গর্ভাবস্থায় গ্যাসের ঔষধ খাওয়া যাবে কি ও করণীয় সম্পর্কে জানুন

গর্ভাবস্থায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় গ্যাসের ঔষধ খাওয়া যাবে কি? আসলে গ্যাস্ট্রিক হলে ঔষধ খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চলুন, গ্যাস্ট্রিক হলে ঔষধ খাবেন কিনা সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
অনেক গর্ভবতী সাধারণত বিভিন্ন ধরনের খাবারের কারণে গ্যাস হতে পারে আবার হরমোনাল পরিবর্তনের কারণেও গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। এক্ষেত্রে অনেকে ওষুধ খেয়ে থাকে কিন্তু গর্ভাবস্থায় গ্যাসের ঔষধ খাওয়া যাবে কি? এ সম্পর্কে জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় গ্যাসের ঔষধ খাওয়া যাবে কি ও করণীয় সম্পর্কে জানুন

গর্ভাবস্থায় গ্যাসের ঔষধ খাওয়া যাবে কি

গর্ভবতী মায়েরা জানতে চায় যে, গর্ভাবস্থায় গ্যাসের ঔষধ খাওয়া যাবে কি? আসলে গর্ভবতী মায়েদের এই সময়ে গ্যাস্ট্রিক হয়ে থাকে। যার কারণে তারা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতে চায়। চলুন, তারা গ্যাসের ওষুধ খেতে পারবে কিনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে হরমোন পরিবর্তন হওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা গ্যাস, পেটে ব্যথা, বদহজমের সমস্যা দেখা যায়। পরবর্তীতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। মূলত আমাদের পাকস্থলীর মধ্যে এক ধরনের হাইড্রোক্লোরিক এসিড থাকে, যা ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবন পানি উৎপন্ন করতে পারে এবং এসিডের যে সমস্যাগুলো হয় সেগুলো বিলুপ্ত করতে পারে। আমাদের বাংলাদেশের প্রায় মানুষের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের আরো বেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।

তাই পাকস্থলীতে এই ধরনের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে দূর করার জন্য অবশ্যই খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। তৈলাক্ত খাবার গুলো দূর করতে হবে, এছাড়াও বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্যাস হতে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করার জন্য আয়রন ওষুধ খাওয়া হয়। এছাড়াও পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ওষুধ খেতে হয়, এক্ষেত্রে দেখা যায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই তাদের অবশ্যই একজন চিকিৎসার পরামর্শক্রমে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতে হবে। অনেকেই প্রথমে পেট ব্যথা হলেই মনে করে গ্যাস্ট্রিক হয়েছে যার কারণে ওষুধ খেয়ে থাকে।

আসলে কি কারনে পেট ব্যথা হচ্ছে এটা হয়তো অনেকে জানে না। বিভিন্ন কারণে পেট ব্যাথা হতে পারে, অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ করে এরপরে আপনি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাবেন। গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়ার চাইতে সবচাইতে যেন গ্যাস্ট্রিক না হয় সেই ধরনের খাবারগুলো খেতে এবং খাদ্যর অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়াও অতিরিক্ত তেল মসলা, ফাস্টফুড জাতীয় খাবার বা বাহিরের প্রসেসিং খাবার গর্ভাবস্থায় না খাওয়াই ভালো। কেননা অতিরিক্ত গ্যাস হতে পারে এবং আপনার পেটের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তাছাড়া আপনার পেটকে পরিষ্কার রাখার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। কেননা এই সময় অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় যার কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমিতভাবে এবং চিকিৎসকের নিয়ম অনুযায়ী ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। তাছাড়াও গর্ভাবস্থায় শুধু খাওয়া দাওয়া করলেন হবে তা নয় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এছাড়াও হালকা হাঁটা চলাফেরা করা বা ব্যায়াম করা যেতে পারে কিন্তু অতিরিক্ত ব্যায়াম করা যাবে না বা শক্তিশালী কোন ব্যায়াম করা যাবে না। এতে আপনার তলপেটে চাপ লেগে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় সাধারণত নারীদের যে গ্যাস্ট্রিক, এসিডিটি বা হজমের সমস্যা দেখা দেয়। সেটা মূলত হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই এবং শিশুর বেড়ে ওঠার কারণে পেটের চাপ লাগতে পারে। সেজন্য আপনার গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। তবে গর্ভবতীদের জন্য গ্যাসের ওষুধের নিরাপত্ত রয়েছে তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত বিভিন্ন ধরনের গ্যাস্ট্রিকের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় ওষুধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে কমানোর ব্যবস্থা করতে পারেন।

গর্ভবতীরা অবশ্যই একবারে অনেক খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে খেতে পারেন। এতে আপনার পাকস্থলীতে অতিরিক্ত গ্যাস উৎপন্ন হবে না। এছাড়াও মসলা জাতীয় খাবার ভাজাপোড়া, চর্বিযুক্ত খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা এগুলো এসিডিটি বৃদ্ধি করতে পারে। এছাড়া সাইট্রাস জাতীয় যে ফলগুলো রয়েছে সেগুলোর রস বা এগুলো খাওয়ার কারণে গ্যাস্টিক বা এসিডিটি হতে পারে। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া যেতে পারে এবং খাবারের সাথে কখনোই বেশি পানি খাবেন না। এক্ষেত্রে একটু পরে খাওয়ার চেষ্টা করবেন, তাহলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হবে।

গর্ভাবস্থায় খাবারের পর পরই কখনো শুয়ে পড়ার চিন্তাভাবনা করবেন না। কমপক্ষে খাবারের তিন ঘন্টা পরে শোয়ার চেষ্টা করবেন। এই অনুযায়ী আপনি খাবারটা গ্রহণ করবেন এবং ঘুমানোর সময় মাথা উঁচু করে ঘুমাতে চেষ্টা করবেন। যদি দেখেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তীব্র আকারে ধারন করেছে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই দেরি না করে একজন চিকিৎসকের নিকট যাবেন, তিনি যেভাবে চিকিৎসা দেবেন সেই অনুযায়ী গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ এবং খাবার নিয়ন্ত্রণ করে জীবন যাপন করবেন। তাই গর্ভাবস্থায় অবশ্যই ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

কোন খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক কমে

অনেকের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তাই কোন খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক কমে? এ সম্পর্কে জানলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান হবে। চলুন, কিভাবে গ্যাস্ট্রিক কমানো যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আপনারা যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা দেখবেন খাদ্য হজম হচ্ছে না ঠিকমতো। এতে আপনার পরবর্তীতে আরো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। যার কারণে আপনি নিয়মিত ভাবে কিসমিস ভিজিয়ে খেতে পারেন। আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ঠিক হয়ে যাবে। কারণ কিসমিসের পানির মধ্যে যে উপাদান থাকে তা আপনার পেটের এসিড কমিয়ে দিবে এবং পেটের ব্যথা কমে যাবে। কেননা এর মধ্যে এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকার কারণে অন্ত্রের যেকোনো ধরনের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করবে।

আমরা ছোট বড় সবাই কলা খেতে পছন্দ করি এবং প্রায়ই দেখা যায় কলা খেতে, বিশেষ করে সকালবেলা নাস্তার ক্ষেত্রে আমরা কলা বিস্কুট খেয়ে থাকি। এই কলা যদি আপনি প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী খেতে পারেন তাহলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে ভালো ফলাফল পাবেন। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা আপনার প্রাকৃতিকগতভাবে এন্টাসিড এর কাজ করবে। এজন্য গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য কলা খাওয়া যেতে পারেন। এতে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করবে।

ডাবের পানি অত্যন্ত উপকারী বিশেষ করে গ্যাসের সমস্যা যাদের রয়েছে তারা এই পানি খেতে পারেন। কেননে এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে সেইসাথে মিনারেলসও থাকে যা আপনার পানি চাহিদা পূরণ করবে এবং খাদ্য হজম করতে সাহায্য করবে। যার কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে না। এছাড়াও দই খেতে পারেন কেননা দই খাদ্য হজম করার ক্ষেত্রে দারুন কাজ করে থাকে। এটা ভালো ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন করতে পারে আর ভালো ব্যাকটেরিয়া খাদ্য হজম করতে পারে। তবে টক দই খাওয়ার চেষ্টা করবেন এতে শরীরের জন্য অনেক উপকার।

শসা পেটকে ঠান্ডা রাখবে এবং এর ভিতরে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি থাকার কারণে এটা আমাদের পেটের গ্যাসের সমস্যা দূর করবে এবং খাদ্য হজমের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করবে। এর মধ্যে এক ধরনের এনজাইম উপাদান থাকে যা হজমের ক্ষেত্রে দারুন কাজ করে। তাছাড়া গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য পেঁপে খেতে পারেন। আবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে জিরা খেতে পারেন। এটা হজম ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য দারুন কাজ করে। তাই মসলাদার খাবারের খাওয়ার পরে আপনি জিরা পানি খেয়ে দেখতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় পেটে গ্যাস হয় কেন

গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে গ্যাস হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পেটে গ্যাস হয় কেন? এই বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। তাহলে আগে থেকে সতর্ক থাকতে হবে। চলুন, গর্ভাবস্থায় কেন পেটের গ্যাস হতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
ছবি
গর্ভাবস্থায় সাধারণত শরীরের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে থাকে। যার কারণে এর প্রভাবটা পাকস্থলীতে হতে পারে। যার কারণে আপনার পেট ফুলে যাওয়া, হজম সমস্যা, পেটে ব্যথা করা বা সর্বশেষ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সময় মায়েদের সাধারণত হরমোন বেড়ে যেতে পারে। যার কারণে খাদ্য হজমের সমস্যা দেখা দেয় এবং অর্ধেক খাদ্য হজম হয় এর কারণে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। তাদের পেট ফেপে যাওয়া, অস্বস্তিকর অবস্থা লাগতে পারে। অবশ্যই একজন গর্ভবতী মাকে এ সময় খাদ্যের অবস্থা পরিবর্তন করতে হবে।

স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি, শস্য দানা এবং ডাল খেতে হবে। তাছাড়াও চেষ্টা করতে হবে যে সকল খাবারের মধ্যে ফাইবার রয়েছে সেগুলো খাদ্য খেতে হবে। তাছাড়া কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার গুলো অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়াও আপনার ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এবং বাচ্চা যখন বৃদ্ধি পেতে থাকে সেই ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও অনেকে পানি কম খেয়ে থাকে এবং একসাথে অনেকগুলো খাবার খেয়ে থাকে যার কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় পেটে গ্যাস হলে করণীয়

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত পেটে গ্যাস হয়ে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় পেটে গ্যাস হলে করণীয় সম্পর্কে জানা থাকলে গ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। চলুন, কিভাবে দেশকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে যে কোন খাবার খেলেই দেখা যায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। পেট ফুলে যায়, বদহজমের সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়াও যদি এই সময়ে অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার মসলাযুক্ত খাবার বেশি খেয়ে ফেলে সেক্ষেত্রে পেট ফাঁপা দিতে পারে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া ওষুধের কারণেও দেখা যায় অনেক সময় গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। তাই গ্যাস্টিককে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাবেন। এজন্য এক টুকরো পরিমাণ আদা ছোট করে কেটে নিয়ে চিবাতে থাকবেন, এতে খাদ্য হজম হয়ে যাবে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে।

এছাড়া আদা পানির মাঝে দিয়েও খেতে পারেন, এক্ষেত্রে পেট ব্যথার সমস্যা দূর হয়ে যাবে। গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য মৌরি খেতে পারেন এতে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে। এছাড়াও অল্প পরিমাণ করে বারে বারে পানি খাওয়া যেতে পারে, কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো হজম করতে দেরি হয় সেই খাবার গুলো খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন। এছাড়াও যদি এই পেট ব্যথা দ্রুত বৃদ্ধি থাকে বা কয়েক ঘন্টা যাবত পেট ব্যথা করতে থাকে বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় আবার অনেকের বমি হতে পারে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং ওষুধ খেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায়

গর্ভাবস্থায় অনেকের পেট জ্বালাপোড়া করতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি এই সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন। চলুন, কিভাবে পেট জ্বালাপোড়া কমানো যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

বুক জ্বালাপোড়া করা, বুকের ভিতর ব্যথা করা এ ধরনের সমস্যা অনেক গর্ভবতীর হয়ে থাকে। অনেকের খাবার খাওয়ার পরপরই দেখা যায় বুকের উপরে আসতে শুরু করে এবং পেটের ভিতরে সমস্যা সৃষ্টি করে। এতে সাধারণত গর্ভবতী মায়েদের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। পেটে জ্বালা যন্ত্রণা অস্বস্তিকার এমনকি অনেকে বমি করতে পারে। এই ধরনের সমস্যা এসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। তবে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই খাবার দাবার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এতে ভাজাপোড়া এবং অধিক মসলাযুক্ত খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়া দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ এগুলো দূরে রাখতে হবে। কেননা গর্ভের সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথে খাবারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি অতিরিক্ত ঝাল বা মসলাযুক্ত খাবার তেলে ভাজা খাবার গুলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। একসাথে পেট ভরে খাবেন না, অল্প অল্প করে ঘন ঘন খেতে পারেন। এতে আপনার খাবারের ক্ষেত্রে হজম করতে সুবিধা হবে। এছাড়াও পুষ্টিকর খাবার, তাজা ফলমূল, দুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন। এছাড়াও মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।

গর্ভাবস্থায় এন্টাসিড প্লাস খাওয়া যাবে কি

অনেক গর্ভবতী মায়েরা গ্যাস্ট্রিকের জন্য অ্যান্টাসিড খেয়ে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় এন্টাসিড প্লাস খাওয়া যাবে কি? এ সম্পর্কে হয়তো অনেকের জানা নেই। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত গ্যাস্ট্রিকের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে থাকে। তার মাঝে এন্টাসিড প্লাস অনেকে খেতে পারেন কিন্তু এটা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না। কেননা আমাদের পাকস্থলীতে খাবার খাওয়ার পরে খাদ্য ভাঙ্গার জন্য হাইড্রোক্লোরিক এসিড থাকে। যা খাদ্যকে হজম প্রক্রিয়া সুবিধা করে। যদি অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক, এসিডিটি বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ দিয়ে থাকে। গর্ভবতী মায়েরা খেতে পারবে কিনা এই বিষয়ে একজন চিকিৎসক পরামর্শ নিবেন। এরপর আপনি অ্যান্টাসিড ওষুধটা খেতে পারবেন।

অনেকে অ্যান্টাসিড সিরাপ খায় আবার অনেকেই ট্যাবলেট খেতে পছন্দ করে সে ক্ষেত্রে সিরাপ অতি দ্রুত কাজ করে থাকে। তাছাড়াও এই এন্টাসিড খাওয়ার কারণে অনেকের বিপদ হতে পারে এবং গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অবশ্যই পরিমাণ মতো এবং চিকিৎসকের অনুমোদন ছাড়া কখনোই এন্টাসিড প্লাস খাবেন না। কেননা এই অ্যান্টাসিডের মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, সোডিয়াম বাই কার্বনেট, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি দ্বারা তৈরি হয়ে থাকে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, এতে বমি অথবা রক্তস্বল্পতা এবং কিডনিতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় বদহজম হলে করণীয়

গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে খাদ্য হজম হয় না। তাই গর্ভাবস্থায় বদহজম হলে করণীয় সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক। কেননা বদহজম হলে কি করতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানা যাক।

গর্ভকালীন সময়ে অনেকের পেটের সমস্যা হয়ে থাকে এবং খাদ্য হজম হয় না। এটা মূলত গর্ভবতীদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন এর কারণে এই হজম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। প্রথমত ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে, এতে আপনার হজম প্রক্রিয়া ঠিক থাকবে। গর্ভাবস্থায় অবশ্যই অনেকের বুকে জ্বালাপোড়া করতে পারে, কেননা এই সময় বাচ্চা বড় হতে থাকে এবং বুকে উপর চাপ লাগতে পারে সে ক্ষেত্রে জ্বালাপোড়া করতে পারে। এতে আপনি অল্প অল্প পরিমাণ খেতে পারেন।

তাছাড়া যাদের শরীর অত্যন্ত ফ্যাট বা মোটা হওয়ার কারণে তারা অধিক পরিমাণ মতো খেতে পারেন এবং তাদের এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে কমপক্ষে দিনে ১০ গ্লাসের মতো পানি খেতে পারেন। এতে আপনার হজম শক্তি ভালো হবে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের এই সময় স্ট্রেস কমাতে হবে, কমাতে না পারলে আপনার হরমোনের পরিবর্তন হতে পারে। এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া খাবারের পরপরই শুয়ে পড়া যাবে না। হালকা একটু হাটা চলাফেরা করতে হবে এবং হালকা জাতীয় ব্যায়ামগুলো করা যেতে পারে। এতে খাদ্য হজম দ্রুত হবে।

গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হয় কেন

গর্ভবতী মায়েদের অনেকে বিভিন্ন খাবার খাওয়ার কারণে পেট শক্ত হয়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হয় কেন? কিভাবে পেট শক্ত হয় এবং কি কারনে হতে পারে। সে সম্পর্কে জানা থাকলে সুবিধা হবে। চলুন, এর কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভাবস্থায় অনেকের পেট শক্ত হতে পারে এটা মূলত গর্ভবতী মায়েদের সাধারণত এই সময়ে জরায়ু সংকোচন হয়। তাছাড়া তিন মাসের দিকে সাধারণত গর্ভবতী মায়েদের ব্যথা করতে থাকে এবং পেটটা টানটান হয়ে থাকে। শিশু যখন নড়াচড়া করে সে ক্ষেত্রে দেখা যায় পেটটা শক্ত হতে পারে অথবা শিশুর লাথি দেয় এ ধরনের কারণে শক্ত হতে পারে এবং শিশুর বিকাশের কারণে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় হারমোনাল এর পরিবর্তনের কারণে গ্যাসের পরিবর্তন হতে পারে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে, মানসিক চাপ, শারীরিক পরিশ্রমের কারণেও পেট শক্ত হয়ে যাবে।

শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় গ্যাসের ঔষধ খাওয়া যাবে কি ও করণীয় সম্পর্কে জানুন

পরিশেষে বলা যায় যে কম বেশি সবারই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকতে পারে তবে গর্ভাবস্থায় সাধারণত নারীদের বেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যদি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে খেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় গ্যাসের ঔষধ খাওয়া যাবে কি? এ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি, আশা করি আপনার দেশ থেকে সমস্যা দূর হবে। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম আর মাহমুদ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url