বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে ও ভিসা খরচ কত ২০২৫
বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ভিসায় মালয়েশিয়া যায় কিন্তু মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে? এ সম্পর্কে হয়তো অনেকে জানেনা। চলুন, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য যে কাগজপত্র গুলো লাগে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যখন কাজের ভিসার জন্য অথবা অন্য কোন ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাবেন। সেই ক্ষেত্রে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে। তাই মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃবাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে? ও ভিসা খরচ কত ২০২৫
মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে
বাংলাদেশের অনেক লোক জানতে চায় যে, মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে? মালয়েশিয়ার ভিসা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। চলুন, যে ডকুমেন্টস গুলো আপনার প্রয়োজন সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি এদেশে সরকারি ভাবে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে যে কাগজপত্র গুলো লাগবে তা হল; স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট দিতে হবে। বিএমইটি কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন কার্ডের প্রয়োজন, পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয় পত্র, কোম্পানির অফার লেটার, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, কোম্পানির কাজের চুক্তিপত্র, যদি আপনার অভিজ্ঞতা থাকে তার সার্টিফিকেট, বৈধ পাসপোর্ট, তাছাড়া সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি, এছাড়া বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র লাগতে পারে। আপনি যদি মালয়েশিয়ায় সরকারিভাবে যেতে চান তাহলে উপরোক্ত কাগজ গুলো লাগবে।
কাগজপত্র ডকুমেন্টস এর পাশাপাশি আপনি কিভাবে আবেদন করবেন সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। প্রথমত আপনি যদি সরকারি মাধ্যমে যেতে চান, তাহলে যে ভিসা করবেন তার ক্যাটাগরি সিলেক্ট করতে হবে। এরপরে সেই অনুযায়ী আপনাকে ভিসা আবেদন করতে হবে। মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য এই ভিসা আবেদন করা খুবই সহজ। আপনি অনলাইনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করবেন, সে ক্ষেত্রে এজেন্সির সহযোগিতা নিতে পারেন। তাছাড়া বিএমইটি এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন অথবা আমি প্রবাসী অ্যাপ এর মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
আরো পড়ুনঃ লাওস যেতে কত টাকা লাগে ও বেতন কত
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য বিএমইটিতে গিয়ে আপনি মালয়েশিয়ার ভিসা আবেদন করবেন। এটা মূলত বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জেলায় আপনি যোগাযোগ করলে পেয়ে যাবেন। সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিবেন এবং রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। তবে আপনি এজেন্সির মাধ্যমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে এজেন্সি আপনাকে সহযোগিতা করবে।এরপরে ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট এর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি ভিসা ক্যাটাগরি থেকে ফর্ম ডাউনলোড করে পূরণ করেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ভিসা ফি পরিশোধ করে জমা দিতে পারবেন।
বর্তমানে সবচাইতে জনপ্রিয় একটি অ্যাপ রয়েছে যার নাম আমি প্রবাসী। এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসা আবেদন করা যায়। এটা খুবই সহজ পদ্ধতি করা হয়েছে, তাই আপনি যদি মালয়েশিয়াতে যেতে চান সেই ক্ষেত্রে এই অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এখানে কাগজপত্র স্ক্যান করে জমা দিতে পারবেন। এরপরে এই অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির চাকরি খুজতে পারবেন, আবেদন করে জব অফার লেটার পেতে পারেন। এরপরে কিছু টাকা পেমেন্ট করতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনাকে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
মালয়েশিয়া বিভিন্ন ভিসার মাধ্যমে যাওয়া যায়। তাই বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে? এ সম্পর্কে আপনাকে বিস্তারিত জানতে হবে। চলুন, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য কোন ভিসার কত টাকা লাগতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে। ভিসা ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে ভিসার দাম কম বেশি হয়ে থাকে। যেহেতু বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে যায়। সে ক্ষেত্রে তাকে কাজের ভিসা করতে হবে। তাছাড়া সরকারিভাবে যদি যেতে চান তাহলে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত লাগতে পারে। কেননা বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই শ্রমিক হিসাবে মালয়েশিয়াতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনার ভিসা আবেদন ফি এবং বিমান খরচ ইত্যাদি অনেক খরচ হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে সরকারি ভাবে গেলে আপনার ৫ লক্ষ টাকার মত খরচ হয়ে যাবে। তবে এই টাকা কম বেশি হতে পারে।
মালয়েশিয়াতে সাধারণত কৃষি , শ্রমিক , কারখানা, নির্মাণ ইত্যাদি কাজের উপরে ভিসা করে থাকে। সে ক্ষেত্রে এজেন্সির মাধ্যমে গেলে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মত খরচ হবে। তবে এটা এজেন্সির উপর নির্ভর করবে কত টাকা খরচ হবে। আপনি যদি পড়াশোনার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়াতে যেতে চান সে ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট ভিসায় খরচ হবে ৩ লাখ টাকার মত। এছাড়া যদি বিজনেস ভিসায় যান তাহলে ৬ লাখ টাকার মত খরচ হবে। মেডিকেল ভিসা অনেকে যেতে চায় সেক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকার মত লাগবে। গার্মেন্টস এর উপর ভিসা করে গেলে ৬ লাখ টাকার মত লাগবে। আশা করি ভিসার দাম সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।
আপনি যদি ক্লিনার বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য মালয়েশিয়াতে যেতে চান সে ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকার মত খরচ হবে। আপনার যদি ড্রাইভিং কাজের অভিজ্ঞতা থাকে সেক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ড্রাইভিং ভিসা করার জন্য মালয়েশিয়াতে যেতে ৫ লাখ টাকার মত লাগবে। যদি কৃষি কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে কৃষি কাজের উপরে যেতে পারেন এক্ষেত্রে খরচ হবে ৫ লাখ টাকার মত। ফ্যাক্টরি বা কলকারখানা ফুড উৎপাদনকারী অথবা ডেলিভারি ম্যান ইত্যাদি কাজের জন্য ভিসা খরচ হবে ৬ লাখ টাকার মত। তাই আপনি এই কাজ গুলোর জন্য ভিসা করে যেতে পারেন।
তাছাড়া উচ্চমানের যে পেশা গুলো রয়েছে যা মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি নিয়ে থাকে। এই ধরনের কোম্পানিতে আপনি প্রফেশনাল মানের যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলোর দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে যেতে পারেন, এতে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে। যেমন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল, কল কারখানার বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ার অথবা আইটি সেক্টরের যদি আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থাকে সেক্ষেত্রে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে আপনার ৫ লাখ টাকার মত লাগবে। তাছাড়া বেসরকারিভাবে গেলে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মত লাগবে।
মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত
মালয়েশিয়া বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে, কাজের বেতনও আলাদা। তাই মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত? আসলে আপনি কি কাজ করবেন তার ওপর নির্ভর করবে কত টাকা বেতন পাবেন। চলুন মালয়েশিয়া বেতনের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশের প্রচুর শ্রমিক কাজ করে থাকে। বিশেষ করে নির্মাণ কাজ, কৃষি কাজ কনস্ট্রাকশন ইত্যাদি ধরনের কাজগুলো করে থাকে। তাছাড়া বড় ধরনের চাকরি পেশাজীবীরা রয়েছে যেমন ইঞ্জিনিয়ার, অফিসার ম্যানেজার ইত্যাদি কাজ গুলোর জন্য মানুষ যায়। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট লাগে। যেহেতু মালয়েশিয়া অনেক শহর রয়েছে যেগুলোতে শ্রমিক লাগে, সেক্ষেত্রে যে কোন ছোটখাটো কাজ করলেও মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। যেমন ক্লিনার, ড্রাইভিং, দোকানের কাজে মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বেতন পায়।
আপনি যদি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন সে ক্ষেত্রে মাসে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মত ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও কৃষি কাজ করলে ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়। ইলেকট্রনিক কাজ যদি জানা থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি মাসে ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন। এছাড়াও ফ্যাক্টরির কাজ, ডেলিভারি ম্যান, মেকানিক্যাল কাজে সহযোগিতা করা এই ধরনের কাজগুলো করলেও ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মত বেতন পাওয়া যায়। তাছাড়া বড় ধরনের সুপার মার্কেট গুলোতে কর্মচারী হিসেবে কাজ করলে তারা ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
এছাড়া ড্রাইভিং এর কাজ যদি ভালো অভিজ্ঞতা থাকে সেক্ষেত্রে ৬০ হজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মত বেতন পাওয়া যায়। তাছাড়া মালয়েশিয়াতে গার্মেন্টস কাজেরও গুরুত্ব রয়েছে। সেক্ষেত্রে একজন সাধারণ কর্মী ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মত ইনকাম করতে পারে। কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য লোক নিয়ে তাকে সেক্ষেত্রে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়। রেস্টুরেন্টের কাজ রয়েছে সেখানে আপনি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেতন পাবেন। এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে যেমন রাজমিস্ত্রি, হোটেলের বয়, ওয়েল্ডিং এর কাজ করতে পারেন।
মালয়েশিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি
মালয়েশিয়া যেহেতু একটি উন্নত রাষ্ট্র তাই বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে। তাই মালয়েশিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি? এদেশের বিভিন্ন ধরনের কাজ আছে। কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
মালয়েশিয়া বাংলাদেশের লোকজন বেশি কাজ করে থাকে কৃষি কাজ বা নির্মাণ কাজ, ইলেকট্রনিক কাজ এর সহযোগিতা করা অথবা মেকানিকের কাজের সহযোগিতা করা, কনস্ট্রাকশনের কাজ। তাছাড়া পাইপ ফিটিং করা, টাইলস মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, মেডিকেলের প্লানার, রেস্টুরেন্টের কর্মী, গার্মেন্টস এর কাজ, ড্রাইভিং, বাসা বাড়ির গৃহিণী, রাস্তা পরিষ্কার করা ইত্যাদি ধরনের কাজগুলো রয়েছে। এগুলো গুরুত্ব রয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশের লোকজন এই ধরনের কাজগুলোই বেশি করে থাকে। তাই আপনিও যদি এই সকল কাজে করতে চান, তাহলে মালয়েশিয়াতে ভিসা করে যেতে পারেন।
মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে
মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য বয়সের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে? এ সম্পর্কে যদি আপনার জানা থাকে। তাহলে সুবিধা হবে চলুন মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য কত বয়স লাগতে পারে সে সম্পর্কে জানা যাক।
প্রত্যেকটা দেশের কাজের জন্য লোক নিয়োগ দিয়ে থাকে, তাদের বয়সের সীমাবদ্ধতা থাকে। মালয়েশিয়াতেও যখন কোন শ্রমিক নিয়োগ দিবে প্রত্যেকটা কোম্পানি বয়সের সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে যখন আপনি এই দেশের বিভিন্ন কাজের জন্য ভিসা করবেন সে ক্ষেত্রে আপনার বয়স নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আপনি যদি কাজের উদ্দেশ্যে দেশে যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনার সর্বনিম্ন ১৮ বছর হওয়া লাগবে। তবে যদি আপনি স্টুডেন্ট ভিসা যেতে চান সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বয়স নির্ধারণ করে দেয়, যা আপনি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
এছাড়াও সাধারণত প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টদের ভিসা করার ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যেই আবেদন করার যোগ্যতা হয়ে থাকে। তবে যদি আপনি টুরিস্ট ভিসায় যেতে চান সেক্ষেত্রে বয়সের সীমাবদ্ধতা নেই এক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতি লাগে। আপনি ১৮ বছর বয়সের নিচে হলেও যেতে পারবেন। তাছাড়া অনেকেই বিজনেস করতে যেতে চায় বা কোম্পানির কাজের জন্য যেতে চায় সেক্ষেত্রে আপনার বয়স ২১ বছর লাগবে। কেননা কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের বয়স নির্ধারণ করে দিয়ে থাকে অথবা আপনার বিজনেস করার ক্ষেত্রে এই ২১ বছর প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার দূরত্ব কত কিলোমিটার
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার দূরত্ব তেমন বেশি নয়। তাই বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার দূরত্ব কত কিলোমিটার? এ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনার সুবিধা হবে। কেননা আপনি নির্ধারিত সময় বের হতে পারবেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার দূরত্ব ধরা হয়েছে ৩৭৪৫ কিলোমিটারের মতো। তাছাড়া মাইল হিসেবে দূরত্ব হবে ২৩২২ মাইল এর মত। তাই মালয়েশিয়ার দূরত্ব বেশি নয় সে ক্ষেত্রে সময়ও কম লাগবে। এক্ষেত্রে আপনি আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কত সময় লাগে
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি যে মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে? এখন জানবো বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় সম্পর্কে। আসলে এটা নির্ভর করবে দূরত্বের ওপর। এছাড়াও বিমানের কোয়ালিটির উপরও নির্ধারণ করে থাকে কত সময় লাগতে পারে। চলুন, সময় বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় সময় সম্পর্কে জানতে চান সে ক্ষেত্রে প্রথমত আপনাকে জানতে হবে কেমন ধরনের বিমানের মাধ্যমে আপনি যাচ্ছেন। যদি ভালো কোয়ালিটি বা বিজনেস ক্লাসের বিমান হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে অল্প সময় লাগবে। কেননা এই সকল বিমানগুলো দ্রুত গতিতে পৌঁছাতে পারবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যদি সরাসরি ফ্লাইট করে যেতে পারেন তাহলে আপনার ৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিটের মতো লাগতে পারে। সর্বোচ্চ ৪ ঘন্টা লাগতে পারে, তাছাড়া যদি কোথাও বিরতি দিতে হয় সে ক্ষেত্রে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।
মালয়েশিয়া টু বাংলাদেশ বিমান ভাড়া কত
বাংলাদেশের অনেক লোকজন মালয়েশিয়াতে কাজ করছে তারা জানতে চায় যে, মালয়েশিয়া টু বাংলাদেশ বিমান ভাড়া কত? আসলে এটা নির্ভর করবে কেমন বিমানের মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছেন। চলুন বিমান ভাড়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
যে সকল প্রবাসীরা কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের ঢাকাতে আসতে চাচ্ছেন। তারা বিমানের টিকিটের দাম কত হবে সেটা অনেকেই জানে না। এটা নির্ভর করবে বিজনেস অথবা লোকাল বিমানের উপরে। আপনি যদি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ পড়বে ২৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার মত। তাছাড়া আপনি যদি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসার চিন্তাভাবনা করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার বিমানের ভাড়া হবে ২৫ হাজার থেকে ২৭ হাজার টাকার মত।
অনেকেই ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স বিমানের মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসে তাদের সাধারণত বিমানের টিকিটের ভাড়া মোটামুটি কম রয়েছে, সে ক্ষেত্রে ভাড়া হবে ২২ থেকে ২৪ হাজার টাকার মত। এটা ভারতে এসে একটি বিরতি দিবে এরপরে আপনার বাংলাদেশে পৌঁছাবে, সময় লাগবে প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার মতো কিন্তু এই বিমানের খরচ অত্যন্ত কম। এছাড়া আপনি শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসতে পারেন সে ক্ষেত্রে বিমান ভাড়া একটু বেশি হবে ৯০ থেকে প্রায় ৯৫ হাজার টাকার মত লাগতে পারে। এটাও শ্রীলঙ্কায় এসে একবার বিরতি দিতে পারে।
ভালো মানের বিমানের মধ্যে যেমন সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স রয়েছে এই বিমানের মাধ্যমে যদি আপনি মালয়েশিয়া থেকে ঢাকায় আসেন সেক্ষেত্রে আপনার ভাড়া পড়বে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মত। আসতে প্রায় ১৫ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। আর আপনি যদি এয়ার এশিয়া এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসতে চান সেক্ষেত্রে বিমান ভাড়া হবে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো। তাছাড়া আপনি থাই এয়ারওয়েজ বিমানের মাধ্যমে আসতে পারেন সে ক্ষেত্রে ৩৬ হাজার থেকে ৩৮ হাজার টাকার মত খরচ হবে। তবে এই বিমান সাধারণত ব্যাংকক বিরতি দিবে।
আপনি যদি মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স বিমানের মাধ্যমে বাংলাদেশ আসতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনার বিমানের ভাড়া পড়বে ৩৮ হাজার টাকার মতো। এক্ষেত্রে সরাসরি ফ্লাইট ৩ থেকে ৪ ঘন্টার মাধ্যমে চলে আসতে পারবেন। এছাড়াও মালিন্দ এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে যদি আপনি মালয়েশিয়া থেকে বাংলা ঢাকায় আসেন বিমান ভাড়া হবে ৩৮ হাজার টাকার মত। এটাও সরাসরি ফ্লাইট হবে। উপরোক্ত বিমানগুলো সাধারণত ইকোনমিক ক্লাসের বিমান যার কারণে ভাড়া বিজনেস ক্লাসের চাইতে কম হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি বিজনেস ক্লাসের বিমানে আসতে চান তাহলে ভাড়া প্রায় ৭০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা।
বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া বিমান ভাড়া কত
বাংলাদেশের লোকজন জানতে চায় যে বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া বিমান ভাড়া কত? আসলে এটা বিভিন্ন দেশের বিমানের ভাড়া বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এটা বিমান কোম্পানির উপর নির্ভর করবে। চলুন, বিমান ভাড়া সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি ইকোনমিক বিমানের মাধ্যমে যেতে চান,সেক্ষেত্রে বিজনেস ক্লাসের বিমানের চাইতে কম খরচ হবে। সেক্ষেত্রে যদি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে মালেশিয়া যেতে চান সেই ক্ষেত্রে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো লাগবে। তাছাড়া যদি আপনি বিজনেস ক্লাসের বিমানের মাধ্যমে যান সে ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। এছাড়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ভাড়া হবে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা। তবে যদি এই বিমানের বিজনেস ক্লাসের মাধ্যমে যেতে চান সেই ক্ষেত্রে ভাড়া হবে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মত।
তাছাড়া আপনি যদি মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স বিমানের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যান সে ক্ষেত্রে ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। এছাড়া যদি আরো ভালো কোয়ালিটির বিমানের মাধ্যমে যান তাহলে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা লাগবে। শ্রীলংকান বিমান এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে যদি মালয়েশিয়া যান সে ক্ষেত্রে আপনার বিমান ভাড়া হবে ৭০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকার মতো। কিন্তু এই বিমানের বিজনেস ক্লাসের মাধ্যমে যান সে ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। হয়তো কম বেশি হতে পারে।
আপনি যদি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমানের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় যেতে চান সেই ক্ষেত্রে বিমান ভাড়া হবে ৫৫ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই বিমানের বিজনেস ক্লাসের বিমানের মাধ্যমে যান সে ক্ষেত্রে ভাড়া হবে ১ লক্ষ ১৮ হাজার টাকার মত। এছাড়াও এয়ার আরাবিয়া বিমানের মাধ্যমে মালেশিয়া যান সে ক্ষেত্রে বিমান ভাড়া হবে ৭৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মত। এছাড়াও আপনি যদি ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে যান সেই ক্ষেত্রে খরচ হবে ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মত। এছাড়াও এই বিমানের বিজনেস ক্লাসের সিট ভাড়া ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকার মত খরচ হবে।
আপনি যদি কাতার এয়ারওয়েজ বিমানের মাধ্যমে যেতে চান সেক্ষেত্রে বিমানের ভাড়া হবে ৪৯ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৭৫ টাকার মত। এছাড়াও এই বিমানের বিজনেস ক্লাসের মাধ্যমে গেলে ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। এছাড়া আপনি যদি ইতিহাদ বিমানের মাধ্যমে মালয়েশিয়া যেতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনার বিমান টিকিটের দাম হবে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মত। এছাড়াও এই বিমানের ইকোনমি ক্লাসের বিমান ভাড়া একটু কম রয়েছে সেক্ষেত্রে ৬৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মত।
উপসংহারঃ বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে ও ভিসা খরচ ২০২৫
পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কাজের জন্য যেতে চান সে ক্ষেত্রে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে। এই কাগজপত্র গুলো আগে থেকে আপনাকে সংগ্রহ করে রাখতে হবে। তবে বিভিন্ন ভিসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র লাগতে পারে। এজন্য আপনি যদি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান সে ক্ষেত্রে তাদের থেকে জেনে নিতে পারেন। তাই মালয়েশিয়া যেতে কি কি কাগজ লাগে? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, আশা করি আপনার উপকার হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url