দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল জেনে নিন এর ফলাফল
অনেকে হয়তো জানে না যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল? আসলে এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল মূলত পোল্যান্ডকে আক্রমণ করার কারণে। চলুন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গণতন্ত্র একটি দলে বিভক্ত হয় এবং অক্ষশক্তিতে আরো একটি দল পরিণত হতে থাকে। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল? এ সম্পর্কে জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল জেনে নিন এর ফলাফল
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল
বিশ্বে যে বড় যুদ্ধ হয়েছিল তার মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অন্যতম। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল? এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা খুবই প্রয়োজন। চলুন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষেত্রে কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিভিন্ন কারণেই সংঘটিত হয়েছিল, সেক্ষেত্রে এই কারণ গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেগুলো আমাদের জানা দরকার সেই সম্পর্কে চলুন বিস্তারিতভাবে জানা যাক। প্রথমত ১৯১৯ ভার্সাই একটি সন্ধি হয়েছিল সেই সন্ধির কারণে বিশ্বযুদ্ধ হয় বা এটা একটি মূল কারণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যখন জার্মানির উপর এই ভার্সাই চুক্তি চাপিয়ে দিয়েছিল। যার ক্ষেত্রে জার্মানি এই চুক্তি মেনে নেয় না। জার্মানি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আগ্রহ হয় এবং এই চুক্তি শক্তি দ্বারা ভেঙে ফেলে। তাই এই চুক্তি জার্মানিরা অপমান সহ্য করতে না পেরে তারা এটি ভঙ্গ করে এবং যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে কারণ গুলোর মধ্যে জাপান, জার্মানি, ইতালি রাষ্ট্রগুলো মিলে উগ্রবাদী মতামতে বিশ্বাসী ছিল। বিশেষ করে জার্মানির হিটলার মনে করে একমাত্র জার্মানি হল পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। তাই তারা এই দুটি রাষ্ট্র সাথে সমন্বয় করে উগ্রবাদী চিন্তাভাবনা করে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে উস্কানি দিয়ে তোলে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলো উপনিবেশিক ছিল কিন্তু ভার্সাই চুক্তির কারণে জার্মানি তার উপনিবেশিক হারিয়ে ফেলে। তাই তারা তাদের নিজেকে রক্ষার জন্য এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে ব্রিটেন আমেরিকা তারা বিভিন্ন দেশের উপনিবেশিক ছিল।
ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স তারা জার্মানিকে তোষণ নীতি করে চলে আসে কিন্তু হিটলার আরো উগ্রবাদী হয়ে পড়ে। ১৯১৯ সালে জেনেভা একটি নিরস্ত্র সম্মেলন হয় এই সম্মেলনে বলা হয় যে অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে হ্রাস করতে হবে কিন্তু জার্মানি কোনভাবেই এটা মেনে নেয়নি, তারা আরো সামরিক শক্তিকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলে। এছাড়া জাতিসংঘ তৈরি হয়েছিল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কিন্তু শক্তিধর দেশগুলোর অধিকারের কাছে ছোট দেশগুলো অত্যাচারিত হয়। যা জাতিসংঘ দর্শকের ভূমিকা হিসেবে পালন করেছিল। এই জাতিসংঘ যার কারণে ব্যর্থতাই পরিণত হয়। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এটি একটি কারণ।
যেমন জাপানের একটি শহর এছাড়াও ইতালির আবিসিনিয়ার বৃহৎ শক্তি দল দখল করে নেয়। যেটা আসলে দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল জাতিসংঘ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে দলগুলো গঠন করেছিলে। একটি অক্ষশক্তি এবং পরাশক্তি দুটি দলে বিভক্ত হয়ে যায়। এটি একটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ। অপরদিকে একটি মিত্রশক্তি হিসেবে পরিণত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে একনায়তন্ত্র বিভিন্ন রাষ্ট্রে গঠিত হয় যেমন জার্মানির হিটলার, ইতালির মুসোলিনি তারা প্রতিষ্ঠা করে। এছাড়াও উগ্রবাদী চিন্তাভাবনা এবং জাতীয়তাবাদী বা মতবাদে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ
অনেকে জানতে চায় যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ জানার জন্য কি কারনেই এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল। সেটা বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। চলুন, এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ এর মধ্যে অন্যতম হল জার্মানির হিটলার যখন অক্ষশক্তি গঠন করল তখন তারা শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং তারা পোল্যান্ডকে দখল করে নেয়। ইতালি পোল্যান্ড বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবে, পরবর্তীতে ফ্রান্সও জার্মানির বিরুদ্ধে বিরোধিতা করে। ১৯৩৯ সালের পহেলা সেপ্টেম্বরের জার্মানি পোল্যান্ডের উপরে আক্রমণ করে। এর পরিপেক্ষিতে ফ্রান্স ও ইতালি জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়ে যায়। জার্মানি যখন দ্বিতীয়বার পোল্যান্ডকে আক্রমণ করে তখন ব্রিটেন ও ফ্রান্স এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঘোষণা করে। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হয় পরিণত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল
অনেকে জানতে চায় যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছিল এবং এর ফলে সারা বিশ্বে কি ঘটনা ঘটেছিল। কোন দেশের বেশি ক্ষতি হয়েছিল চলুন, এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
জাতিসংঘ বিশ্বের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য তৈরি করা হয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার চেষ্টা করে বা জাতিসংখ্যার উদ্দেশ্যেই হলো শান্তি রক্ষা করা এবং যুদ্ধকে প্রতিরোধ করবে। তাছাড়া এই যুদ্ধের ফলে প্রযুক্তি অনেক উন্নত হয়, বিশেষ করে কম্পিউটার পারমাণবিক শক্তির অধিকার জেট ইঞ্জিন, বিজ্ঞান শিল্পকলা অগ্রগতি হয়েছিল। তাছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফলের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হয়। তারা বহু কাল ধরে এই রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হতে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হওয়ার কারণে অনেক কিছুই ধ্বংস হয়ে যায়। বিশেষ করে শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যায়, অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এগুলো পূর্ণ গঠন করা খুবই কষ্টদায়ক ছিল। তাছাড়াও সম্প্রদায় গুলো মানসিক শারীরিকভাবে অনেক প্রভাবিত হয়। লাখ লাখ মানুষ এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মারা যায়। বিশেষ করে বিভিন্ন পরিবারগুলো তছনছ হয়ে যায়। পরিবারের দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। জার্মানির রাজা হিটলার যিনি তার শাসনের সময় ৬ মিলিয়ন ইহুদিকে হত্যা করেছিল, যা ইতিহাসের সবচাইতে ভয়াবহতা এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে।
এছাড়াও এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে পৃথিবীর গতিবিধি পরিবর্তন হয়ে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন সাম্রাজ্য পতন হয়ে যেতে থাকে এবং নতুন করে জাতি গঠন করতে শুরু করে। তাছাড়া এই যুদ্ধের কারণে অনেক নারীর জীবন দিতে হয়েছিল। তাছাড়া নারীদেরও এই যুদ্ধক্ষেত্রে ভূমিকা ছিল। পুরুষেরা যখন যুদ্ধ করে তখন নারীরা তাদের পাশে থেকে সহায়তা করেছিল এবং মানসিকভাবে সমর্থন করেছিল। এছাড়াও এই জন্য এই যুদ্ধের ফলে নারীদের অধিকার সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সকল জাতিকে পুনঃনির্মাণ করার চেষ্টা শুরু হয়েছিল কিন্তু এটা খুবই কঠিন কাজ ছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হওয়ার কারণে সারা বিশ্বকে প্রভাবিত করেছিল। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে প্রভাবিত করেছিল। চলুন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সারা বিশ্বকে কিভাবে প্রভাবিত করেছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বকে যেভাবে প্রভাবিত করেছিল তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে জার্মানি ভাগ হয়ে যায়, এই যুদ্ধের কারণে পশ্চিম জার্মানি এবং পূর্ব জার্মানিতে বিভক্ত হয়ে যায়। তাছাড়াও ঠান্ডা যুদ্ধ শুরু হয় যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং একটি ঠান্ডা যুদ্ধ হয়েছিল। যা ইতিহাসে ঠান্ডা যুদ্ধ নামে পরিচিত, বিশ্বের অনেক দেশগুলোই উপনিবেশিক হিসেবে শাসন কার্য পরিচালনা করতো কিন্তু উপনিবেশিক শাসনকার্য শেষ হয়ে যায়। তাছাড়াও জাতিপুঞ্জ গঠন করা হয়েছিল, ১৯১৯ সালে কিন্তু সেটার দুর্বলতার কারণে পরবর্তীতে জাতিসংঘ গঠিত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল এবং অর্থনীতি ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। যা পরবর্তীতে মার্শাল পরিকল্পনার মাধ্যমেই পুনরায় সংস্করণ করা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাছাড়া শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কলকারখানা নতুন করে গঠন করা হয়। পুরাতন শিল্প কলকারখানাকে সংস্কার করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে দেখা যায় মুদ্রাস্ফীতি সমস্যা হয়। এছাড়াও সামাজিকতার ক্ষেত্রে প্রভাব সৃষ্টি হয়। এই যুদ্ধের ফলে ৫ থেকে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে যা আসলে ইতিহাসে ভয়াবহ।
তাছাড়া অনেক মানুষ বাড়ি ঘর হারিয়ে ফেলে এবং বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে ফুটপাতে যা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পারে। এছাড়াও সামরিক ক্ষেত্রে নতুন নতুন অস্ত্র আবিষ্কার হয় এবং পারমাণবিক বোমা ব্যবহার শুরু হয়। এছাড়াও যুদ্ধের ক্ষেত্রে কৌশল পরিবর্তন করে হয়। সামরিক ক্ষেত্রে আরও বিভিন্ন ট্যাংক বিমান নৌবাহিনী ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রযুক্তি গুলো উন্নত সাধন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে খাদ্য সংকট হয় এবং রোগের বিভিন্ন রোগের ঘটে। এছাড়া সামাজিক অবকাঠামো পরিবর্তন হতে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন শুরু হয়েছিল সে সময়কাল সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল সম্পর্কে অনেকে হয়তো জানেন না। চলুন, এই যুদ্ধের সময়কাল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বের দুটি যুদ্ধ হয় সে ক্ষেত্রে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এর সময়কাল সাধারণত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল ১৯৩৯ সালে পোল্যান্ডকে আক্রমণ করার মধ্যে দিয়েই বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। এক্ষেত্রে আরও বিভিন্ন কারণেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়। তবে এই সময়টা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কালকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধরে নেওয়া হয়। সবশেষে জার্মানি এর কারণে ১৯৩৯ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর যুদ্ধটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। যা সারা বিশ্বের ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল এবং কোটি কোটি মানুষের মৃত্যু বরণ হয়। প্রায় দীর্ঘ ৬ বছর এই যুদ্ধ চলতে থাকে। ১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধ অনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল
অনেকে জানতে চায় যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল? আসলে এ বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তাদের মধ্যে প্রথমে যুদ্ধ হয়েছিল, সবকিছু মিলে গুরুত্বপূর্ণ। চলুন, বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যে সকল রাষ্ট্রের মধ্যে হয়েছিল তার মধ্যে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। একটি হল অক্ষশক্তি দ্বিতীয়টি মিত্রশক্তি। প্রায় ৬ বছর পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলতে থাকে। অক্ষশক্তির মধ্যে যারা ছিল জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং মিত্রশক্তির মধ্যে যে সকল দেশ যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন। তাছাড়া জার্মানি এই যুদ্ধটা শুরু করেছিল পোল্যান্ডকে আক্রমণ করে যা পরবর্তীতে এই যুদ্ধে অনেক ধংস হওয়ার পর ১৯৩৯ সালে জার্মানির হিটলার পোল্যান্ডকে আক্রমণ করার মাধ্যমে এই যুদ্ধের শুরু করে পরবর্তীতে ১৯৪৫ সালে এই যুদ্ধের অবসান ঘটে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোথায় হয়েছিল
অনেকে জানতে চায় যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোথায় হয়েছিল? এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাবে কোথায় হয়েছিল সেটা জানা প্রয়োজন। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তবে প্রথমে জার্মানিরা পোল্যান্ডকে আক্রমণ করে সেখান থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শুরু হয়। এছাড়াও ইউরোপের নরওয়ে ডেনমার্ক ও আক্রমণ করে। তাছাড়া ইউরোপে জার্মানিরা আক্রমণ করে এরপরে পূর্ব ইউরোপ সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করেছিল। ফ্রান্স যখন পতন ঘটে এরপরে উত্তর আফ্রিকায় সাধারণত এই যুদ্ধ হয়েছিল। এছাড়াও জাপান ও চীনের সাথে এই যুদ্ধে সংঘটিত হয় এবং অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমণ করে বসে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবিসিনিয়ায় যুদ্ধ ঘটে। এছাড়াও সমগ্র ইউরোপ উত্তর আফ্রিকা চীন এশিয়া ওশেনিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যেরও কিছু অঞ্চল নিয়ে যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অক্ষশক্তি ও মিত্রশক্তি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দুটি দলে বিভক্ত হয়। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অক্ষশক্তি ও মিত্রশক্তি এ সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন, অক্ষশক্তি ও মিত্রশক্তি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অক্ষশক্তির মধ্যে যে দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। তার মধ্যে জার্মানি ইতালি জাপান এই তিনটি রাষ্ট্রই অক্ষশক্তি হিসেবে কাজ করেছিল। যা বিপরীত দলের ওপরে তারা আক্রমণ শুরু করে। তারা সামরিক জোট গড়ে তোলে এবং অক্ষশক্তি প্রতিষ্ঠা করে। অপর দিকে মিত্রশক্তির মধ্যে যে দেশগুলো জোট করেছিল তার মধ্যে অন্যতম হলো যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন যা পরবর্তীতে ফ্রান্সে যুক্ত হয়। এভাবেই সব রাষ্ট্র মিলেই মিত্র শক্তি গঠিত করে। আরো কিছু মিত্রশক্তি যুক্ত হয় অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, বেলজিয়াম, ভারত, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন পোল্যান্ড।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি পরাজয়ের কারণ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি পরাজিত হয়েছিল। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, কিভাবে এই অক্ষশক্তি পরাজয় হয়েছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অক্ষয় শক্তি বিভিন্ন কারণেই পরাজিত হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো তাদের জনসমর্থনের অভাব ছিল। তারা নিজেরা জনপ্রিয় ছিল না, তারা যুদ্ধজনিত কারণে অর্থ সম্পদ এবং মানুষের ক্ষতি সাধন করেছিল। এছাড়াও তারা নিজেদের অনেক ক্ষতি করেছিল। জার্মানি যে ফ্যাসিবাদ শুরু হয়েছিল। তারা দেশবাসীকে হত্যা করে এটা পরাজয়ের অন্যতম কারণ। অক্ষশক্তি ব্যর্থ হয়েছিল এর পিছনে কিছু আগ্রাসনের সম্ভাবনা ছিল। যার কারণে এই অক্ষশক্তি পরাজিত হয় যা বিশ্বের কাছে তারা সমর্থন পায়নি এবং কেউ তাদেরকে সহানুভূতি আদায় করেনি এটা তাদের একটা দুর্বলতা ছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অক্ষশক্তির পরাজয়ের অন্যতম আরো কিছু কারণ রয়েছে। যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যুক্ত না হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কিন্তু মিত্রশক্তির সাথে জোট করেছিল। যার কারণে তারা অক্ষশক্তিকে ধ্বংস করে দিতে প্রস্তুত ছিল এবং অক্ষশক্তি কারণে তারা পিছিয়ে ছিল। আরো কিছু দুর্বলতা ছিল যেমন তাদের জোটের মধ্যে যে রাষ্ট্রগুলো রয়েছে। তার মধ্যে ইতালি খুবই দুর্বল ছিল। এছাড়াও ইতালি জার্মানিকে তেমন একটা সহযোগিতা করতে পারেনি। যার কারণে মিত্রশক্তির কাছে তারা খুবই দুর্বল ছিল। এছাড়াও অক্ষশক্তির মধ্যে দেশগুলো যে সমন্বয় করবে এরকম প্রভাব ছিল না।
তাদের মাঝে এই সমন্বয়ের অভাব ছিল, প্রায় সাড়ে ৮ মাস ধরে ইতালি জার্মানের পক্ষে কাজ করেছিল কিন্তু ইউরোপের প্রতি জাপানের তেমন একটা আগ্রহ কাজ করেনি। যার কারণে জার্মানি তেমন একটা সাহায্য পায়নি, তাছাড়াও অক্ষশক্তি আরো কিছু ভুল ছিল যেমন তারা কৌশলগত ভাবে কাজ করতে পারেনি। যার কারণে মিত্রশক্তির কৌশলের কাছে তারা হেরে যায় বা পরাজয় বরণ করে। জার্মানি পরমাণু বোমার কাজ সম্পন্ন হয়নি কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাফল্যের সাথে তারাই পারমাণবিক বোমার আবিষ্কার করেছিল এবং হিটলার যে বোমা বানিয়েছে সেটা প্রতিরোধ করার মত ব্যবস্থা তারা করেছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের আরো একটি কারণ হলো জার্মানিতে মিত্রশক্তি যে সাঁড়াশি আক্রমণ চালিয়েছিল। সেখানে জার্মানি অসহায় দুর্বলতা ছিল যা আক্রমণের কারণে জার্মানি নিজেদেরকে রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই কষ্টদায়ক ছিল। যার কারণে তাদের পতনের সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়াও রাশিয়া যখন হিটলার অভিযান চালানো সে ক্ষেত্রে সর্বশেষে এর কাছে ব্যর্থতা হয়ে পড়ে হিটলার। খুবই কম সময়ের মধ্যেই রাশিয়া অভিযান সম্পন্ন করেছিল কিন্তু হিটলারের পরিকল্পনা ব্যর্থ হতে থাকে এবং সর্বশেষ তিনি যুদ্ধ শেষ করে ফেলে এছাড়া মিত্রশক্তি এর চাইতে দুর্বল ছিল।
কেননা মিত্রশক্তি গণতন্ত্রকে উৎসাহিত করেছে বা তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্যই যুদ্ধে নেমেছিল। এই আদর্শ কথা ঠিক থেকেও তারা কিন্তু অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। এছাড়াও হিটলার অত্যন্ত অহংকারী ব্যক্তি ছিলেন, যিনি সব সময় বেশি জানতেন এবং খুবই খারাপ আচরণ করতো বাজে মন্তব্য করত বা খারাপ কাজগুলো করতো। এছাড়াও তিনি অভিজ্ঞ এবং সেনাদের পদস্থ কর্মচারীদের যোগ্য মনে করে না, তাদের পরামর্শ গুরুত্ব দেয় না। যার কারণে প্রশাসনিক বা সেনাদলে আস্তা অর্জন করতে পারে না। সর্বশেষ কথা হল হিটলারের একঘেয়েমিতা মনোভাবের কারণে এই অক্ষশক্তি পরাজিত বরণ করে।
উপসংহারঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল জেনে নিন এর ফলাফল
পরিশেষে বলা যায় যে যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হওয়ার কারণে সারা বিশ্ব বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা ধ্বংস স্তর থেকে একটি রাষ্ট্রকে ঘুরে দাঁড়ানো খুবই কষ্টদায়ক। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণেই এই বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল যেখান থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত যে এভাবে আসলে মীমাংসায় না এসে বিশ্বযুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং নিরহ সৎ মানুষগুলো অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছে। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল? এ সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, আশা করি আপনার কাজে লাগবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ



এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url