কানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয় ও বেতন কত জেনে নিন
অনেকে জানতে চায় যে, কানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয়? তাই কানাডা যাওয়ার জন্য কত টাকা লাগতে পারে, এটা নির্ভর করে ভিসা ক্যাটাগরির উপরে। চলুন, কানাডায় ভিসা করার জন্য কত টাকা লাগতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ কানাডাতে বিভিন্ন ভিসার মাধ্যমে যায় কিন্তু তারা অনেকেই জানে না যে কানাডার যাওয়ার জন্য কত টাকা খরচ হতে পারে। তাই কানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয়? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃকানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয় ও বেতন কত জেনে নিন
কানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয়
বাংলাদেশ থেকে অনেকেই কানাডা যেতে চায় কিন্তু তারা জানতে চায় যে, কানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয়? কানাডায় যাওয়ার জন্য কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হলো।
উন্নত দেশগুলোর মধ্যে এই দেশটি একটি উন্নত দেশ। প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ এদেশে কাজের উদ্দেশ্যে আসে। বিভিন্ন কাজে আসে কেউ ফার্মের ভিসা মাধ্যমে কাজ করার জন্য আসে, কেউ পড়াশোনার জন্য আসে, কেউ ভ্রমণ করতে কিংবা চিকিৎসা করার জন্য এদেশে আসে। তবে এ দেশে আসার আগে অবশ্যই যোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া দরকার।
অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে এই দেশটি অনেক উন্নত যার কারণে এ দেশে অনেক বেতন দিয়ে লোকজনদেরকে কাজ করিয়ে থাকে এবং ভালো মানের শিক্ষা অর্জন করা যেতে পারে। তাছাড়া উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাও আছে।
এই দেশে যাওয়ার জন্য আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে, সেটা নির্ভর করবে ভিসার ক্যাটাগরির অনুযায়ী। কয়েক ধরনের ভিসার ক্যাটাগরি আছে চলুন, ক্যাটাগরি গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- জব ভিসায় যাওয়া যাবে
- স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে পারবেন
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়া যাবে
- কৃষি ভিসায় যেতে পারবেন
- শ্রমিক ভিসায় যাওয়া যাবে
- লেবার ভিসায় যেতে পারবেন
- মেকানিক্যাল ভিসায় যাওয়া যাবে
- বিজনেস ভিসায় যেতে পারবেন
- ড্রাইভিং ভিসায় যাওয়া যাবে
- চিকিৎসার ভিসায় যেতে পারবেন
- ফ্রি ভিসায় যেতে পারবেন
টুরিস্ট বা ভিজিট ভিসা খরচঃ আপনি যদি এই দেশটিতে ভ্রমণ করতে যেতে চান সেই ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত থাকা যাবে। এই ভিসার মেয়াদ হয়ে থাকে ৩ মাস অর্থাৎ ৯০ দিন এবং সর্বোচ্চ ৬ মাস। এজন্য এই ভিসার দাম হবে ৪ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচঃ এদেশে যদি আপনি স্থায়ীভাবে যে কোন কাজ করার চিন্তা ভাবনা করে থাকেন, তাহলে আপনাকে এই ভিসায় যেতে হবে। এটা মূলত কাজের ভিসার জন্য অনুমতি দিয়ে থাকে, এছাড়া আপনি এই ভিসার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে এখানে কাজ করতে পারবেন এবং বসবাস করতে পারবেন।
এজন্য অবশ্যই আপনার কিছু শর্ত থাকবে, তার মধ্যে ব্যাংক ব্যালেন্স থাকতে হবে। এছাড়া আপনার একাউন্টে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকার মত থাকতে হবে। তাছাড়া আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে এই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। সর্বোপরি সব মিলিয়ে এই ভিসায় যাওয়ার জন্য খরচ হবে ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকার মত।
স্টুডেন্ট ভিসা খরচঃ এ দেশটি যেহেতু উন্নত একটি রাষ্ট্র তাই অনেক ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যেখানে আপনি পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে পারেন এবং এই দেশটিতে পড়াশোনার পাশাপাশি আপনি পার্ট টাইম জব করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন, তাছাড়া এখান থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশেই লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিবছরে কাজ করে থাকে।
এজন্য আপনাকে সর্বনিম্ন এইচএসসি পাস করতে হবে এবং ভালো রেজাল্ট থাকতে হবে। এছাড়া আইইএলটিএস এর উপরে ভালো স্কোর থাকতে হবে সর্বনিম্ন আপনার ৪ পয়েন্ট তুলতে হবে। এই ভিসা করার জন্য আপনার সব মিলিয়ে খরচ হতে পারে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত।
কৃষি ভিসা খরচঃ এ দেশটি যেহেতু উন্নত এবং কৃষির দিকে তারা অনেক নজর দিয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে তাদের প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক লাগে। যার কারণে প্রতিবছরে তারা সরকারি মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়ে থাকে। এজন্য এ দেশের কৃষি ভিসার চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি এই ভিসার মাধ্যমে যেতে পারেন। তবে এই বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে আপনি অনেক টাকায় বেতন পাবেন। তাই এই ভিসা এর ক্ষেত্রে খরচ হতে পারে ৮ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকার মত।
জব ভিসা খরচঃ এ দেশের বিভিন্ন কোম্পানি প্রতিবছরে হাজার হাজার শ্রমিক সরকারি ভাবে নিয়োগ দিয়ে থাকে এবং সরকারিভাবেই আপনি জবের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সরকারিভাবে যখন আপনি এ দেশটিতে যাবেন তখন আপনার অনেক টাকাই খরচ কমে যাবে।
আর যদি দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনার ভিসা খরচ অনেক বেশি হবে। তবে আপনি যদি এই দেশটিতে জব ভিসার মাধ্যমে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ পড়বে ৬ থেকে ৮ লাখ টাকার মত।
শ্রমিক ভিসা খরচঃ এ দেশটিতে বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়ে থাকে, যার কারণে আপনার যদি কোন কাজের প্রতি দক্ষতা থাকে সেই কাজের উপর যদি ভিসা করতে পারেন তাহলে অনেক টাকায় বেতন পাবেন। তাই এই দেশটির কোম্পানিগুলো প্রতিবছরের সরকারি মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের শ্রমিক নিয়ে থাকে। আপনি যদি শ্রমিক ভিসায় যেতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনার ভিসা খরচ হবে ৪ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো। যদি আপনি সরকারি ভাবে যেতে পারেন সে ক্ষেত্রে কম লাগতে পারে।
ভিসার আবেদন ফি ও আনুষঙ্গিক খরচঃ এই দেশটিতে যাওয়ার জন্য আপনার ভিসা করতে হবে। সেক্ষেত্রে ভিসা ফি রয়েছে এ ছাড়াও আরো কিছু খরচাপাতি রয়েছে চলুন সেই সম্পর্ক জানা যাক।
সরকারিভাবে ভিসা আবেদন ফিঃ আপনি যদি সরকারি মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভিসা আবেদন করেন যেমন টুরিস্ট, স্টুডেন্ট, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান সেই ক্ষেত্রে প্রায় ৪ হাজার থেকে শুরু করে ১০৫০০ টাকা টাকার মতো লাগতে পারে।
বায়োমেট্রিক ফিঃ আপনি যখন এই সকল ভিসায় যেতে আবেদন করবেন সে ক্ষেত্রে আবেদনকারীর অবশ্যই বায়োমেট্রিক দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার অতিরিক্ত ফি দিতে হবে, এতে খরচ পড়বে ৫ হাজার টাকার মত।
মেডিকেল পরীক্ষার খরচঃ আপনি যখন একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ পড়বে ৫০০০ থেকে ১০ হাজার টাকা।
ইমিগ্রেশন এজেন্সি ও দালালদের খরচঃ আপনি নিশ্চয়ই কোন না কোন মাধ্যমে আবেদন করতে যাবেন সেক্ষেত্রে যদি কোন এজেন্সির সহযোগিতা নেন। তাহলে আপনার বেশি খরচ হবে এক্ষেত্রে খরচ হতে পারে বাংলাদেশি টাকায় ২ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মতো। তাই চেষ্টা করবেন নিজেই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার জন্য।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
কানাডায় যদি কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনাকে কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এর মাধ্যমে যেতে হবে। নিম্নে এ সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো,
এ দেশটিতে প্রত্যেক বছরে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসা-যাওয়া করে। এজন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা ক্যাটাগরি রয়েছে যেমন ভ্রমণ ভিসা কাজের ভিসা স্টুডেন্ট ভিসা ইত্যাদি রয়েছে যে কোন ভিসার মাধ্যমে আপনি যেতে পারেন তবে এখানে যদি স্থায়ীভাবে আপনি বসবাস করতে চান সেই ক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে হবে।
তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যারা যেতে চাচ্ছেন, তারা যেন প্রতারিত না হন। এজন্য কিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সহজ ভাবে করতে পারবেন, সে বিষয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
যারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চাচ্ছেন, তারা এই ভিসা সম্পর্কে চাকরির খবর (www.indeed.com) এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানতে পারবেন। তাছাড়া আরো অনেক ওয়েবসাইট আছে এই ধরনের চাকরি ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি Labor Market Impact Assessment (LMIA) সার্চ দিবেন গুগলে। এতে আপনি অনেক চাকরির খবর পাবেন। আপনার বায়োডাটাতে সকল কিছু উল্লেখ করবেন, এরপরে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করবেন।
যদি আপনার বায়োডাটা পছন্দ হয় সে ক্ষেত্রে আপনাকে ইন্টারভিউ এর জন্য আমন্ত্রণ করবে।ইন্টারভিউ গুলো সাধারণত অনলাইনে হবে, আপনাকে যদি তারা যোগ্য মনে করে তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে এলএমআইএ আবেদন করতে পারে। তারপর সরকার যাচাই বাছাই করবে যদি সরকার মনে করে যে কোম্পানির লোক নেওয়া ঠিক আছে। তাহলে অনুমতি দিবে।
এ ভিসা করার জন্য কোন প্রতারণার খপ্পরে যেন না পড়েন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেননা অনেকেই অবৈধভাবে আপনার থেকে টাকা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করবে। আপনাকে হয়তো বলতে পারে যে তারা ১০ লাখ টাকার মধ্যেই আপনার চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে এবং এলএমআইএ ম্যানেজ করে দিবে।
আপনার সতর্ক থাকা উচিত কখনোই তারা এই ধরনের এলএমআইএ ম্যানেজ করে দিতে পারবে না। আপনি যদি নিজের যোগ্যতায় ইন্টারভিউ ভালো দিয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই চাকরি পাবেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য তারা লোক নিয়ে থাকে।
যেমন ওল্ড হোম সাপোর্টার, কার হেভি ট্রাক ডাইভার, ইন্ডিয়ান বা চাইনিজ রেস্টুরেন্টের শেফ, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার টেকনোলজিক্যাল কাজে যারা দক্ষতা রয়েছে। তারা এই ভিসা নিয়ে বিদেশে যেতে পারবেন।
তবে একটা জিনিস স্মরণ রাখবেন যে, কাজের জন্য যদি এই দেশে যেতে চান, তাহলে এখানে অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে। বিশ্বের প্রায় ১৮০ টি দেশের মতো মানুষ এখানে প্রতিযোগিতা করে, এক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা, ইংরেজি ভাষা যোগ্যতা, পরীক্ষার সময় চাকরি দাতাকে কতটুকু সন্তুষ্ট করতে পেরেছেন। সেই বিষয়গুলো উপর নির্ভর করবে আপনার চাকরি পাবেন কিনা।
কানাডা কোন কাজের চাহিদা বেশি
কানাডায় বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে তাই কানাডা কোন কাজের চাহিদা বেশি? সে সম্পর্কে চলুন, বিস্তারিত ভাবে জানা যাক।
এ দেশে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য লোক নিয়ে থাকে, তবে যে সকল কাজগুলো বেশি হয়ে থাকে, সে সম্পর্কে নিম্নে তুলে ধরা হলো;
- রেজিস্টারকৃত নার্স হতে হবে
- ফিজিওথেরাপিস্ট প্রয়োজন হয়
- স্বাস্থ্য সেবক হিসাবে নেওয়া হয়ে থাকে
- ট্রাক ড্রাইভার নেওয়া হয়
- ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে যেতে পারেন
- ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করতে পারবেন
- ছুতারের কাজ করতে পারবেন
- ডেলিভারি বয় হিসাবে কাজ করা যায়
- মেকানিক্যাল টেকনিশিয়ান হিসাবে কাজ করতে পারবেন
- সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে কাজ করতে পারবেন
- প্লাম্বার হিসাবে কাজ করতে পারেন
- ফুড সার্ভিস সরকার হিসাবে কাজ করতে পারেন সরকার
- বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পারেন
- ফার্মাসিস্ট হিসেবে লোক নিয়ে থাকে
- মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ হিসেবে লোক নেয়
- প্রশাসনিক সহকারী প্রয়োজন হয়
- শেফ এবং কুক হিসেবে লোক নেয়
- গ্রাহক সেবা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন
- নির্মাণ ব্যবস্থাপক হিসাবে কাজ করা যায়
- ওয়েব ডিজাইন হিসেবে লোক নেয়
- গ্রাফিক ডিজাইনার নিয়ে থাকে
- মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে কাজ করবেন
- ফিন্যান্স ম্যানেজার হিসেবে কাজ করা যায়
- আইটি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতে পারবেন
- রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করতে পারবেন
- কৃষি কাজ করা যেতে পারে।
উপরোক্ত এই সকল কাজগুলো অনেক চাহিদা আছে। তাই এই সকল কাজের জন্য প্রবাসীদেরকে নিয়ে থাকে। তাই কারো যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকে সে ক্ষেত্রে ভালো কাজ করতে পারবেন অনেক টাকা বেতন পাবেন।
কানাডা যেতে কত বয়স লাগে
আপনি যদি কানাডায় যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনার বয়সের উপরও নির্ভর করবে। তাই কানাডা যেতে কত বয়স লাগে? এ সম্পর্কে আপনার জানা প্রয়োজন নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
এ দেশে যেতে বয়স কত লাগতে পারে সেটা নির্ভর করবে আপনার ভিসার ক্যাটাগরির উপরে। স্টুডেন্ট ভিসায় যদি আপনি যাওয়ার ইচ্ছা করেন, সে ক্ষেত্রে ১৮ বছর বয়স হতে হবে। যদি কাজ করার জন্য যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে আপনার বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর হওয়া লাগবে।
যদি টুরিস্ট ভিসায় যেতে চান, এতে যদি আপনার বয়স ১৮ বছরের নিচেও হয় সে ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।
তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন। এ দেশে যাওয়ার জন্য সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী লোকেরা সুযোগ সুবিধা বেশি পায়। কারণ তারা সকল ধরনের মাধ্যম যেতে পারবে।
কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা
আপনি যদি কানাডা যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। তাই কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন, নিম্ন আলোচনা করা হলো।
এ দেশে যেতে হলে কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, তা নির্ভর করে আপনার ভিসার ক্যাটাগরির উপরে। আপনি কোন উদ্দেশ্যে যেতে চাচ্ছেন, তা ভিসার ক্যাটাগরির উপরে নির্ভর করবে।
কেননা একেকটা ভিসার ক্যাটাগরি একেক রকম হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু বিষয় একই হয়ে থাকে, তবে অধিকাংশ মানুষ এই দেশে পড়াশুনা, ভ্রমণ কিংবা চাকরির জন্য গিয়ে থাকে।
এ দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে আবশ্যিক ডকুমেন্টস গুলোঃ
- বৈধ পাসপোর্ট লাগবে, পাসপোর্ট এর বয়স ৬ মাস হওয়া লাগবে।
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে
- পুলিশ ভেরিফিকেশনের সার্টিফিকেট প্রয়োজন
- করোনা ভাইরাসের টিকা কার্ড প্রয়োজন হবে
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট থাকতে হবে
- জন্ম সনদ প্রয়োজন হবে
- জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে।
উপরোক্ত এই সকল ডকুমেন্টগুলো প্রায় সকল ভিসার ক্ষেত্রে একই রকম। সেটা স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিট কিংবা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে একই কাগজ লাগে।
তবে আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে যে সকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন। তাহলো;
- আইইএলটিএস পরীক্ষার স্কোর ৬ থাকতে হবে
- এ দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনাকে অফার লেটার থাকতে হবে
- অতীতের কোন মূল সার্টিফিকেট যদি থাকে সেটা সত্যায়িত করতে হবে
- স্টুডেন্ট আইডেন্টিটি প্রমাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার।
- টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে যে সকল ডকমেন্টস প্রয়োজন তা নিম্নে দেওয়া হল;
- হোটেল বুকিং ডকুমেন্টস লাগবে
- ব্যাংকে সর্বনিম্ন ব্যালেন্স ১০ লক্ষ টাকার মত থাকতে হবে
- অতীতের ভ্রমণকৃত দেশের প্রমাণ যদি থাকে সেই প্রমাণপত্র লাগবে।
কানাডা বেতন কত
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি যে কানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয়? এখন জানবো এদেশের বেতন কত টাকা? এ সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো হবে। কানাডা গিয়ে আপনি কি পরিমাণ বেতন পাবেন সে সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ লোক এ দেশে যায়, তবে অধিকাংশ মানুষ তারা বেতন সম্পর্কে তেমন জানেনা। চলুন, কোন কাজের কি পরিমান বেতন দিয়ে থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
মূলত কাজের উপর নির্ভর করে আপনার বেতন দেওয়া হবে। যে যেরকম কাজ করবে সেই অনুযায়ী তার বেতনটা হবে। তবে সাধারণ শ্রমিকদের বেতন একটু কম হয়ে থাকে। এ দেশে সর্বনিম্ন বেতন হলো ৫০০০০ টাকার মত। সেজন্য আপনি সর্বনিম্ন বেতন ধরে রাখবেন ৫০ হাজার টাকা। বাংলাদেশের অনেক মানুষ কাজের উদ্দেশ্যেই যায়, চলুন কোন কাজের বেতন কত সে সম্পর্কে জানা যাক।
যারা ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আইটি ম্যানেজার, ফিন্যান্স ম্যানেজার মার্কেটিং ম্যানেজার ও স্বাস্থ্যসেবার কাজ করার উদ্দেশ্যে যায়। তাদের বেতন একটু বেশি হয়ে থাকে। এজন্য প্রতি মাসে তারা এই কাজের জন্য বেতন পায় ৩০০০ ডলার থেকে ৫০০০ ডলারের মত। বাংলাদেশি টাকায় হবে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকার মত হয়।
ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি, একাউন্টেন্ট রেস্টুরেন্ট বা রেস্তোরাঁ সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ এই সকল কাজের জন্য যদি যান, সে ক্ষেত্রে আপনার কাজের বেতন হবে মাসে ১২০০ ডলার থেকে ২২০০ ডলারের মতো।বাংলাদেশি টাকায় হবে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মতো। সে ক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং ওভারটাইম করলে আরো বেশি টাকা বেতন পাবেন।
হোটেল বয়, কৃষি কাজ করার জন্য যারা এ দেশে যায় তারা অন্যান্য কাজের তুলনা একটু বেতন কম পেয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে মাসিক বেতন হয় ৭৯০ ডলার থেকে ১১৬০ ডলার মত। যা বাংলাদেশী টাকায় হবে ৬৫ হাজার টাকা থেকে ৯৫ হাজার টাকার মত। তবে এক্ষেত্রে অনেক সময় টিপস পাওয়া যেতে পারে।
কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি
কানাডা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভিসা দিয়ে থাকে, তাই কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন, কোন কোন ক্যাটাগরিতে ভিসা দিয়ে থাকে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
এ দেশের ভিসা ক্যাটাগরি মূলত বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে তাহলো;
- টুরিস্ট ভিসা ক্যাটাগরি হয়ে থাকে
- স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে থাকে
- ফ্যামিলি স্পন্সরশিপ ভিসা দিয়ে থাকে।
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিয়ে থাকে
- পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট ভিসা হয়ে থাকে
বিভিন্ন ধরনের ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন ধরনের ভিসা খরচ আলাদা হবে। জব ভিসা, ফ্রি ভিসা, মেকানিক্যাল ভিসা, ড্রাইভিং, কৃষি লেবার, বিজনেস, চিকিৎসা ভিসা ইত্যাদি আরো অনেক ধরনের ভিসা হতে পারে। জব ক্যাটাগরির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিসা হয়ে থাকে যেমন ডাক্তার, নার্স অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা।
তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আইটি বিশেষজ্ঞদেরকেও জব দিয়ে থাকে। তাছাড়া সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এগুলো প্রয়োজন হয়। হিসাবরক্ষক আর্থিক বিশ্লেষক ব্যাংকার এ ধরনের জবের চাহিদা রয়েছে।
এছাড়াও দক্ষতার ভিত্তিতে ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার আরো অন্যান্য শ্রমিক কাজ করে থাকে। পর্যটক হিসেবে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে ট্যুর গাইড রয়েছে, তারপর হোটেল ম্যানেজমেন্ট কাজ করার জন্য হোটেল বয়, এছাড়াও রেস্তোরাঁ কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারেন।
তাছাড়া কারখানার কর্মী হিসেবে নিয়ে থাকে, দেখাশোনার জন্য বা মান নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়ে থাকে এছাড়া প্রশাসনিক কাজের জন্য রিসিপশনিস্ট, প্রশাসনিক সহকারী অফিসের ম্যানেজার বিভিন্ন ধরনের পদে তারা জনবল নিয়ে থাকে।
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়
আপনি যদি কানাডায় যেতে চান, সে ক্ষেত্রে কোন দালালের মাধ্যম ছাড়া সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
অনেকেই বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে এ দেশে যেয়ে থাকে, তাদের অনেক টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই যারা সরকারিভাবে যেতে চান, তাদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় জানা দরকার।
এজন্য আপনি যদি সরকারি ভাবে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনার আইইএলটিএস করা লাগবে এবং এর স্কোর থাকা লাগবে ৬। ভ্রমণের জন্য যদি এদেশে সরকারি ভাবে যেতে চান, সেই ক্ষেত্রে ইলেকট্রিক ট্রাভেল অথরাইজেশন সংগ্রহ করা লাগবে।
কাজের ভিসার জন্য যদি কোন প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে চান, সেই ক্ষেত্রে এদেশের কর্মসংস্থান প্রকল্পে ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করা লাগবে। চাকরি খোঁজার জন্য আপনি এ দেশের সরকারী ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন www.jobbank.gc.ca এই ঠিকানায়।
জব অ্যাপ্লিকেশনের জন্য এ দেশের স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে আপনার যোগ্যতা দক্ষতার বিবরণ দিতে পারবেন। একটি বায়োডাটা তৈরি করা লাগবে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা সুযোগ দিয়ে থাকে। সরকারি পারমিট সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য আবেদন করা যেতে পারে।
তাছাড়া স্কলারশিপ এর মাধ্যমে আপনি যেতে পারবেন। এ দেশ বিশ্বের উন্নত একটি রাষ্ট্র সেখানে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ৩ লক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। উন্নত মানব সমাজের একটি অংশ হিসেবে কর্মীগুলো কাজ করে থাকে।
সরকারিভাবে যাওয়ার জন্য 'আমি প্রবাসী' রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে এ দেশের ভিসা আবেদন ফরম অনুসারে আপনাকে কয়েকটি ধাপে পূরণ করা লাগবে।
এক্সপ্রেস অ্যান্টি প্রোগ্রামঃ এখানে আপনাকে একজন দক্ষ কর্মী হিসাবে নিয়োগ দিতে পারে। তার জন্য দক্ষতা যোগ্যতা মূল্যায়ন ও নির্বাচন করেই আপনি নিয়োগ পাওয়ার অনুমতি পাবেন। পরবর্তীতে অভিবাসী হওয়ার সুযোগ আছে, এই প্রোগ্রামে সরকারি তিনটি পলিসি আছে। ফেডারেল স্কিল ওয়ার্কার প্রোগ্রাম, এ দেশের এক্সপেরিয়েন্স ক্লাস, ফেডারেল স্কিল ট্রেড প্রোগ্রাম এগুলোর মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এই প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে আপনি একটি সুযোগ পাবেন।
ফ্যামিলি ক্লাস স্পনসরশীপঃ এ দেশে যদি কেউ পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চায়, সেক্ষেত্রে সরকারিভাবে স্পন্সর আবেদন করা লাগবে।
LMIA ওয়ার্ক ভিসাঃ চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকে, তার মধ্যে নিয়োগ কর্তা প্রতিষ্ঠান এখানে আবেদন করার জন্য একটি আসন সুরক্ষিত করতে পারে।
প্রাদেশিক মনোনীত প্রোগ্রামঃ এ দেশে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির লেবার ক্রাইসিস অনেক সময় হতে পারে। সেজন্য প্রাদেশিক মনোনীত প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে কাজের অভিজ্ঞতার থাকলে তাদেরকে এখানে অফার দিয়ে থাকে।
ইনভেস্টমেন্ট ইমিগ্রেশন প্রোগ্রামঃ আপনি বিনিয়োগ করে এ দেশে ব্যবসা করার অনুমতি পাবেন, অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী হলে এ দেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে অনুমতি দিতে পারে।
শেষ কথাঃ কানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয় ও বেতন কত জেনে নিন
অবশেষে বলা যেতে পারে যে, আপনি যদি কানাডায় যেতে চান সেক্ষেত্রে খরচ সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। তাই কানাডা যেতে কত টাকা খরচ হয়? সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি উপকার পাবেন, তাছাড়া কানাডায় যেতে হলে আপনাকে আরো কিছু নিয়মকানুন জানতে হবে, যা আর্টিকেলে বর্ণনা করা হয়েছে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url