গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

এই তোকমা দানা আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে, তাই গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি? পেটের সমস্যার জন্য এই তোকমা দানা খেতে পারেন। চলুন, এই তোকমা দানা কি উপকার করে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 
ছবি
আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে এবং ওজন কমাতে চান সেক্ষেত্রে তোকমা দানা খেতে পারেন। তবে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে, তা না হলে ক্ষতি হবে। তাই গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি

তোকমা দানা অত্যন্ত উপকারী তাই গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি? মূলত শরীরের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের চাহিদাও পূরণ করে থাকে। চলুন, তোকমা কিভাবে আমাদের শরীরে উপকার করে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মায়েদের এই সময়ে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনযুক্ত খাবারের প্রয়োজন হয়। তাই তোকমা দানা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এটা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি এবং ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে। এর মাঝে আছে আঁশ, আয়রন, ক্যালরি, প্রোটিন থাকে যা গর্ভবতীর শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি দূর করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় দারুন কাজ করে থাকে। এছাড়াও গর্ভস্থ শিশুর অনেক পুষ্টি দিয়ে থাকে। তাই আপনার শরীরে ভিটামিন ও পুষ্টির উপাদান পূরণ করার জন্য পরিমাণ মতো তোকমা দানা খেতে পারেন।

অনেক গর্ভবতীর ওজন বেশি হয়ে থাকে যার কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তাই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তোকমা দানা খেতে পারেন। এটি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়াও এই তোকমা দানা, বাদাম অথবা শুকনো ফলের সাথে যদি মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে অনেকক্ষণ ক্ষুধা লাগবে না। এতে বাড়তি কোনো ক্যালরিযুক্ত খাবারের প্রতি আগ্রহ হবে না। এজন্য আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এছাড়াও এটা আপনার শরীরের শক্তি জমাতে সাহায্য করবে। তাই আপনি নিয়মিতভাবে এই তোকমা দানা পরিমাণ মত খেতে পারেন।

গর্ভবতী মায়েদের এই সময়ে গ্যাস্ট্রিক, এসিডিটি ও হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যাগুলো দূর করার জন্য তোকমা দানা খেতে পারেন। কেননা এটা এসিডিটি দূর করার জন্য খুবই উপকার করে থাকে। আপনি ভিজিয়ে রাখবেন এরপরে খেতে পারেন। কেননা এই বীজ গুলো পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়ার কারণে আপনার দেহের ক্ষতিকর পদার্থ গুলো দূর করতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে ভিটামিন-কে, খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা গর্ভবতী মায়েদের উপকার করে থাকে। এই বীজদানা আমাদের শরীরের পানির চাহিদা পূরণ ও হাইড্রেশনের কাজ করে থাকে।

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়, এজন্য এই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য তোকমা দানা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মাঝে মিউসিলেজ আছে যা জেল জাতীয় পদার্থের মত মনে হয়। পানির মধ্যে ভিজালে এটা ফুলে উঠবে। এই ধরনের পদার্থগুলো অন্ত্রের কার্যক্রমকে সহযোগিতা করে এবং খাদ্য হজমের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে থাকে। এই উপাদানটি পানির মাঝে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন, দেখবেন ফুলে উঠবে। এর সাথে যদি অল্প পরিমাণ দুধ মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত শরীরে এমনিতেই প্রচুর পরিমাণে তাপমাত্রা থাকে, তারপরে গ্রীষ্মকালে প্রচুর পরিমাণ গরমে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। এই তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ এবং শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য আপনি এর শরবত খেতে পারেন। এতে আপনার শরীর ঠান্ডা হবে। এর সাথে যদি হালকা চিনি অথবা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা নারিকেলের দুধ যদি দিতে পারেন, তাহলে আরো সুস্বাদু হবে। এই বীজের মধ্যে পলিফেনাল থাকার কারণে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত কাজ করে থাকে। এতে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবে, এছাড়াও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখবে।

গর্ভবতী মায়েদের যদি এই সময়ে ঠান্ডা লাগে তাহলে ওষুধ খেলে সমস্যা হতে পারে। তাই প্রাকৃতিক চিকিৎসা নিতে পারেন, এজন্য তোকমার শরবত খেতে পারেন। এর মধ্যে যে অ্যান্টি স্পাজমোডিক রয়েছে তা আপনার এই ধরনের সর্দি কাশি দূর করবে। এছাড়াও এন্টি ফাইরেটিক রয়েছে যা আপনার জ্বর কমাতে কাজ করবে। আপনার শরীরে যদি বিভিন্ন ধরনের ব্যথা বা প্রদাহ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি এই তোকমা দানা খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরের বিভিন্ন ফুলে যাওয়া, ব্যথা হওয়া এগুলো দূর করতে দারুন কাজ করবে। কেননা এটা আর্থাইটিসের মত সমস্যারও কাজ করে থাকে।

গর্ভবতী মায়েদের এই সময়ে সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে এজন্য এই তোকমা দানা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মাঝে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে এবং বিভিন্ন রোগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। আপনার ত্বকে যদি কোন দাগ বা ব্রণ বা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি তোকমা দানা খেতে পারেন। কেননা এর মাঝে এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার ফ্রি রেডিক্যাল এর বিরুদ্ধে কাজ করবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন, তাহলে আপনার ত্বকের দাগ দূর হয়ে যাবে।

গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত এই সময়ে মানসিক চাপে থাকে বা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত টেনশন করে থাকে। সেই ক্ষেত্রে এই টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি তোকমা দানা খেতে পারেন। এতে আপনার শরীর শীতল করবে ও মানসিক সুস্থতা দিতে কাজ করবে। আপনি যখন তোকমা দানা খাবেন সে ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে এবং কারা খেতে পারবেন সেটা জানা প্রয়োজন। এটা মূলত আপনার শরীরে যদি সঠিক নিয়মে না খেতে পারেন, তাহলে অবশ্যই সমস্যা হতে পারে। এই তোকমা দানা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভিজিয়ে নিতে হবে, ভেজানোর পর ফুলে উঠবে তখন খেতে পারবেন

তোকমা দানা খাওয়ার অপকারিতা

প্রত্যেকটা জিনিসেরই যেমন উপকার আছে তেমনি ক্ষতিও রয়েছে। তাই আপনি এতক্ষণ যেহেতু উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন, চলুন এখন অপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক। অন্তসত্ত্বা নারী বা গর্ভবতী মহিলারা যদি এটা অতিরিক্ত খেয়ে থাকেন তাহলে কিন্তু সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা এই সময় অ্যাস্ট্রোজেন হরমোনটি আপনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে কিন্তু এটা যদি আপনি বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তাহলে কিন্তু এসট্রোজেন এই হরমোনটি আপনার কমে যেতে পারে। এতে আপনার ও গর্ভস্থ শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হবে। তাই অবশ্যই পরিমাণমতো খাবেন।

এছাড়া ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যদি কোন ছোট শিশু খেয়ে ফেলে সে ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা তাদের বিপাকীয় ক্ষমতা থাকে না, যার কারণে শিশুদের ক্ষতি হতে পারে। তাছাড়া পেটের ভিতর সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য তোকমা দানা শিশু ও গর্ভবতীদের ক্ষেত্রেও সতর্কতা রয়েছে। তবে গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ খাওয়া যেতে পারে। তবে শিশুদের খাওয়ানোর ক্ষেত্রে মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো শিশুদের দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং শিশুদের ক্ষেত্রে বিপদজনক দেখা দিতে পারে। তাই শিশুদেরকে না দেওয়াই ভালো।

ওজন কমাতে তোকমা খাওয়ার নিয়ম

অনেক গর্ভবতী মায়েদের ওজন বেশি সে ক্ষেত্রে ওজন কমাতে তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। চলুন, কিভাবে তোকমা খেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত এই সময়ে ওজন বৃদ্ধি করতে চায় কিন্তু যাদের ওজন অতিরিক্ত এর কারণে বাচ্চার সমস্যা হতে পারে। তাই তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, এজন্য তোকমা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা আমাদের খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ক্ষুধা কম লাগে, এজন্য ওজন কমতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া এই তোকমার সাথে আরও বিভিন্ন ধরনের ফল মিশিয়ে খেলে আরো উপকার পাওয়া যাবে যেমন দই খেতে পারেন। এর মধ্যে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ পদার্থ থাকে যা গর্ভবতী মায়েদের খুবই উপকার।
গর্ভবতী মহিলাদের সাধারণত যে কোন খাবার খেতে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। তাই তোকমা দানা খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। এজন্য এটা সাধারণত ১ থেকে ২ চামচ এক গ্লাস পানির মধ্যে ১৫ মিনিটের মত ভিজিয়ে রাখবেন। এরপরে যে কোন খাবার খাওয়ার ১০ মিনিট পরে খেয়ে নিতে পারেন। এতে আপনার ক্যালোরিকে নিয়ন্ত্রণ করবে, এছাড়াও ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। তাছাড়া রাত্রিতে পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন সকালবেলা উঠে ১ চামচ পরিমাণ তোকমা দানা নিয়ে এক গ্লাস পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে পেটের সমস্যা দূরফবে।

তোকমা খাওয়ার নিয়ম

এতক্ষণ আমরা জানলাম ওজন কমানোর জন্য খাওয়ার নিয়ম কিন্তু তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন কিভাবে এই তোকমা খাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতীদেরকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়, এজন্য অল্প পরিমাণ হলেও নিয়মিতভাবে এই তোকমা দানা খেতে পারেন।এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি থাকে যার কারণে আপনি নিয়মিতভাবে এটা খেতে পারেন। তাই এক গ্লাস পানি নিবেন তার মধ্যে লেবুর রস অল্প পরিমাণ, এরপরে দুই চামচ স্ট্রবেরির রস নিতে পারেন, তারপর ২ চামচ পরিমাণ তোকমা দানা নিবেন। এরপর কুসুম গরম পানির মধ্যে ১০ মিনিটের মতো ভিজিয়ে রাখবেন। অল্প পরিমাণ লবণ দিতে পারেন, এর মধ্যে পুদিনা পাতাও দেওয়া যাবে। এভাবে একটি পাত্রের মধ্যে সবগুলো মিশিয়ে শরবত বানিয়ে নিবেন।

এটা আমাদের খাদ্য হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে। গর্ভবতী মায়েরা এই সময় তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়ে থাকে তাই এই তোকমা দানা খেতে পারেন। তবে এটা খাওয়ার নিয়ম হলো আপনি পানির সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন অথবা ভিজিয়ে রেখেও কিছুক্ষণ পর যখন ফুলে উঠবে তখন পানিটুকু খেয়ে নিতে পারেন অথবা এর সাথে বাদামের গুড়া নিয়ে মিক্স করেও খেতে পারেন। আবার অনেকেই পানির সাথে মিশিয়ে দুধ ও মধু দিয়ে খেতে পছন্দ করে থাকে। এছাড়াও এর পাশাপাশি চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।

তোকমা খাওয়ার সময়

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ে সকল খাবার খেতে হয়। তাই তোকমা খাওয়ার সময় সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে, তা না হলে শরীরে ক্ষতি হতে পারে। চলুন, কোন সময় খেলে আপনার উপকার হবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সাধারণত তোকমা দানা রাত্রিতে খাওয়া সবচাইতে ভালো হয় তবে গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময় পেটটা অনেকটা ভারী থাকে। যদি আপনার অস্বস্তিকর মনে হয় সেক্ষেত্রে সকালবেলা খেতে পারেন। তবে রাত্রিতে খাওয়া সবচাইতে ভালো হয়, কেননা রাত্রিতে খাওয়ার পরে আপনার শরীরে ভালো কাজ করবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে দূর হয়ে যাবে। এজন্য ১ চামচ পরিমাণ তোকমা দানা নিবেন এবং এক গ্লাস পানির মধ্যে মিশিয়ে রাখবেন, সকাল বেলা চিনি ছাড়া খাওয়ার চেষ্টা করবেন, পারলে মধু দিয়ে খেতে পারেন। প্রতিদিন ১ চামচ করে রাত্রিতে ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা খেতে পারেন।

ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম

ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা দানা খুবই উপকার করে থাকে। তাই ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন কতটুকু পরিমাপ করে এই দুটি উপাদান খাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য বেশি দেখা যায়। যার কারনে ইসবগুলের ভুসির সাথে যদি তোকমা দানা খাওয়া হয় তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের এবং বদহজমের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। কেননা অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া যাবে না, এতে আপনার সন্তানের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য ১ চামচ পরিমাণ ইসুবগুলের ভুষি এবং ১ চামচ তোকমা দানা এক গ্লাস পানির মধ্যে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন। এরপরে যখন হালকা ফুলে উঠবে এর সাথে মধু অথবা দুধ মিশিয়ে খেতে পারেন। তাছাড়া মধু দিয়ে খাওয়ার কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

তোকমা বেশি খেলে কি হয়

অনেকে তোকমা দানা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে এতে ক্ষতি হয়। তাই তোকমা বেশি খেলে কি হয়? বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা কখনো এই তোকমা দানা বেশি খাবেন না। এতে কিন্তু বিশাল ধরনের ক্ষতি হবে। চলুন অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে কি সমস্যা হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
গর্ভবতী মায়েরা এই তোকমা দানা খাওয়ার অনেক উপকার রয়েছে। তবে অতিরিক্ত খেলে ক্ষতিও আছে, বিশেষ করে তাদের শরীরে এই সময়ে অ্যাস্ট্রোজেন হরমোন থাকে, এটা অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে এই হরমোনটা কমে যায়। এতে গর্ভস্থ শিশুর অনেক ক্ষতি করে থাকে। তাছাড়া ছোট বাচ্চাদের যদি এই তোকমা দানা খাওয়ানো হয়, অতিরিক্ত যদি খেয়ে ফেলে সেক্ষেত্রে পেটের ভিতরে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শিশু শ্বাসকষ্ট সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক লোকেরা এই তোকমা দানা খাবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে তোকমা বীজ

যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা তোকমা বীজ খেতে পারেন। কেননা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে তোকমা বীজ, তবে পরিমাণ মতো খেতে হবে। অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা, এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে সে ক্ষেত্রে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়। আর এই রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য আপনি তোকমা দানা খেতে পারেন। কেননা এটা আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল উৎপাদন করতে পারবে। তাছাড়া শরীরের রক্তের চর্বি কমিয়ে নিয়ে আসবে, হার্টকে সুস্থ রাখবে এবং ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। তাই গরমের দিনে এই তোকমা দানা দিয়ে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে, যার কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত ভাবে এই তোকমা দানার শরবত খেতে পারেন।

এর মধ্যে যে উপাদান গুলো থাকে তা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে, এছাড়াও ডায়াবেটিস টাইপ২ যাদের আছে তারা এটা নিয়মিতভাবে খেলে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে। এজন্য ১ চামচ পরিমাণ এই তোকমা দানা এক গ্লাস পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন, এরপরে যখন ফুলে উঠবে সেক্ষেত্রে এই পানিটুকু খেতে পারেন। এর সাথে ১ চামচ মধু দিলে সুস্বাদু হবে। তাছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণ মিষ্টি বা তৈলাক্ত খাবার গুলোর প্রতি আগ্রহ থাকবে না, এতে পেটের ভুড়ি কমে যাবে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এর পাশাপাশি দারুচিনি খেতে পারেন, কেননা দারুচিনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

পরিশেষে বলা যায় যে যদি আপনি নিয়মিত ভাবে তোকমা দানা খেতে থাকেন, সে ক্ষেত্রে শরীরে দারুন কাজ করবে। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের এ সময়ে পেটের সমস্যা বেশি দেখা যায় অর্থাৎ গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা ইত্যাদি ধরনের সমস্যা গুলো হয়। এই ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য আপনি তোকমা দানা খেতে পারেন। তবে অবশ্যই এর নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। তাই গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি? এ সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি আপনার অনেক উপকারে আসবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url