থাকে। এজন্য হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে এবং হাঁটা যেতে পারে। এতে আপনার ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। এ সময়ে অত্যন্ত মানসিক টেনশন হয়ে থাকে, যার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম দিতে হবে এবং বিশ্রাম নিতে হবে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। বিভিন্ন ফলের রস ও শরবত খাওয়া লাগবে। ভিটামিন যুক্ত খাবার গুলো খেলে শরীরে উপকার মিলবে।

এ সময় আপনি হারবাল চা খেতে পারেন, এর কারনে আপনার পিঠ ও কোমর ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। তাছাড়া লেবু দিয়ে চা খাওয়া যেতে পারেন, এতে আপনার অনেকটা ক্লান্তি ভাব কমে যাবে। এ সময়ে সাধারণত ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে। বাইরের প্রসেসিং খাবার গুলো খাবেন না, এই ধরনের খাবার খেলে আরো আপনার কোমর ব্যথা আরো বৃদ্ধি পাবে। এ সময়ে যেহেতু শরীর থেকে অনেক ধরনের পুষ্টি বের হয়ে যায়। এজন্য পুষ্টিকর ফল কলা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা আপনার শরীরের পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করবে।

পিরিয়ডের সময় আপনি আদার রস এর মধ্যে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা গরম পানি করেও এর মধ্যে মধু আদা কুচি কুচি করে নিয়ে অল্প পরিমাণ করে খেতে পারেন। এতে আপনার ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। এতে আপনার ব্যথা কমার পাশাপাশি খাদ্য হজমের ক্ষেত্রেও দারুণ কাজ করে থাকে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে যা আপনার পুষ্টির চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি এটা বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। তাই আপনার এই সময়ে কাঁচা পেঁপে খেতে পারবেন, তাহলে দেখবেন আপনার এই ব্যথা অনেক কমে যাবে।

এই সময় প্রচুর পরিমাণে পেটের ব্যথা হওয়ার জন্য কয়েক ফোটা লেভেন্ডার অয়েল নিয়ে ব্যথা স্থানে মালিশ করতে পারেন। এভাবে ১৫ মিনিট মালিশ করলে দেখবেন আপনার ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার গুলো বেশি বেশি খাবেন, তাহলে আপনার শরীরের পুষ্টি অভাব হবে না যেমন সামুদ্রিক মাছ, ডিম সবুজ শাকসবজি মটরশুঁটি বাদাম দই কমলা লেবু কলা ইত্যাদি। এই ধরনের ফলগুলো যদি আপনি এই সময়ে খান তাহলে আপনার ব্যথা দূর হবে এবং তলপেটে ব্যথা করবে না। কেননা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বিভিন্ন ধরনের ব্যথা বা প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে।

গোলমরিচ মেথি এবং কাঁচা হলুদ মিশিয়ে যদি আপনি খেতে পারেন, তাহলে অনেকটাই ব্যথা কমে যাবে। এজন্য দুই কাপ পানি দিবেন এবং এক চামচ করে গোল মরিচ গুঁড়ো মেথি ও হলুদ নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করবেন। এরপরে কিছুক্ষণ পানিটুকু ফুটিয়ে নিবেন তারপরে ভালো করে ছেকে নিতে হবে। এরপরে অল্প অল্প করে খেতে থাকেন এই ধরনের ব্যথা শরীরে ফ্যাট জমতে পারে, এর মাঝে চিনি থাকে না এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা তলপেটের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

অ্যালোভেরা রস এর সাথে মধু মিশিয়ে জুস বানিয়ে খেতে পারেন এই সময় এই জুস খেলে ব্যথা কমতে পারে। দিনে দুই থেকে তিনবার এটা খেতে পারেন এতে আপনার ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। এ সময় প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় এবং পানি বেশি বেশি খেতে হবে কারণ এই সময় শরীরের পানি সল্পতা দেখা দিতে পারে। এ সময়ে সাধারণত ভাজা পোড়া খাবার গুলো খাবেন না। প্রচুর পরিমাণে পানি ও খনিজ পদার্থ যুক্ত খাবার গুলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এ সময়ে এই ধরনের ব্যথা দূর করার জন্য যেখানে ব্যথা করে তার চারপাশে হালকা ভাবে মেসেজ করতে পারেন।

এই সময়ে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে নারিকেলের তেল কেননা এর মাঝে এন্টি এক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়াও এন্ট্রি ইনফ্লেমেটরি থাকে এরপরে লিনোলিক এসিড রয়েছে যা এই তেলের মাধ্যমে যদি আপনি মাসাজ করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার তলপেটের ব্যথা এবং এই পিরিয়ডের ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। পিরিয়ডের সময় কাজকর্ম একটু কম করতে হবে, মানসিকভাবে প্রশান্তি থাকার জন্য আরাম করা যেতে পারে এবং যোগ ব্যায়াম করতে পারেন এছাড়াও মানসিক চাপ যেন না আসে সেজন্য বিশ্রাম নেবে।

এ সময় সাধারণত টাইট পোশাক পরবেন না কেননা এতে আপনার তলপেটে চাপ লেগে যেতে পারে। এতে আরো ব্যথা বৃদ্ধি পেতে পারে, সেজন্য ঢেলেঢালা পোশাক এবং সুতির জামা কাপড় পড়ার চেষ্টা করবেন যেন চলাফেরা করতে অসুবিধা না হয়। এ ধরনের ব্যাথা দূর করার জন্য ব্যায়াম করতে পারেন এজন্য বুকের উপর এক হাত এবং পেটের উপরে আরেকটি হাত রেখে নাক দিয়ে বড় বড় করে শ্বাস নিতে থাকেন। এভাবে শ্বাস নেওয়ার কারণে বুকের পেট ফুলে যেতে পারে, এভাবে আবার ছেড়ে দিবেন দেখবেন আপনার পেটের ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url