মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয় ও যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন
মসুরের ডাল প্রায় সবাই খেতে পছন্দ করে কিন্তু মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয়? আসলে এই ডাল কিছু নিয়ম অনুযায়ী খেলে গ্যাস্ট্রিক কমবে। চলুন, কিভাবে মসুরের ডাল খেলে গ্যাস কমবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আপনার যদি গ্যাস্ট্রিক এবং আইবিএস এর সমস্যা থাকে, তাহলে মসুরের ডাল খাবেন না। তবে যদি মসুরের ডাল খেতে চান, সে ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো খেতে পারেন। তাই মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয়? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃমসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয় ও যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন
মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয়
যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা প্রশ্ন করে থাকেন যে, মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয়? আসলে মসুরের ডাল কিছু ভিন্ন পদ্ধতিতে খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিক হবে না। চলুন, কিভাবে মসুরের ডাল খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে না সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
অনেকের প্রচুর পরিমাণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অথবা আইবিএস ও কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে। তারা আসলে ডাল খেতেই পারে না, প্রচুর পরিমাণে গ্যাস্টিক হয়ে যায়, পেট ফুলে যায়, পেট ব্যথা করে ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা দেয়। মসুরের ডাল অনেকেই খেতে পছন্দ করে কিন্তু এই ডাল খাওয়ার কারণে গ্যাস্টিক হতে পারে। কেননা এর মধ্যে ফাইটেট ও ল্যাকটিন জাতীয় কিছু উপাদান থাকে, যার কারণে খাওয়ার পরে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। তবে যদি আপনি ভিজিয়ে রাখার পরে রান্না করে খেতে পারেন এক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে না।
রান্না করার পূর্বে অবশ্যই ২০ মিনিটের মত এই মসুরের ডাল ভিজিয়ে রাখবেন। এর পরে শুধুমাত্র কাঁচামরিচ দিয়ে সিদ্ধ করে খেতে পারেন। এতে আপনার গ্যাস্ট্রিক অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাছাড়া আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর করবে। তবে যাদের পাতলা পায়খানার সমস্যা রয়েছে তাদের মুসরের ডাল না খাওয়াই ভালো। মসুরের ডাল ভিজিয়ে রাখার পরে রান্না করে খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম হবে। কেননা এতে কার্বোহাইড্রেট ভেঙ্গে যাবে, যার কারণে হজম দ্রুতগতিতে হবে। তাছাড়াও আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আর হবে না।
যদি আপনার অত্যাধিক গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে, তাহলে দিনে ১ বারের বেশি মসুরের ডাল খাবেন না এবং পরিমাণে খুবই কম খাবেন। তাছাড়া অনেকের পাতলা ডাল খেলে আরো বেশি গ্যাস্ট্রিক হতে পারে, সে ক্ষেত্রে সিদ্ধ করে খেতে পারেন। এতে হজম করতে সহজ হবে। তাছাড়া এর মাঝে ফাইবার থাকে যা আপনার এসিডিটির মাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। তাই চেষ্টা করবেন প্রতিদিন ডাল না খেয়ে সপ্তাহে ২দিন এক বেলা করে খেতে পারেন। এতে গ্যাস্ট্রিকের তেমন একটা সমস্যা হবে না এবং হজম শক্তির ক্ষেত্রে দারুন কাজ করবে।
আপনার যদি ডাল খেলে গ্যাস্টিক বেড়ে যায় তাহলে ডাল রান্না করার ক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম উপায় হল; এই ডাল যখন রান্না করবেন তখন কিছু উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান দেবেন। যেগুলো আপনার হজম প্রক্রিয়াকে সাহায্য করবে। যেমন জিরা এছাড়াও আরো কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো আপনার খাদ্য হজম করতে দ্রুত সাহায্য করে, সেই ধরনের মসলা গুলো ব্যবহার করবেন। এতে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে। যার কারণে অতি সহজে গ্যাস্টিকের সমস্যা হবে না।
যেহেতু আপনার ডাল খেলে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস হয়, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাল খাওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর পানি খাবেন। খাওয়ার মধ্যে বেশি করে কখনোই পানি খাবেন না, এতে হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হবে না, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি হবে। এজন্য ৩০ মিনিট পর বেশি বেশি পানি খাবেন। এতে আপনার পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেবে না। এছাড়াও যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা যদি এই মসুরের ডাল পরিমান মত এবং নিয়ম অনুযায়ী খায় সে ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।
আপনি এই ডাল খাওয়ার পরে কিছু শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন, তাহলে দ্রুত হজম হবে। কেননা এর মধ্যে যে কার্বোহাইড্রেট আছে সেগুলো দ্রুত ভাঙতে সাহায্য করবে। সে ক্ষেত্রে আপনি অল্প পরিমাণ হাঁটতে পারেন। তবে একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন ভারী ব্যায়াম করা যাবে না। তাহলে আপনার হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী হবে না। তাই ডাল খাওয়ার সময় অল্প পরিমাণ খাবেন এবং খাওয়া শেষে একটু হাটাহাটি করবেন। এ পদ্ধতিটা যদি আপনি অনুসরণ করতে পারেন তাহলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে না।
অনেকেই পাতলা ডাল খেতে পছন্দ করে কিন্তু এইভাবে যদি আপনি মসুরের ডাল খান তাহলে আপনার গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। তাই মসুরের ডাল আপনি পানিতে ভিজে রাখার পরে ভুনা করে খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে গ্যাস্টিক কম হবে এবং যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে সে ক্ষেত্রে দারুন কাজ করবে। তাই আপনি মসুরের ডাল যদি খেতে চান, সে ক্ষেত্রে ডালে অল্প কাঁচা মরিচ এবং পানি দিয়ে সিদ্ধ করে খেতে পারেন, এতে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিবে না। তাছাড়া আপনার পাকস্থলীকে ভালো রাখবে এবং পেটব্যথা ও পেট ফাপা দেবে না।
যাদের পূর্বে থেকেই প্রচুর পরিমাণে গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা রয়েছে, তারা মসুরের ডাল পাতলা করে খাবেন না। এতে করে গ্যাস্ট্রিক আরো বেশি হবে। যদি মসুরের ডাল হালকা কাঁচা মরিচ দিয়ে ভর্তা করে খেতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম হবে। আবার আরো একটা পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন মসুরের ডাল ভর্তার মত করে ঝোল করে খেতে পারেন। আবার যাদের ঘন ঘন ডায়রিয়া হয় অথবা আইবিএস ডি এর সমস্যা রয়েছে, তারা মসুরের ডাল খাবেন না। এতে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার বৃদ্ধি পাবে। তাই যাদের হজম শক্তি কম তারা মসুরের ডাল খাবেন না।
মসুর ডাল খেলে কি ওজন কমে
অনেকে মসুরের ডাল খেতে পছন্দ করেন কিন্তু মসুর ডাল খেলে কি ওজন কমে? তা হয়তো অনেকে জানেন না। আবার মসুরের ডাল যদি নিয়ম অনুযায়ী না খাওয়া হয়। তাহলে ওজন বেড়েও যেতে পারে। চলুন, এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আমাদের মাঝে যাদের ওজন বৃদ্ধি পায় তারা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি। ওজন কমানোর জন্য বিশেষ করে যাদের চর্বি হয় তারা বিভিন্ন ধরনের খাবার, শারীরিক ব্যায়াম করে থাকেন। এজন্য শারীরিক ব্যায়ামের পাশাপাশি খাবার এর মাধ্যমেও ওজন কমানো যায়। তাই আপনি মসুরের ডাল খেতে পারেন, এতে আপনার ওজন কমবে। তাই নির্দিষ্ট সময়ে নিয়ম অনুযায়ী যদি খেতে পারেন তাহলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এজন্য প্রতিদিন মুসরের ডাল না খেয়ে সপ্তাহে দুই একদিন খেতে পারেন। এতে আপনি পুষ্টি পাবেন কিন্তু ওজন বাড়বে না।
আমরা সাধারণত বাড়িতে প্রায়ই মসুরের ডাল খেয়ে থাকি কিন্তু কোন উপায়ে খেতে হবে হয়তো এটা জানিনা। কতটুক পরিমান খেতে হবে সেটাও হয়তো জানি না। তাই এ সম্পর্কে জানা উচিত, এছাড়াও এই মসুরের ডালের মধ্যে কি পরিমান পুষ্টি থাকে সেটাও জানা উচিত। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি আছে যা আমাদের শরীরের জন্য উপকার। এই ডাল প্রায় সবাই কম বেশি খেয়ে থাকে, এর মাঝে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ থাকে যা আমাদের ওজন কমাতে দারুন কাজ করে। তাই আপনি যদি ওজন কমাতে চান সেক্ষেত্রে নিয়ম তান্ত্রিকভাবে মসুরের ডাল খেতে পারেন।
মসুর ডাল খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে
অনেকে জানতে চায় যে মসুর ডাল খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে? আসলে এই ডাল যদি আপনি পরিমাণ মতো এবং নিয়ম পদ্ধতি অনুযায়ী খান, সে ক্ষেত্রে আপনার রক্তের শর্করা বৃদ্ধি পাবে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
বিভিন্ন কারণেই মানুষের রক্তের সুগার বৃদ্ধি পায় এবং ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন খাবার খেয়েও কিন্তু আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তার মধ্যে অন্যতম মুসরের ডাল খেতে পারেন। তবে অবশ্যই পরিমাণ মতো এবং নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। মসুরের ডাল খাওয়ার ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদগণ বলেছেন যেহেতু এটা একটি জটিল কার্বোহাইড্রেট যা ভাঙতে অনেক সময় নেয়। যার কারণে রক্তের সাথে মিশে যেতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। এজন্য দ্রুতগতি কখনোই রক্তের শর্করা বৃদ্ধি পায় না, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তাই আপনি যদি পরিমাণ মত খান এই ক্ষেত্রে আপনার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং কম বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া এর মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম থাকে যার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই ডাল খাওয়ার পরে সমস্যা হয় না। এছাড়াও এর মাঝে ফাইবার রয়েছে যা রক্তের সুগার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাই আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন সেই ক্ষেত্রে যদি ডাল মসুরের ডাল খেতে চান, তাহলে অবশ্যই পরিমাণমতো খেতে হবে এবং দিনে এক বারের বেশি খেতে পারবেন না। এতে করে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে।
মসুর ডালের পুষ্টিগুণ
মসুরের ডাল অনেক উপকার করে থাকে কেননা মসুর ডালের পুষ্টিগুণ বেশি। এ সম্পর্কে আপনার জানা প্রয়োজন। চলুন, মসুরের ডাল কিভাবে খেলে আপনার পুষ্টিগুন বৃদ্ধি পাবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আপনি যদি এক কাপ মসুরের ডাল রান্না করে খেতে পারেন এতো অনেক পুষ্টি পাবেন। কেননা এর মাঝে ১৮০ ক্যালোরি থাকে,প্রোটিন ও ফাইবার রয়েছে।
এই ডাল আপনার পেটের যেকোনো ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। কারণ এর মাঝে ফাইবার থাকে যা হজমের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করবে ও বাড়তি ওজন কমাতেও ধারণ কাজ করে থাকে। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এই পুষ্টি গুলো থাকার কারণে যাদের হাঁটু ও কোমর ব্যথা রয়েছে তাদের এই সমস্যা দূর হবে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের এ সময় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। তাই আপনি এই ডাল খেতে পারেন, কারণ এর মাঝে ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাই আপনি এই মসুরের ডাল নিয়মিত খেতে পারেন।
এই মসুরের ডাল খাওয়ার একটা নির্দিষ্ট সময় বেছে নিতে হবে এবং পরিমাণমত খেতে হবে। তাহলে আপনার গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। পুষ্টিবিদদের মতামত হলো মসুরের ডালের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ আছে যা আপনার ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও এর মাঝে ফাইবার কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি থাকার কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখবে এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, হজম শক্তি ইত্যাদি সমস্যা গুলো দূর করতে সাহায্য করবে।
আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে গ্যাস্টিক, পেট ব্যথা, বদহজম ইত্যাদি সমস্যায় ভুগে থাকেন সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে। এজন্য রান্না করার পূর্বে চার ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে আপনার পুষ্টি বেশি পাবেন এবং ওজন কমানোর ক্ষেত্রে দারুন কাজ করবে। এছাড়াও আপনি এই ডালের কাবাব, বিরিয়ানি, পোলাও ইত্যাদি তৈরি করে খেতে পারবেন। এতে আপনার পেটের গ্যাসের সমস্যা থাকলে দূর হয়ে যাবে।
মসুর ডালের উপকারিতা
এই ডাল অনেকেই খেতে পছন্দ করে এবং মসুর ডালের উপকারিতা রয়েছে। তবে আপনি পরিমাণ মতো খাবেন। এতে উপকার পাবেন। চলুন, এই ডাল আমাদের কি কি উপকার করে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
হার্টকে ভালো রাখেঃ যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন অথবা হার্টকে সুস্থ রাখতে চান, তারা পরিমাণ মতো এই ডাল খেতে পারেন। এর মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম, ফলেট ও ফাইবার থাকে যা আপনার হার্টের কাজকে দ্রুত বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও যদি হার্টের কোন রোগব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেটাও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। এই ডাল আপনার রক্ত চলাচল দ্রুত করবে এতে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যার কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবেন। তাই এ ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য নিয়মিতভাবে পরিমাণ মতো মুসরের ডাল খেতে পারেন।
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করবেঃ আপনার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ফাইবারের ভূমিকা রয়েছে। যা আপনি মসুরের ডালের মধ্যে পাবেন। তাই যদি পরিমাণ মতো খেতে পারেন তাহলে আপনার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এছাড়াও যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন তাদের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এবং হাইপোপ্লাসমিয়া কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যারা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন বা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন তারা অল্প পরিমাণ করে ডাল খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরের আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার করতে সাহায্য করবে।
শক্তি যোগায়ঃ আপনি যদি শরীরে শক্তি অনেক ক্যালোরি বাড়াতে চান সে ক্ষেত্রে মসুরের ডাল বেশি করে খেতে হবে। তাহলে আপনি শক্তি পাবেন। এই ডাল খাওয়ার কারণে অল্পতেই আপনি দুর্বল হয়ে পড়বেন না এবং শরীরের শক্তি জোগাতে সাহায্য করবে। তাই আপনার শরীরে যদি পুষ্টি বা শক্তি পেতে চান তাহলে মসুরের ডাল খেতে পারেন। তাই যারা শারীরিক পরিশ্রম করে থাকেন যেমন দিনমজুর রিকশাচালক এ ধরনের মানুষ গুলো সাধারণত মসুরের ডাল খেয়ে থাকে, এতে করে তাদের শরীরে অনেক শক্তি পায়।
গর্ভবতীর জন্য উপকারঃ একজন গর্ভবতী এই সময় প্রচুর পরিমাণে আয়রন ফলেট প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই আপনার শরীরে যদি রক্ত বৃদ্ধি করতে চান সেই ক্ষেত্রে আয়রন ও ফলিক এসিড খেতে হবে। সেক্ষেত্রে মসুরের ডাল খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে আয়রন ও ফলেট দুটোই রয়েছে। তাই আপনি এটা খেতে পারেন এছাড়া আপনার রক্তস্বল্পতা দূর করতে দারুন কাজ করে থাকে। এজন্য যারা গর্ভবতী রয়েছেন তারা নিয়মিত ভাবে পরিমাণ মতো এই মসুরের ডাল খেতে পারেন।
খারাপ কোলেরস্টল এর মাত্রা কমায়ঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ডালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা রক্তে মিশে যাওয়ার কারণে খারাপ কোলেরস্টলের মাত্রা কমাতে পারে। এছাড়াও হার্টকে সুস্থ রাখতে এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা কম থাকে। তাই আপনি যদি খারাপ কোলেরস্টল কমাতে চান সে ক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে অল্প পরিমাণে এই মুসুরের ডাল খেতে পারেন। এতে আপনার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপ বা বড় ধরনের রোগ রয়েছে তারা এই মসুরের ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
তারণ্যকে ধরে রাখেঃ যাদের ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে গেছে এবং বার্ধক্য মনে হয়। তারা এই মসুরের ডাল খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে এন্টি এজিং থাকে যা আপনার বয়সের সমস্যাকে দূর করবে। ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই থাকে যা আপনার বার্ধক্যকে দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য যারা বার্ধক্য দূর করতে চান তারা নিয়মিত ভাবে এই মসুরের ডাল খেতে পারেন। এছাড়াও শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম সাথে যুক্ত থাকতে হবে। তাহলে আপনার তারণ্যকে ধরে রাখতে পারবেন।
যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে এবং রাতকানা রোগের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা এই মসুরের ডাল খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে যা আপনার চোখের সমস্যা দূর করতে এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়া যারা দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তারা এই মসুরের ডাল খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা আপনার দাঁতকে শক্ত এবং মজবুত করবে। এছাড়াও শিশুদের দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং অতি সহজে দাঁত পড়বে না।
মসুরের ডালের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
যারা এই ডাল অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন তাদের ক্ষেত্রে যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে এবং যে যে রোগের কারণে এই ডাল খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বা ক্ষতি হতে পারে। চলুন, ডাল খেলে শরীরে কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া করে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ইউরিক অ্যাসিডঃ যারা আগে থেকেই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিতভাবে এই ডাল খেলে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পায়। কেননা এর মাঝে প্রোটিন রয়েছে এবং এছাড়া পিউরিন নামক উপাদান আছে যা আপনার ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি করতে পারে। তাই যাদের বাত ব্যথা সমস্যা রয়েছে তারা এই মসুরের ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কেননা মসুরের ডাল নিয়মিত ভাবে খেলে এটা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। কেননা ইউরিক অ্যাসিড বাত ব্যথা আরো বেশি বৃদ্ধি করে। তাই মসুরের ডাল পরিমান মত খাবেন অতিরিক্ত খাবেন না।
কিডনির সমস্যাঃ যারা কিডনির সমস্যা নিয়ে ভুগছেন তারা এই মসুরের ডাল খাবেন না। কেননা পুষ্টবিদরা বলেছেন যে এর মাঝে অক্সলেট থাকে, এটা খাওয়ার কারণে অক্সালেট বৃদ্ধি পায় যা আপনার কিডনিতে পাথর ও ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। তাই আপনার যদি কিডনির সমস্যা থাকে ও কিডনি সুস্থ রাখার জন্য ওষুধ খেয়ে থাকেন। তারা কখনোই মসুরের ডাল খাওয়া খাবেন না। এতে করে আপনার আরো কিডনির সমস্যা বেশি হবে।
এলার্জির সমস্যাঃ যাদের আগে থেকেই এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা মসুরের ডাল খাবেন না। এতে আপনার গায়ের র্যাশ উঠতে পারে এবং সারা শরীর ফুলেও যেতে পারে। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে চুলকানি হতে পারে। আর যাদের এজমা বা হাঁপানি রয়েছে তাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে তাই এই ধরনের যাদের সমস্যা রয়েছে তারা এই ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যখন আপনার শ্বাসকষ্ট খুবই কম থাকে এবং সুস্থ থাকেন সেই ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো অল্প করে খেতে পারেন।
গ্রীষ্মকালে সাধারণত আমাদের শরীরে এমনি তাপমাত্রা বেশি থাকে, তার মধ্যে যদি মুসুরের ডাল খাওয়া হয় এতে আমাদের শরীরে আরো তাপমাত্রা বেশি হবে। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন গ্রীষ্মকালে অত্যন্ত গরমের মাঝে মসুরের ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক কোনো গবেষণা পাওয়া যায়নি তবে যদি আপনার শরীরে সমস্যা দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে খাবেন না। যদি আপনার শরীরে কোন সমস্যা না হয় সে ক্ষেত্রে এই ডাল খেতে পারেন।
এই মসুরের ডাল এক প্রকার মুখরোচক খাবারের মতো, মুখের স্বাদ বৃদ্ধি করে। যার কারণে আপনি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হবে। বিশেষ করে পেট ব্যথা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এছাড়া কার্বোহাইড্রেট বেশি বৃদ্ধি পেলে আপনার হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই আপনি অতিরিক্ত ভাবে খাবেন না। এতে অনেকের ডায়রিয়া বা আইবিএস এর সমস্যা হতে পারে। এসিডিটির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই এটা পরিমাণ মতো খুবই কম খাবেন।
শেষ কথাঃ মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয় ও যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন
পরিশেষে বলা যায় যে মসুরের ডাল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। তবে যদি আপনার গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। তাহলে আপনার গ্যাস্ট্রিক হবে না। তবে মসুরের ডাল সবাই খেতে পারেনা। এই ক্ষেত্রে প্রায় লোকেরই দেখা যায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। তাই মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয়? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে উপস্থাপন করা হয়েছে, আশা করি এই নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url