বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন সম্পর্কে জানুন
অনেকে জানতে চায় যে বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে? আপনি যদি এ বিষয়ে না জানেন তাহলে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলুন, কোন ভিসার দাম কেমন? সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
বাংলাদেশের অনেক মানুষ লুক্সেমবার্গ যেতে চায়, কেননা দেশটি উন্নত একটি রাষ্ট্র। জীবন যাপন উন্নত মানের, প্রচুর পরিমাণে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আছে। তবে ভিসা দাম সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। তাই বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃবাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন সম্পর্কে জানুন
বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে
অনেকে এই দেশটিতে যেতে চায়, তাই বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে? এ সম্পর্কে হয়তো আপনি জানেন না, তাই আপনার ভিসার দাম সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
মূলত আপনি যদি কাজ করার জন্য লুক্সেমবার্গ যেতে চান, সে ক্ষেত্রে ভিসা খরচ একটু বেশি হবে। তাছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে যেমন স্টুডেন্ট ভিসায়, ভ্রমণ ভিসা, বিজনেস ভিসা ইত্যাদি। যা প্রত্যেকটা ভিসার আলাদা দাম রয়েছে। তাছাড়া আপনি যদি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান, তাহলে বেশি খরচ হবে। সেক্ষেত্রে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার মত লাগবে। আর যদি সরকারি ভাবে যেতে পারেন তাহলে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে বিমান ভাড়া,ভিসার দাম অন্যান্য আরো খরচ রয়েছে।
কাজের ভিসা খরচঃ আপনি যদি কাজের উদ্দেশ্যে এ দেশে যেতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে হবে। তাহলে এই ভিসার মাধ্যমে যে কোন কাজ করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে অন্যান্য ভিসার চাইতে বেশি খরচ হয়ে থাকে। তাই যদি আপনি সরকারি ভাবে যেতে পারেন তাহলে খরচ কম হবে। যদি কোন কোম্পানি আপনাকে অফার লেটার পাঠিয়ে দেয় সে ক্ষেত্রে কোম্পানির ইচ্ছা করলে আপনার কিছু খরচ বহন করতে পারে। তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় মেডিকেল ফি ও অন্যান্য খরচ রয়েছে। চলুন, অন্যান্য খরচ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
লুক্সেমবার্গ ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন ফি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার মত। তাছাড়া মেডিকেল সার্টিফিকেট বা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খরচ হতে পারে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এছাড়াও আরো অন্যান্য অনেক খরচ রয়েছে, সব কিছু মিলে আপনার আরো কিছু খরচ হবে। তাছাড়া বিমান ভাড়া প্রায় ৯০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত হতে পারে। যদি আপনি সকল কার্যক্রম নিজে করেন তাহলে এই টাকার মাঝে যেতে পারবেন কিন্তু যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান সে ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মত খরচ হতে পারে।
স্টুডেন্ট ভিসা খরচঃ অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী লুক্সেমবার্গ এর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আগ্রহ বেশি দেখা যায়। তাই এখান থেকে ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ালেখা করতে পারলে, ভালো জব করতে পারবেন। তাই এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে অনেক খরচ হয়ে থাকে। তবে আপনি যদি নিজে আবেদন করেন সে ক্ষেত্রে সবচাইতে কম খরচ হবে, আর যদি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান তাহলে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মত খরচ হবে কিন্তু আপনি যদি নিজে নিজে সকল কার্যক্রম করেন, তাহলে ১ লক্ষ ৫০ পঞ্চাশ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা খরচ হবে। চলুন, বিস্তারিত জানা যাক।
আপনি লুক্সেমবার্গ এর যে বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করতে চাচ্ছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। সেখানে দেখবেন খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা আছে, কিভাবে আবেদন করতে হবে। আপনি প্রথমে আবেদন করবেন, এই ক্ষেত্রে আপনার আবেদন ফি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। এরপরে তারা যদি আপনাকে পছন্দ করে সে ক্ষেত্রে কাগজপত্র কুরিয়ার সার্ভিস বা অন্য কোন মাধ্যমে যদি পাঠাইয়া দেন, সে ক্ষেত্রে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রায় ১ মাসের মত সময় লাগতে পারে।
তাছাড়া সকল ডকুমেন্টস দেওয়ার পরে তারা তথ্য যাচাই বাছাই করে আপনাকে জব অফার দেবে সে ক্ষেত্রে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এতে ১০ হাজার টাকার মত খরচ হতে পারে, এরপরে আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট ২০ লক্ষ টাকার মত দেখাতে হবে। তাছাড়া বিমান ভাড়া ৯০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত খরচ হবে। তাই ধরে নেওয়া যায় আপনার সর্বমোট খরচ হতে পারে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকার মত কিন্তু যদি আপনি কোন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনার এর চেয়ে ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি টাকা লাগবে।
ট্যুরিস্ট ভিসা খরচঃ এ দেশটি অত্যন্ত সুন্দর প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর একটি দেশ, যেখানে দেখার মত কিছু বিস্ময়কর দৃশ্য রয়েছে। তাই আপনি এদেশ ভ্রমণ করার জন্য যেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার আবেদন ফি ১২ হাজার টাকার মত খরচ হবে। এছাড়া ট্রাভেল মেডিক্যাল ইন্সুরেন্স করতে হবে সেক্ষেত্রে আপনার ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার মত দেখাতে হবে। তাছাড়া ভিসা প্রসেসিং বা অন্যান্য খরচ ও বিমান ভাড়া সহ আপনার ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকার মত লাগতে পারে। এছাড়া প্রতিদিন খরচ হবে ৬ হাজার টাকার মতো। তবে এজেন্সির মাধ্যমে গেলে এর চেয়ে ৫গুণ বেশি টাকা গুনতে হবে।
বিজনেস ভিসা খরচঃ অনেকে লুক্সেমবার্গে বিজনেস ভিসায় যেতে চায়। কেউ কেউ ব্যবসায়ের বিভিন্ন পণ্য কেনার জন্য এ দেশে যায়। তাই আপনি বিজনেস ভিসার মাধ্যমে যদি যান, সে ক্ষেত্রে ৯০ দিনের মতো থাকতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার প্রতিদিনের খরচ হবে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার মতো। এছাড়াও আপনার ভিসা আবেদনের জন্য ৭ হাজার টাকার মত লাগবে, বিমান খরচ ১ থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার মত লাগতে পারে। এছাড়াও আপনার ট্রাভেল মেডিক্যাল ইন্সুরেন্স ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার মত দেখাতে হবে।
লুক্সেমবার্গ বেতন কত
অনেকে জানতে চায় যে লুক্সেমবার্গ বেতন কত? লুক্সেমবার্গ যদি কোন কাজ করতে পারেন তাহলে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেতন পাবেন। তবে আপনার দক্ষতা থাকতে হবে। চলুন, কোন কাজের বেতন ভাতা কেমন? সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি দক্ষ শ্রমিক হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে বাংলাদেশী টাকায় প্রতি মাসে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকার মত বেতন পাবেন। আর যদি অদক্ষ শ্রমিক হন সেই ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মতো বেতন পেতে পাবেন। যেহেতু এটা উন্নত রাষ্ট্র তাই এদেশের বেতন অনেক বেশি। তবে কাজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। লুক্সেমবার্গ ঘন্টা ভিত্তিক বেতন দিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের টাকায় প্রতি ঘন্টায় আপনি প্রায় ১৫০০ টাকার মত ইনকাম করতে পারবেন। যদি আপনি দক্ষ শ্রমিক হন সে ক্ষেত্রে ঘন্টায় ১৯০০ টাকা পাবেন।
আপনি যদি লুক্সেমবার্গ দেশে ফিনান্স ও ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে জব করেন সে ক্ষেত্রে ৯০ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত বেতন পাবেন। তাছাড়া যদি তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে কাজ করেন সে ক্ষেত্রে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন। এছাড়া স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যেমন ডাক্তার নার্স এই সকল জব করেন তাহলে ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মত বেতন পাবেন। তাছাড়া আইন বিষয়ে যদি কাজ করেন তাহলে ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত বেতন পাবেন। ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ যদি ভালো জানেন সে ক্ষেত্রে ৭০ থেকে ১ লক্ষ টাকার মতো বেতন পাবেন।
যদি শিক্ষকতা করেন ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন। এছাড়াও হোটেল বা রেস্টুরেন্টে কাজ করেন সে ক্ষেত্রে ৪০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকার মত বেতন পাবেন। নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে যদি জব করেন সেই ক্ষেত্রে ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন। এছাড়াও যদি বিক্রয় প্রতিনিধি বা ফুড ডেলিভারি ম্যান হিসেবে জব করেন তাহলে ৬০ থেকে ১ লক্ষ টাকার মতো বেতন পাবেন। আশাকরি আপনি একটু হলেও বেতন সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন, তবে কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
লুক্সেমবার্গ কোন কাজের চাহিদা বেশি
আপনি যদি লুক্সেমবার্গ কাজের জন্য যেতে চান সেই ক্ষেত্রে লুক্সেমবার্গ কোন কাজের চাহিদা বেশি? এ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাহলে আপনি কোন কাজের জন্য যাবেন সেটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন এবং কোন কাজের চাহিদা বেশি সেটাও বুঝতে পারবেন। চলুন, এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
এ দেশে কাজ করা খুবই কঠিন বিষয় এবং আপনার জব পাওয়া অনেকটাই কঠিন। সেক্ষেত্রে আপনি আগে থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানিতে আবেদন করবেন। যদি তারা আপনাকে পছন্দ করে তাহলে আপনি যেতে পারবেন। যে কাজ গুলো সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে তার মধ্যে ইলেকট্রিশিয়ান, কনস্ট্রাকশন, মেকানিক্যাল, ড্রাইভিং, ডেলিভারি ম্যান, কৃষি কাজ, হোটেল বা রেস্টুরেন্টের ওয়েটার এছাড়াও ফুড ডেলিভারি ম্যান, ক্লিনার ইত্যাদি কাজের অনেক চাহিদা আছে।
লুক্সেমবার্গ দেশটিতে উচ্চপর্যায়ে যে কাজ গুলো সাধারণত গুরুত্ব দিয়ে থাকে তাহলো; ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, স্বাস্থ্য সেবা যেমন ডাক্তার, নার্স, ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি। তথ্যপ্রযুক্তি এক্ষেত্রে সাইবার সিকিউরিটি, কম্পিউটার ইত্যাদি কাজ গুলোর মাধ্যমে যেতে পারেন। তাছাড়া আইন বিষয়ে যাওয়া যেতে পারে আইন বিশেষজ্ঞ যারা রয়েছেন বা পরামর্শ দিয়ে থাকেন তারাও যেতে পারবেন। তাছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং এ যারা পারদর্শী তারা যেতে পারবেন যেমন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ইত্যাদি। এছাড়াও শিক্ষকতা পেশায় যেতে পারেন, কেননা এ দেশে শিক্ষকদের অনেক মূল্যায়ন রয়েছে।
তবে এই দেশে কাজ করার জন্য কর্মীকে দক্ষ হতে হবে, কমপক্ষে ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তা না হলে আপনাকে কর্মী হিসেবে তারা নিবে না। তাছাড়াও আপনি যখন শিক্ষকতা করতে যাবেন সেক্ষেত্রে আপনার এ দেশের ভাষা দক্ষতা জ্ঞান থাকতে হবে। এছাড়াও আপনি টিচার হিসেবে যে গবেষণা করেছেন তার ডকুমেন্ট গুলো দেখাতে হবে। তাছাড়া যারা গার্মেন্টসের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তারা বিভিন্ন ধরনের পোশাক কারখানাতে জব করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অপারেটর বা কোয়ালিটি চেকিং সুপারভাইজার ইত্যাদি পদে কাজের অনেক চাহিদা আছে।
লুক্সেমবার্গ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
কাজের ভিসা বা লুক্সেমবার্গ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া খুবই কঠিন বিষয়। এই ভিসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং পাওয়া খুবই কঠিন। চলুন, এই ভিসা কেমন করে করবেন? সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
লুক্সেমবার্গ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করলে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন। যেহেতু এই দেশটি অনেক উন্নত রাষ্ট্র। তাই এই দেশের কাজের মূল্যায়ন অনেক করা হয়ে থাকে এবং প্রচুর পরিমাণে বেতন দেওয়া হয়। যার কারণে এ দেশের প্রচুর পরিমাণে লোক বিভিন্ন দেশ থেকে আসে। কেননা সবাই উন্নত এবং সুখী জীবন যাপন করতে চায়। তাই এ দেশে কাজের জন্য অনেক লোক নিয়ে থাকে, তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের কনস্ট্রাকশনের কাজ করা লাগে, এছাড়াও রাস্তাঘাট, কৃষি কাজ ইত্যাদি কাজের জন্য লোকের প্রয়োজন হয়। তাই এ দেশে আসতে পারেন।
লুক্সেমবার্গ যাওয়ার জন্য সবাই আগ্রহ থাকে কেননা দেশটি অনেক উন্নত রাষ্ট্র। যার কারণে এখানে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন সবাই দেখে থাকে। এখানে ক্যারিয়ার গড়তে পারলে আপনার জীবনটা সুখী এবং সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবেন। তবে ভিসা করার জন্য কিছু ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র জমা দিতে হবে। আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এছাড়াও আপনার কোন ডকুমেন্ট যেন ভুল না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চলুন, কিভাবে আবেদন করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোম্পানির জব অফার লেটার লাগবে। তাছাড়া আপনি আবেদন করতে পারবেন না, এরপরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য সকল কাগজপত্র নিয়ে আপনি এ দেশের এম্বাসিতে যাবেন এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভিসা তথ্য সংগ্রহ করবেন। তারপরে আপনি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করবেন। আবেদন পত্র সঠিকভাবে পূরণ করবেন এরপরে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে। তারপরে ভিসা আবেদন ফি দেওয়া লাগবে, ক্যাটাগরি সিলেক্ট করতে হবে। এরপরে ইন্টারভিউয়ের উপস্থিত হতে হবে।
লুক্সেমবার্গ কেমন দেশ
অনেকের জানার ইচ্ছা যে লুক্সেমবার্গ কেমন দেশ? আসলে দেশটি বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি সুখী রাষ্ট্র, কেননা এখানকার নাগরিক সুখী জীবন যাপন করে থাকে এবং এ দেশটি অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নতশীল। চলুন, এ দেশ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
লুক্সেমবার্গ একটি উন্নত রাষ্ট্র। এটি একটি শান্তিপূর্ণ দেশ এখানকার কর্মজীবী এবং শিক্ষার্থী মানুষ গুলো অত্যন্ত ভালো যার কারণে দেশটি অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হচ্ছে। এদেশের লোক বিলাসবহুল ভাবে জীবন যাপন করে, সরকারি ভাবেই তারা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে। এ দেশের জনগণ বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের সেবা পায়, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িগুলো দেখতে খুবই সুন্দর এবং যা সরকারিভাবে বহন করা হয়ে থাকে। এ দেশে সরকারিভাবেই সকল কিছুই বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হয়। যার কারণে আপনি যদি এ দেশে যেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ মন্টিনিগ্রো যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন কত
এই দেশে উন্নত জীবন যাপন করতে পারবেন এবং বিশ্বের মধ্যে সুখী রাষ্ট্রের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে। এই দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এতটাই মনোমুগ্ধকর যা ছবির মত মনে হয়। শিল্পীরা যেরকম বাস্তব মনোমুগ্ধকর ভাবে একটি ছবি অঙ্কন করে আর এখানে গেলে আপনি জীবন্ত বা বাস্তবতা দেখতে পারবেন। এর শহর গুলো খুবই ছোট ছোট কিন্তু পুরানো বিল্ডিং রয়েছে এবং অনেক ইতিহাস গৌরব বিচিত্রময় সকল কিছুই রয়েছে।
লুক্সেমবার্গ এর সংস্কৃতি এবং এ দেশের অধিকাংশ মানুষ খ্রিষ্টান যার কারণে প্রচুর পরিমাণ দুর্গ প্রাসাদ আছে। এ দেশে দুর্গ রয়েছে তাছাড়াও এ দেশটির দুর্গ নির্মাণ করার ক্ষেত্রে এখনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিখ্যাত কিছু দুর্গ রয়েছে বা দেখার মত সৌন্দর্য যার কারণে মানুষ বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে ভ্রমণ করতে যায়। এছাড়াও এ দেশের জ্বালানি তেলের দাম খুবই কম হয়ে থাকে। যা অন্যান্য রাষ্ট্রের চাইতে বা তুলনামূলক কম। এ দেশের ৯৯% মানুষ শিক্ষিত হয়ে থাকে। কেননা এখানে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত প্রত্যেকটা শিশুর শিক্ষা অর্জন করতেই হবে।
লুক্সেমবার্গ ভিসা আবেদন
আপনি যদি লুক্সেমবার্গ যেতে চান সে ক্ষেত্রে লুক্সেমবার্গ ভিসা আবেদন করতে হবে। এজন্য কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে। চলুন অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।
আপনি যখন অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করবেন সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই এ দেশের অফিশিয়াল যে ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখানে আপনি প্রবেশ করবেন তারপরে ভিসা আবেদন ফরম ডাউনলোড দিতে হবে। এরপরে যে তথ্যগুলো চাওয়া হয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করবেন। আপনি কোন ভিসা ক্যাটাগরিতে যেতে চাচ্ছেন সেটাও পূরণ করে দিতে হবে। এরপরে আবেদনের সাথে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে। সেগুলো অনলাইনের মাধ্যমে জমা দিবেন, এছাড়াও অনলাইন ফি পরিশোধ করা লাগবে।
তাছাড়া আপনার ছবি, ফিংগার ছাপ ইত্যাদি এগুলো প্রয়োজন হবে। আপনি নিকটস্থ যে দূতাবাস রয়েছে সেখানে যোগাযোগ করে এই ব্যবস্থাগুলো করবেন। এর পরে আপনাকে যাচাই বাছাই করে এপয়েন্টমেন্ট লেটার দেবে। এরপরে আপনি সেটা প্রিন্ট করে নিজের কাছে রেখে দিবেন। আপনার ভিসা প্রসেসিং একদমই সহজ এবং এদেশের ভিসা পেতে আপনার ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো সময় লাগতে পারে। তাছাড়া আরো কিছু ডকুমেন্টস লাগতে পারে যেমন পাসপোর্ট, পুলিশ ভেরিফিকেশন এর সার্টিফিকেট মেডিকেল সার্টিফিকেট নিয়োগ কর্তার কোম্পানির অফার লেটার।
লুক্সেমবার্গ দেশ সম্পর্কে সচারচর যে প্রশ্ন গুলো করা হয় (FAQ)
বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ দূরত্ব কত কিলোমিটার?
বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭৬১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত সময় লাগে?
বাংলাদেশ থেকে যেতে প্রায় ১৫ ঘণ্টার মতো সময় লাগে তবে এটা বিমানের ওপর নির্ভর করবে।
লুক্সেমবার্গ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত দিনের জন্য দেয়?
আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মেয়াদ পাবেন ১ থেকে ৩ বছরের মত।
লুক্সেমবার্গ যেতে কত বছর বয়স লাগে?
বাংলাদেশ থেকে আপনি কাজের জন্য যদি যেতে চান সে ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত তবে অন্যান্য ভিসার ক্ষেত্রে বয়স কম বেশি হতে পারে।
লুক্সেমবার্গ স্থায়ী ভাবে বসবাস করার উপায় কি?
আপনি যদি এ দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান সেক্ষেত্রে বৈধভাবে কমপক্ষে ৫ বছর বসবাস করা লাগবে।
উপসংহারঃ বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন সম্পর্কে জানুন
পরিশেষে বলা যায় যে লুক্সেমবার্গ যেহেতু অনেক উন্নত একটি রাষ্ট্র। তাই এদেশে সবাই যেতে চায় তবে যদি আপনি কাজের জন্য যেতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু নিয়ম-কানুন জানতে হবে। এছাড়াও এজেন্সির মাধ্যমে গেলে আপনার বেশি খরচ হবে। তাই নিজেই যদি আবেদন করতে পারেন তাহলে অনেক কম খরচে যেতে পারবেন। তাই বাংলাদেশ থেকে লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে খুঁটিনাটি সকল কিছুই আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি আপনার কাজে লাগবে। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url