মাশরুম খাওয়া হালাল না হারাম এই সম্পর্কে হাদিস জেনে নিন

মাশরুম এমন একটি খাদ্য যা খাওয়ার অনেক উপকার রয়েছে। তাই মাশরুম খাওয়া হালাল না হারাম? এটা সম্পর্কে গ্রামের লোকজন তেমন একটা জানেনা। চলুন, মাশরুম খাওয়া যাবে কিনা সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
মাশরুম এমন একটি খাদ্য যা শরীরে আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রচার করবে। তবে এই খাবারটি ইসলামী শরীয়তে জায়েজ আছে কিনা? সেটা আমাদের জানতে হবে। তাই তাই মাশরুম খাওয়া হালাল না হারাম? সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃমাশরুম খাওয়া হালাল না হারাম এই সম্পর্কে হাদিস জেনে নিন

মাশরুম খাওয়া হালাল না হারাম

অনেকে জানতে চায় যে মাশরুম খাওয়া হালাল না হারাম? আসলে ইসলামে হালাল-হারাম সম্পর্কে খাবার সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই এই বিষয়ে আমাদের জানতে হবে। চলুন, মাশরুম আমাদের খাওয়া জায়েজ আছে কিনা সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

মাশরুম একটি সুস্বাদু খাবার যা অনেকে খেয়ে থাকে, তবে হয়তো মুসলিম হিসেবে অনেকে এই খাবারটি হালাল কি হারাম সে সম্পর্কে জানেনা। কেননা এই খাবারটি সাধারণত সচরাচর তেমন প্রচলিত নাই। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে লোকগুলো এই মাশরুম বেশি খায় না। তারা মনে করে এটা খাওয়া জায়েজ নেই। তবে এটা একটি সবজির মত এবং এর বহু উপকার রয়েছে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে, এছাড়াও এটা ওষুধ হিসাবে কাজ করে থাকে। যদিও এটা অনেক জনপ্রিয় এবং সবার নিকট চাহিদা রয়েছে। তবে এই খাবারটি সাম্প্রতিক শহরাঞ্চলের লোকজন বেশি খেয়ে থাকে।

তবে বর্তমানে অনেক লোকজন সাধারণত এই মাশরুমের গুনাগুন সম্পর্কে জানে। তাই ইসলামী দৃষ্টিকোণে এই খাবারটি জায়েজ আছে কিনা, সেটা আমাদের জানতে হবে। গ্রাম অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ জন এটা ব্যাঙের ছাতা হিসেবে মনে করে এবং এই খাবারটি হারাম বলে তারা বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু এই ধারণাটি একদমই ভুল, কেননা এই মাশরুম এবং ব্যাঙের ছাতা অবশ্যই পার্থক্য রয়েছে। এটা একদমই এক জিনিস না, ব্যাঙের ছাতা সাধারণত অপরিষ্কার জায়গা ও ময়লা আবর্জনার মধ্যে হয়ে থাকে। যার কারণে বিভিন্ন বিষাক্ত প্রজাতির হয়ে থাকে, যা খেলে আমাদের শরীরে ক্ষতি হবে।
তবে মাশরুম এমন একটি খাদ্য যেটা সাধারণত চাষাবাদ করা হয় এবং বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয়ে থাকে। এটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায় ভালো পরিবেশে চাষাবাদ করা হয় বা উৎপাদন করা হয়। এটা আমাদের শরীরের জন্য উপকার এবং স্বাস্থ্যকর ভাবেই উৎপাদন করা হয়ে থাকে। মুসলমানরা এই মাশরুম নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন, যদি এটা চাষাবাদে যুক্ত হয়। কেননা এ সম্পর্কে কোরআন হাদিসে আলোচনা করা হয়েছে, বিশেষ করে এই মাশরুমকে মান্না সালওয়ার খাবারের সাথে তুলনা করা হয়েছে। যাকে বলা হয় আসমান থেকে খাবার অবতীর্ণ হওয়া। তাই এই খাবারটা অনেকটা পবিত্র এবং হারাম নয়।

এই মাশরুম মুসলমানরা নিশ্চিন্তে খেতে পারেন, এ সম্পর্কে বুখারী শরীফে সহিহ হাদিস রয়েছে। নবী করীম সাঃ বলেছেন, মাশরুম এটা এমন একটি খাবার যা মান্না সালওয়ারের মত এক শ্রেণীর খাদ্য। যা এর রস যদি চোখে লাগানো যায় সেটা ওষুধ হিসেবে কাজ করবে। তাই এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে এই মাশরুম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকার। তবে উৎপাদন প্রক্রিয়া যদি হারাম এবং অপরিছন্নভাবে উৎপাদন বা চাষাবাদ করা হয়, সে ক্ষেত্রে মাশরুম হালাল হবে না। তাছাড়া স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা এর পুষ্টি সম্পর্কে অনেক বর্ণনা করেছেন এবং মাশরুম খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

মাশরুম কি

অনেকে জানতে চায় যে, মাশরুম কি? পুষ্টিবিদরা এটাকে ছত্রাক হিসেবে বলে থাকে। বিভিন্ন ধরনের মাশরুম আছে। তাই সব ধরনের মাশরুম খাওয়া যাবে না। অনেক গুলো বিষাক্ত আছে, যা জঙ্গলে হয়ে থাকে। এজন্য অর্গানিক বা নিজে চাষ করা মাশরুম খেতে পারবেন। আমাদের দেশে মাশরুম বলতে সাধারণত ব্যাঙের ছাতাকে বলা হয়ে থাকে। যার কারণে অনেকে এখন পর্যন্ত এটা খায় না। যদিও গ্রামের মানুষ এগুলো পছন্দ করেনা। বেশিরভাগ শহরের মানুষজন এটা খেয়ে থাকে। তবে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ করা হচ্ছে, যা আমাদের শরীরের জন্য উপকার।

মাশরুম এর পুষ্টিগুণ

মাশরুম এর পুষ্টিগুণ অনেক রয়েছে। তাই এর বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। কেননা এই মাশরুম আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের বিরুদ্ধে কাজ করবে। তাই নিয়মিতভাবে আপনি এই মাশরুম খেতে পারেন। তবে অবশ্যই সতর্কতার সাথে খেতে হবে। কেননা এটা যদি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে উত্তোলন করা হয় সেক্ষেত্রে শরীরে বিষাক্ত হিসেবে কাজ করবে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন থাকে। এছাড়াও এর মধ্যে ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি, ইত্যাদি আছে। মাশরুমের পাশাপাশি মটরশুটি খেতে পারেন, এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি থাকে।

মাশরুম খেলে কি উপকার হয়

যে মাশরুম অর্গানিকভাবে চাষ করা হয়ে থাকে, সেটা আমাদের উপকার করে। তাই মাশরুম খেলে কি উপকার হয়? সে সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন, মাশরুম কিভাবে আমাদের শরীরে উপকার করতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনের প্রয়োজন হয় এবং গর্ভস্থ শিশুরও ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। এজন্য মাশরুম খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মাঝে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন, মিনারেল সকল কিছু পাওয়া যায়। যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে। এছাড়াও ভিটামিন সি রয়েছে, যা স্কার্ভি বা শিশুর বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি দিতে পারে। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা শর্করা ও ফ্যাট জাতীয় খাবার গুলো খেতে পারে না। তাই মাশরুম খেতে পারেন। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে, যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।

যাদের চর্মরোগ রয়েছে তারা অনেক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। কেননা এই রোগ সারতে চায় না, এজন্য আপনি মাশরুম খেতে পারেন। কেননা এটা বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। এছাড়া যাদের রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা মাশরুম খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে পটাশিয়াম থাকে, যা আপনার রক্তনালীর সংকোচন কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই কারো যদি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হয়ে থাকে তারা এই মাশরুম খেতে পারেন। এতে আপনার উচ্চ রক্তচাপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এছাড়াও হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

মাশরুম এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে যা আপনার লাল মাংসের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন, যেহেতু ডায়েটের ক্ষেত্রে লাল মাংস খাওয়া নিষেধ। তাই আপনি ক্যালরি এবং কোলেস্টেরল ও ফ্যাট কমানোর জন্য মাশরুম খেতে পারেন। এছাড়াও হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখার জন্য মাশরুম খাওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার শরীরকে বিভিন্ন ধরনের চাপ থেকে রক্ষা করতে পারবে। এছাড়াও মাশরুম খাওয়ার কারণে আপনার চেহারায় বয়সের ছাপ পড়বে না। এটা আপনার তারণ্য ধরে রাখার জন্য সাহায্য করবে।
অনেকে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছেন এবং স্ট্রোকের ঝুকি রয়েছে। তারা এই খারাপ কোলেস্টেরল গুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মাশরুম খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে ইরাটাডেনিন, অ্যান্টাডেনিন আছে যা আপনার খারাপ কোলেস্টেরল গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। এজন্য আপনি নিয়মিতভাবে মাশরুম খেতে পারেন এতে আপনার স্বাস্থ্য এবং শরীর ভালো থাকবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে যদি আপনি নিয়মিতভাবে মাশরুম খেতে পারেন, সে ক্ষেত্রে অ্যালজাইমারস রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও পারকিংস নামের রোগটি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

যাদের মেজাজ সবসময় খিটখিটে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতে পারে। এজন্য আপনি মেজাজকে ঠিক রাখার জন্য মাশরুম খেতে পারেন। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে যে এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অক্সিডেটিভ থাকে যা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া অনেক সময় মানুষের মনে বিষন্নতা দেখা দেয়, এই ধরনের বিষন্নতা দূর করতে এটা খেতে পারেন। যাদের অত্যাধিক ওজন রয়েছে, তারা নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার পাশাপাশি মাশরুম খেতে পারেন, কারণ এটা ওজন কমাতে দারুন কাজ করে থাকে। এর ভিতর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা চর্বি কমাবে।

যারা দীর্ঘদিন যাবত আমাশয় সমস্যা ভুগছেন। তারা মাশরুম খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে ইলোডিন নামের এক ধরনের উপাদান থাকে যা আমাশার ক্ষেত্রে খুবই উপকার করবে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ডি থাকে যা আপনার শিশুর দাঁত ও হাড় গঠনের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এজন্য নিয়মিত মাশরুম খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও এটা অ্যাস্ট্রজেন হরমোন এর ক্ষতি করবে, সেটা পুরো দমন করতে সাহায্য করবে। তাছাড়া স্তন ক্যান্সারের ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও প্রতিবাদ করতে পারে।

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময় রক্ত স্বল্পতা বেশি দেখা যায়, এজন্য বিভিন্ন ধরনের খাদ্য খাওয়া যেতে পারে। তার মধ্যে আপনি মাশরুম খেতে পারেন, কেননা এর মধ্যে আয়রন ও ফলিক এসিড আছে যা আপনার রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করবে। এটা এমন একটি উপকারী উপাদান যা আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করবে। বিশেষ করে ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করার জন্য মাশরুম খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করার জন্য সূর্যের আলোতে কিছুক্ষণ থাকতে পারেন। এতে ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে।

মাশরুম এর অপকারিতা

মাশরুম অনেক উপকার করে থাকে কিন্তু মাশরুম এর অপকারিতাও রয়েছে। যদি আপনি নিয়ম অনুযায়ী না খেতে পারেন, তাহলে শরীরে আরো ক্ষতি বেশি হবে। তাই পরিমাণ মতো নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। চলুন, এটা আমাদের কি ক্ষতি করতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

মাশরুম এমন একটি খাদ্য যা খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায় কিন্তু যদি এই সবজিটি অল্প সিদ্ধ করে বা কাঁচা অবস্থায় খেয়ে থাকেন, তাহলে আপনার হজমের সমস্যা দেখা দিবে। এছাড়াও যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের এলার্জি আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে এবং চুলকানি শুরু হবে। তাছাড়া এই মাশরুম খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে পরীক্ষা করে নিতে হবে যে এটা বিষাক্ত কিনা। এছাড়া যাদের কিডনি রোগের সমস্যা রয়েছে তারা এই মাশরুম খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। প্রত্যেকটি খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।

বিশেষ করে মাশরুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আছে কিনা এবং এই খাদ্যটি কোথা থেকে উৎপাদন করা হয়েছে, এর ভিতরে কোন বিষাক্ত উপাদান আছে কিনা? সেগুলো যাচাই করতে হবে। তাই মাশরুম খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এটা কোথা থেকে উৎপাদন হয়েছে এবং এটা বিষাক্ত কিনা সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তা না হলে আপনার উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি হবে। এছাড়াও মাশরুম পরিমাণ মতো খেতে হবে। আমাদের গ্রাম অঞ্চলে সাধারণত মাশরুমের মতো দেখতে ব্যাঙের ছাতা প্রচুর পরিমাণে হয়ে থাকে। তাই এই ধরনের ব্যাঙের ছাতা গুলো খাওয়া যাবে না।

মাশরুম খাওয়ার নিয়ম

প্রত্যেকটি খাবার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হয়। তাই মাশরুম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। কিভাবে খেলে আমাদের শরীরের উপকার হবে। সে সম্পর্কে চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

প্রতিদিন খাবারের ক্ষেত্রে আমরা নতুন কিছু যোগ করে থাকি। তাছাড়া মুখের রুচি বাড়ানোর জন্য বা খাবারকে সুস্বাদু করার জন্য যে কোন খাবারের সাথে আমরা সালাদ খেয়ে থাকি। তাই পুষ্টি উপাদান হিসেবে আপনি মাশরুমের সালাদ খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরে উপকার হবে, মুখের রুচি বৃদ্ধি পাবে। তাই মাশরুমের সালাদ খেতে পারেন। তাছাড়া স্যুপ হিসাবেও খেতে পারেন। এছাড়া সবজির সাথে মিশিয়ে বিভিন্নভাবে রান্না করে খেতে পারেন। আবার অনেকে নুডুলস এর সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকে। তাছাড়া এই মাশরুম পাউডার বানিয়ে বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে থাকি, বিশেষ করে দৈনন্দিন খাবার হিসেবে তরকারি রান্না করে থাকি। তাই এই তরকারিকে সুস্বাদু করার জন্য মাশরুম মিশিয়ে রান্না করা যেতে পারে। এতে তরকারি অনেক সুস্বাদু হবে এবং শরীরে পুষ্টি যোগাবে। তাছাড়াও মাশরুম আলাদাভাবে রান্না করা যায় যেমন ভাজি করে খাওয়া যায়, এতে অত্যন্ত সুস্বাদু হবে। আবার অনেকে এর চপ বানিয়ে খেয়ে থাকে। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে যা আমাদের শরীরের উপকার করে থাকে। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য মাশরুমের সাথে টমেটো দিয়ে সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় মাশরুম খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে হয়। তাই গর্ভাবস্থায় মাশরুম খাওয়া যাবে কি? এ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনার উপকার হবে। চলুন, গর্ভাবস্থায় মাশরুম কিভাবে খাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
গর্ভাবস্থায় সাধারণত প্রোটিনের ও ক্যালরির প্রয়োজন হয়। এছাড়াও ভিটামিন খনিজ পদার্থ ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। তাই উপরোক্ত এই উপাদান গুলো যে খাবারের মধ্যে আছে সেগুলো বেশি করে খেতে হবে। এজন্য আপনি মাশরুম খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে উপরোক্ত এই পুষ্টি উপাদান গুলো আছে। তবে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না, কেননা অতিরিক্ত খেলে অনেকের এলার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অনেকের বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, ডায়রিয়ার, পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় এই ধরনের খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত খাবারের ক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং তাজা ফলমূল শাকসবজি খেতে হবে। কোন বাসি, পচা, গলে যাওয়া এই ধরনের খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আবার কাঁচা বা অল্প সিদ্ধ খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাই মাশরুম কখনোই কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। এতে পেটের সমস্যা দেখা দিবে, ডায়রিয়া হতে পারে। যেহেতু এটা একটি ছত্রাক। যদি আপনি কাঁচা অবস্থায় খান, তাহলে ক্ষতি হতে পারে। এতে শরীরের ভিতরে জীবাণু আক্রমণ করবে এবং পাচনতন্ত্রের সমস্যা হবে। যে মাশরুম গুলো ক্ষত চিহ্ন দেখা যায়, সেগুলো ভালোভাবে ধুয়ে রান্না করে খেতে হবে।

তবে বাজার থেকে প্রক্রিয়াজাত মাশরুম যদি কিনে থাকেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই মেয়াদ দেখে নিতে হবে। তাছাড়া এই মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার যদি আপনি খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরের ক্ষতি হবে। এছাড়াও রান্নার ক্ষেত্রে ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে এবং অল্প পরিমাণে রান্না করে একটু পরপর অল্প করে খেতে পারেন কিন্তু যদি সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এই মাশরুম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাছাড়া যদি এই মাশরুম খাওয়ার পরে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শেষ কথাঃ মাশরুম খাওয়া হালাল না হারাম এই সম্পর্কে হাদিস জেনে নিন

পরিশেষে বলা যায় যে ইসলামী শরীয়ত মতে মাশরুম যদি ভালোভাবে চাষাবাদ করা হয়, সে ক্ষেত্রে খাওয়া জায়েজ আছে। তাই চেষ্টা করবেন অবশ্যই এই মাশরুম হালাল উপায়ে চাষাবাদ করেছে কিনা সেটা যাচাই করা। তারপরে আপনি পরিমাণ মতো খেতে পারেন, তাহলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার করবে। তাই মাশরুম খাওয়া হালাল না হারাম? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি উপকার হবে। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

মাশরুম সম্পর্কে FAQ প্রশ্ন জানুন

মাশরুম খেলে কি ওজন বাড়ে?

এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন এবং ক্যালরি থাকে, তবে ক্যাডারের পরিমাণ খুবই কম থাকে। তাই পরিমাণ মত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

মাশরুম খেলে কি গ্যাস হয়?

আপনার যদি পেটের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিকের বা লিভারে কোন সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রে মাশরুম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

মাশরুম কিভাবে খায়?

এই ধরনের খাবার গুলো বিভিন্ন সবজির সাথে রান্না করে খেলে শরীরে অনেক উপকার হয় এবং অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে।

মাশরুম কি কাঁচা খাওয়া যায়?

এটা মূলত কাঁচা খাওয়া যাবে না, এতে বদহজম, পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অনেকের এলার্জি বৃদ্ধি পেতে পারে।

মাশরুম খেলে কি পেটের ক্ষতি হয়?

যদি আপনি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন এবং কাঁচা বা অল্প সিদ্ধ করে খেয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে পেটে গ্যাস, পেট ফাপা, বদহজম, ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আজকের পোস্টের লেখক,
মোঃ মাহমুদুল ইসলাম
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার
উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url